খুব করেই চেয়েছিলেন ব্রাজিলের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জেতার আনন্দে শামিল হতে। নেইমারের হাতে বিশ্বকাপ—এটা ছিল পেলের শেষ ইচ্ছা। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে হেরে নেইমার-রিচার্লিসন-রাফিনিয়া-কাসেমিরো-ভিনিসিয়ুস জুনিয়ররা পেলের সেই ইচ্ছা পূরণ করতে পারেননি। কিন্তু তাতে কি! ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা তারকা জীবনের শেষ বিশ্বকাপ ফাইনালটা উপভোগ করেছেন দারুণভাবে। মেসির হাতে বিশ্বকাপ দেখে আপ্লুতও হয়েছেন। ফুটবল ইতিহাসের আরেক গ্রেটকে অভিনন্দন জানাতে এতটুকু কার্পণ্য ছিল না তাঁর।
বিশ্বকাপের শ্বাসরুদ্ধকর এই ফাইনালকে অনেকেই ইতিহাসের সেরা ফাইনালই বলছেন। একটা পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, আর্জেন্টিনা ম্যাচটি খুব সহজেই জিতবে। প্রথমার্ধেই ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর মেসি-দি মারিয়ারা হয়তো ভাবেননি, ফ্রান্স এভাবে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াবে। এমবাপ্পের দুই গোলে সমতা ফেরার পর অতিরিক্ত সময়ে মেসির গোলে আবারও এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু এমবাপ্পে ১৯৬৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে জিওফ হার্স্টের পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে হ্যাটট্রিক করে ম্যাচটি ৩-৩ করে ফেলেন। ম্যাচের একেবারে শেষ লগ্নে আর্জেন্টাইন গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজের অবিশ্বাস্য এক সেভ আর্জেন্টিনাকে হারের হাত থেকে রক্ষা করে। ফাইনালে রোমাঞ্চ, উত্তেজনা—সবই ছিল। হাল আমলের বিশ্বসেরা তারকার হাতে বিশ্বকাপ ওঠার আগের চিত্রনাট্যটা ছিল রহস্য-রোমাঞ্চ সিরিজের মতোই।
হাসপাতালে বসেই ফাইনালটা উপভোগ করেছিলেন পেলে। সঙ্গে সঙ্গেই টুইট করে মেসি ও আর্জেন্টিনাকে অভিনন্দন জানান। তিনি লেখেন, ‘ফুটবল চিরদিনের মতোই তার গল্পটা আজ সবাইকে জানাল চিত্তাকর্ষক উপায়ে। মেসি তার প্রথম বিশ্বকাপ জিতল আজ, এটা তার প্রাপ্য ছিল। আমার প্রিয় বন্ধু এমবাপ্পেও ছিল দুর্দান্ত। সে ফাইনালে চারটি গোল করেছে (টাইব্রেকারের গোলটিসহ)।’
দুর্দান্ত এই ফাইনালকে পেলে ফুটবলপ্রেমীদের জন্য দুর্দান্ত এক উপহারই বলেছিলেন। তাঁর মতে, এমন ফাইনাল ফুটবলের ভবিষ্যতের জন্য চমৎকার, ‘এমন ফাইনাল দেখাটা ফুটবলপ্রেমীদের জন্য দারুণ এক উপহার। এটা খেলাটার ভবিষ্যতের জন্যও দুর্দান্ত।’
তিনি মরক্কোর সেমিফাইনালে ওঠাটাও উদ্যাপন করেছিলেন তাঁর টুইটে, ‘আমি মরক্কোকে অভিনন্দন জানাতে চাই, তাদের দুর্দান্ত বিশ্বকাপ অভিযানের জন্য। আফ্রিকা ফুটবলে দুর্দান্ত করছে, এটা দারুণ ব্যাপার।’
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের মুহূর্তে পেলে ভোলেননি ম্যারাডোনার কথা, ‘বিশ্বকাপ জেতায় আর্জেন্টিনাকে অভিনন্দন। অবশ্যই ডিয়েগো স্বর্গ থেকে দেখছে। সে হাসছে।’