চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে বিদায় নিয়ে ইউরোপা লিগে এসেছিল বার্সেলোনা। কিন্তু সেখানেও যাত্রাটা দীর্ঘ হলো না। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে ২-১ গোলে হেরে শেষ ষোলোর আগেই বিদায় নিতে হয়েছে দলটিকে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে শুরুতে এগিয়ে গিয়েও সেই লিড ধরে রাখতে পারেনি তারা।
অথচ দারুণ ছন্দে থেকেই ইউরোপার ম্যাচ খেলতে এসেছিল তারা। যদিও নিজেদের সেই ছন্দ এই ম্যাচে ধরে রাখতে পারেনি তারা। প্রশ্ন হচ্ছে, কেন ইউনাইটেডের সঙ্গে জিততে পারল না জাভি হার্নান্দেজের দল? কোথায় ভুল করেছে তারা?
দুর্দান্ত আন্তনি
ইউনাইটেডে তাঁর পারফরম্যান্স নিয়ে সমালোচনা ছিল। তবে আন্তনি বার্সেলোনার বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে দেখিয়েছেন কেন তিনি বিশেষ। দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামার পর থেকে খেলেছেন দুর্দান্ত। শুধু নিজের পারফরম্যান্সেই নন। দলের পারফরম্যান্সেও গতির সঞ্চার করেছেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। যখনই পায়ে বল পেয়েছেন প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতির সঞ্চার করেছেন। তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণেই মূলত হার মানতে হয়েছে বার্সাকে।
জাভির কৌশলগত ভুল
এই ম্যাচে কিছুটা পরিবর্তিত কৌশল নিয়ে দলকে খেলিয়েছেন জাভি হার্নান্দেজ। ৪-৩-৩ ফরমেশনে দল সাজিয়ে সার্জিও রবার্তোকে খেলিয়েছেন লেফট উইং পজিশনে, যা মূলত তাঁর জায়গা নয়। এতে অবশ্য বার্সা রক্ষণের দিক থেকে কিছুটা দৃঢ়তা পেয়েছে। তবে আক্রমণের যাওয়ার ক্ষেত্রে বার্সাকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে, যা ইউনাইটেডের জন্য কাজটা অনেক সহজ করে দিয়েছে।
টেন হাগের বিচক্ষণতা
ভাউগ ভেগহোর্স্টকে একাদশে রেখে এদিন শুরুটা করেছিলেন এরিক টেন হাগ। তবে প্রথমার্ধে নিজেকে ঠিকঠাক মেলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন এই ডাচ ফরোয়ার্ড। ভুল বুঝতে পেরে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ভেগহোর্স্টকে তুলে নিয়ে আন্তনিকে নামান টেন হাগ। তাৎক্ষণিকভাবে নেওয়া এই সিদ্ধান্ত ম্যাচের মোড়কে ইউনাইটেডের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে। হারের পথ থেকে উদ্ধার করে দলের জয়ে দারুণ ভূমিকা রেখেছেন আন্তনি। টেন হাগের কৌশলগত বিচক্ষণতাই মূলত ইউনাইটেডের জয় ও বার্সার হারের কারণ।
পেদ্রি ও গাভির অনুপস্থিতি
পেদ্রি ও গাভিকে হারিয়ে আগে থেকেই চাপে ছিলেন জাভি। ধারণা করা হচ্ছিল, এ দুজনকে ছাড়া ভুগতে হতে পারে বার্সাকে। সেই আশঙ্কা শেষ পর্যন্ত সত্যি হয়েছে। এ দুজন না থাকায় মিডফিল্ডে বার্সাকে প্রত্যাশিতরূপে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ব্যক্তিগত শৈলীতে ম্যাচের গতিপথ পরিবর্তন করার সক্ষমতা রাখেন এ দুজন। সেই ‘এক্স ফ্যাক্টর’ ও মিস করেছে বার্সা। যার ফল হয়েছে ২-১ গোলের এই হার।
বলের দখল হারানো
শুরুতে এগিয়ে গিয়েও ম্যাচটা ভালোই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল বার্সা। তবে সেই নিয়ন্ত্রণ বেশি সময় ধরে রাখতে পারেনি তারা। বিশেষ করে যে দুটি গোল হজম করে বার্সা ছিটকে গেছে দুটি গোলই এসেছে নিজেদের দখলে বল রাখতে না পারার কারণে। বার্সার খেলায় জয়ের জন্য যে আগ্রাসী মনোভাবের প্রয়োজন ছিল সেটিরও যথেষ্ট ঘাটতি ছিল। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে বার্সা মোমেন্টাম হারিয়ে ফেলে, যা তাদের শেষ পর্যন্ত ভুগিয়েছে।