বাফুফের নির্বাচনে সভাপতি পদে কাজী সালাহউদ্দিন প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন গতকাল। সেই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দৃশ্যপটে হাজির ব্যবসায়ী তরফদার রুহুল আমিন। ঢাকার একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আজ বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকে বাফুফের নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বাফুফের গত নির্বাচনেই তরফদার সভাপতি প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। ভেতরে-ভেতরে জোর প্রচারও চালান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হননি। কেন হননি, সেই ব্যাখ্যাও তরফদার কখনো দেননি প্রকাশ্যে। তবে প্রচারণা আছে, সে সময় নানা চাপের কারণে প্রার্থী হতে পারেননি। আসছে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারেও এত দিন কিছু বলেননি। তবে আজ তা বলেছেন এবং সেটিও আনুষ্ঠানিকভাবে।
‘ঐকমত্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন ২০২৪, সভাপতি প্রার্থী ঘোষণা’ শিরোনামে ব্যানার লেখা ছিল মঞ্চের পেছনে। মঞ্চে ছিলেন তরফদার। তাঁর পাশে সাবেক ফুটবলার সৈয়দ রুম্মান বিন ওয়ালী সাব্বির, বিভাগীয় নেতা আবদুল্লাহ ফুয়াদ, সাবেক ফুটবলার শফিকুল ইসলাম মানিকসহ আরও কয়েকজন।
টাঙ্গাইলের বিএনপি নেতা ও অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী ইমাম তপন সবার আগে দেন ঘোষণাটা, ‘বাংলাদেশের সব জেলা, বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা বাফুফের সভাপতি পদে তরফদার রুহুল আমিনের নাম ঘোষণা করছি।’ পরপরই তরফদার রুহুল আমিন মাইক্রোফোনের সামনে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমি এই ঘোষণা সাদরে গ্রহণ করলাম।’
‘দেশে ফুটবল উন্মাদনা আর নেই। ফুটবলের আবেগ হারিয়েছে ২০০৮ থেকে। ফুটবল তলানিতে চলে গেছে’—এমন দাবি করে তরফদার বলেন, ‘ফুটবল এমন জায়গায় চলে গেছে, সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। ফুটবলকাঠামো নেই। ফুটবল এখন টেবিলে নিয়ে এসেছি।’
বাফুফেতে যাঁরা এত দিন ছিলেন, তাঁরা কাজ করেননি। মানুষের আবেগকে তাঁরা ভূলুণ্ঠিত করেছেন দাবি করে তরফদার যোগ করেন, ‘ফুটবল নিয়ে আমরা ব্যাপক কাজ করেছি ২০১৫-১৬ সাল থেকে। সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যানারে আমরা জেলা লিগ করেছি। আমরা প্রচুর খেলোয়াড় সরবরাহ করেছি প্রতিকূলতার মধ্যেও। কিন্তু ফুটবল ফেডারেশন কখনো চায়নি আমরা ফুটবল নিয়ে কাজ করি। ফুটবল যেভাবে এগোচ্ছে, সেটা ঠিক নেই। ফুটবলকে নিয়ে আমরা তামাশা করেছি। বাঙালির আবেগ নিয়ে খেলা হয়েছে। জঘন্য হয়েছে কাজটা।’
তরফদার বলেন, ‘২০২০ সালে যখন প্যানেল করে এগোতে গেলাম, তাঁরা আমাকে নিয়ে চক্রান্ত করলেন। আমার ব্যবসার ক্ষতি হলো। দেশেও থাকতে পারিনি। সাইফ পাওয়ারটেকের ক্ষতি হয়েছে। সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’
তরফদারের প্যানেল এখনো ঠিক হয়নি। তবে সবাইকে নিয়ে ফুটবল উন্নয়ন করবেন বলেছেন। নির্বাচিত হলে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষ থেকে বের করে ফুটবল সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। নির্বাচিত হয়ে আসতে পারলে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবল করবেন, এমন দাবি করে বলেছেন, ‘বাফুফের ওপর কোনো আস্থা নেই। স্পনসর আসে না। টাকা অপব্যবহার হয়। এনএসসি-ফিফার টাকার সঠিক ব্যবহার হয়নি। আর্থিক অনিয়মের কারণে সাধারণ সম্পাদককে ফিফা নিষিদ্ধ করেছে। বাফুফের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্টকে ফিফা জরিমানা করেছে। এটা লজ্জাজনক।’
দর্শকসারিতে ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ক্রীড়া সম্পাদক জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। ছিলেন বিএনপির নেতা খায়রুল কবীর খোকন। জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার এনামুল হক, ক্যারিয়ারে শেষ প্রান্তে দাঁড়ানো মামুনুল ইসলামসহ কয়েকজন ফুটবলারকেও দেখা গেছে অনুষ্ঠানে।