ফোর্ট লডারহিল ট্রেনিং গ্রাউন্ডে অনুশীলন করছেন লিওনেল মেসি—দৃশ্যটি ইন্টার মায়ামি দর্শকদের জন্য স্বপ্নপূরণের মতো। তবে ইন্টার মায়ামি দর্শকদের স্বপ্ন আসলে অর্ধেক পূরণ হয়েছে। মায়ামির মাঠে মেসি অনুশীলন করছেন ঠিকই, কিন্তু সমর্থকদের স্বপ্নে দেখা মায়ামির জার্সিতে নয়।
পিএসজির আর্জেন্টাইন মহাতারকা যুক্তরাষ্ট্রে পা রেখেছেন আর্জেন্টিনার জন্য। উদ্দেশ্য, কাতার বিশ্বকাপের আগে জাতীয় দলের ম্যাচ-প্রস্তুতি শাণিয়ে নেওয়া। আগামী এক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলবে মেসির দল। প্রথমটি আগামীকাল ভােরে হন্ডুরাসের বিপক্ষে, পরেরটি জ্যামাইকার বিপক্ষে।
মেসির মতো জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামার অপেক্ষায় নেইমারও। তবে পিএসজি ফরোয়ার্ডকে অবশ্য ফ্রান্স ছেড়ে বের হতে হয়নি। কারণ, ব্রাজিল যে দুটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে, দুটিই ফ্রান্সে মাটিতে। প্রথমটি আজ রাতে ঘানার বিপক্ষে, পরেরটির প্রতিপক্ষ তিউনিসিয়া।আর্জেন্টিনার মতো ব্রাজিলেরও এটি কাতার বিশ্বকাপের আগের শেষ প্রস্তুতি পর্ব।
বিশ্বকাপ সামনে রেখে প্রীতি ম্যাচে দুটি দেশের চূড়ান্ত লক্ষ্যই এক। তবে প্রতিপক্ষ বিবেচনায় ব্রাজিল, আর্জেন্টিনার প্রাপ্তির হাতছানি ভিন্ন।
আর্জেন্টিনার দুই প্রতিপক্ষ মধ্য ও উত্তর আমেরিকা অঞ্চলের (কনক্যাকাফ)। এর মধ্যে হন্ডুরাস, জ্যামাইকার কোনোটিই কাতার বিশ্বকাপে জায়গা করতে পারেনি। অপর দিকে ব্রাজিলের দুই প্রতিপক্ষই আফ্রিকা অঞ্চলের (সিএএফ)। ঘানা, তিউনিসিয়া উভয় দলই বিশ্বকাপে খেলবে।
কাতার বিশ্বকাপে সুযোগ না পাওয়া দুই দলের বিপক্ষে মেসিদের প্রাপ্তির জায়গা নিজেদের অপরাজেয় ধারা বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগে। জুনে এস্তোনিয়াকে ৫-০ গোলে হারানোর পর আর্জেন্টিনার টানা অপরাজিত ম্যাচের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের ৮০ নম্বরে থাকা হন্ডুরাসকে হারাতে পারলে নিজেদের টানা সর্বোচ্চ অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়বে লিওনেল স্কালোনির দল।
এর আগে ১৯৯১-৯৩ সালে টানা ৩৩টি ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড গড়েছিল আলফিও বাসিলের অধীনে থাকা আর্জেন্টিনা। শুধু নিজেদেরই ছাড়িয়ে যাওয়া নয়, আর্জেন্টিনার সামনে হাতছানি আছে সর্বকালের সেরার রেকর্ডে কাছাকাছি চলে যাওয়ারও।
হন্ডুরাসের পর জ্যামাইকার বিপক্ষেও যদি হার এড়ানো যায়, টানা ৩৫ ম্যাচ অপরাজিত নিয়ে সর্বকালের রেকর্ডে যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে উঠে যাবে আর্জেন্টিনা। ১৯৯৩-৯৬ সময়ে টানা ৩৫ ম্যাচ অপরাজিত থাকার আগের কীর্তিটি গড়েছিল ব্রাজিল।
আর্জেন্টিনার সামনে যখন অপরাজিতের সংখ্যায় নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার হাতছানি, ব্রাজিলের তখন আক্রমণভাগ গোছানোর ভাবনা। বিশ্বকাপে আক্রমণভাগের জন্য কোচ তিতের হাতে অনেকগুলো বিকল্প। কাকে রেখে কাকে বাদ দেবেন অবস্থা। নেইমার, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র থেকে শুরু করে আন্তনি, রিচার্লিসন, রাফিনিয়া, গ্যাব্রিয়েল জেসুস, রবার্তো ফিরমিনো, গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি...।
বিশ্বকাপের আগে দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচেও এই ফরোয়ার্ডদের সবাইকে পরীক্ষা করানোর সুযোগ পাচ্ছেন না ব্রাজিল কোচ।
কয়েকজনকে ফর্ম বিবেচনায় বাইরে রাখার পর ফর্মে থাকা আর্সেনাল স্ট্রাইকার জেসুসকেও বাদ দিতে হয়েছে। যাঁদের রাখা হয়েছে, তাঁদের নিয়ে আক্রমণভাগ গুছিয়ে নেওয়াটাই এখন তিতের মূল চ্যালেঞ্জ।
ব্রাজিলের সূচি
২৩ সেপ্টেম্বর ব্রাজিল-ঘানা রাত ১২.৩০
২৭ সেপ্টেম্বর ব্রাজিল-তিউনিসিয়া রাত ১২.৩০
আর্জেন্টিনার খেলার সূচি
২৪ সেপ্টেম্বর আর্জেন্টিনা-হন্ডুরাস ভোর ৬টা
২৮ সেপ্টেম্বর আর্জেন্টিনা-জ্যামাইকা ভোর ৬টা