ব্রাজিলের সাবেক ফুটবলার রবিনিও
ব্রাজিলের সাবেক ফুটবলার রবিনিও

কারাগারে যেমন কাটছে রবিনিওর জীবন, পাচ্ছেন ফুটবল মাঠ ও সবজির বাগানও

গত ২১ মার্চ ব্রাজিলের পুলিশের হাতে আটক হন দেশটির সাবেক ফুটবলার রবিনিও। ২০১৩ সালে ইতালিতে এক নারীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগে মূলত আটক করা হয় রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটির সাবেক এই ফুটবলারকে। এই অপরাধে ৯ বছরের সাজা হয়েছিল তাঁর।

তবে রায়ের আগে ইতালি ছেড়ে ব্রাজিলে চলে যান রবিনিও। এরপর ইতালির সর্বোচ্চ আদালত ব্রাজিল সরকারকে শাস্তি কার্যকরের আহ্বান জানান। পরে ব্রাজিলের আদালতও রায় দিয়ে জানান, রবিনিওকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। এরপরই গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে।

গ্রেপ্তারের পর রবিনিওকে নেওয়া হয় ব্রাজিলের সাও পাওলো রাজ্যের ট্রেমেম্ব শহরের ড. হোসে অগাস্তো সালগাদো নামের কারাগারে। গত রোববার ইস্টার সানডের দিন সাবেক এই ফুটবলারের আইসোলেশন (একাকী বাস) সময়কাল শেষ হয়েছে। সাও পাওলোর কারাগার বিভাগের সূত্র জানিয়েছে, রবিনিওকে এখন যৌথ কারাগারে নেওয়া হয়েছে। যেখানে তিনি অন্য বন্দীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন।

কারাগারে রবিনিও এখন ফুটবল খেলার পাশাপাশি নানা ধরনের কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন, তা ছাড়া একসময় ফুটবল মঞ্চে প্রতিভাবান তরুণ হিসেবে আবির্ভূত হওয়া রবিনিও চাইলে কারাগারে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও দেখা করতে পারবেন। অর্থাৎ আটক থাকা অন্য বন্দীরা যেসব কাজ করতে পারেন, রবিনিও এখন সেসব নিয়মতান্ত্রিক কাজে অংশ নিতে পারবেন।

অমিত প্রতিভা নিয়ে ফুটবলে এলেও শেষ পর্যন্ত আক্ষেপ হয়েই থেকে গেলেন রবিনিও

ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবো’ জানিয়েছে, ট্রেম্বের কারাগারে যে ফুটবল মাঠটি আছে, সেখানে কারাবন্দীদের মধ্যে চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করা হয়। যেখানে বন্দীরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। এ ছাড়া এই ভবনে লাইব্রেরি, খেলার ঘর, গির্জা এবং সবজির বাগানও আছে। শনিবার ও রোববার কারাগরে ভ্রমণ করা যায়।

সাও পাওলোর কেন্দ্র থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই কারাগারটিতে রবিনিওর আগে আরও অনেক আলোচিত–সমালোচিত মানুষ কারাজীবন কাটাতে এসেছেন। যাঁদের মধ্যে ব্রাজিলের বিখ্যাত চিকিৎসক রজার আবদেলমাসিয়াহ এবং ব্যবসায়ী মার্কোস ভালেরিও আছেন।

একসময় সমাজের উঁচু স্তরে থাকা এসব মানুষ অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে ঠাঁই নিয়েছেন এ কারাগারটিতে। কারাবন্দী হিসেবে পরিচিতিতে রবিনিও এখন তাঁদেরও ছাড়িয়ে গেছেন।

নিভৃত অঞ্চলে প্রচুর গাছপালায় ঘেরা এই কারাগার চালু করা হয় ১৯৫৫ সালে। এই কারাগারের প্রতিটি সেলে ছয়জন বন্দী একসঙ্গে থাকতে পারেন। সব মিলিয়ে এখানে থাকতে পারেন ২৯৬ জন বন্দী। যাঁদের একজন হিসেবেই এখন রবিনিও অপরাধের শাস্তি ভোগ করতে হবে ৮ বর্গমিটার সেলের কারাগারটিতে।