লিওনেল স্কালোনি, রিকার্দো গারেকা, ফার্নান্দো বাতিস্তা ও মার্সেলো বিয়েলসা। বলুন তো এই চারজনের মধ্যে মিলটা কী? প্রথমেই আসবে, চারজনই ফুটবল কোচ। জাতিতে আর্জেন্টাইন। চারজনই এবার কোপা আমেরিকায় এসেছেন। এবার কোপা আমেরিকায় এই চার আর্জেন্টাইন কোচই ‘লেট লতিফ’, সে জন্য শাস্তি পেয়ে চারজনই মিলেছেন নিষেধাজ্ঞার মোহনায়।
কারণও একই। চার কোচই ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে দেরি করে মাঠে ফেরার দায়ে অভিযুক্ত। সর্বশেষ এই অপরাধে অভিযুক্ত উরুগুয়ে কোচ বিয়েলসা। গ্রুপ পর্বে উরুগুয়ের পানামা ও বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে মাঠে দেরি করে ফিরেছেন বিয়েলসা। বলিভিয়ার বিপক্ষে ৫-০ গোলে জয়ের ম্যাচে বিরতির পর মাঠে ফিরেছেন বেঁধে দেওয়া সময়ের চেয়ে ৯০ সেকেন্ড দেরিতে।
কোপা আমেরিকার আয়োজক কমিটি রোববার তাঁকে এ কারণে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করেছে। আগামীকাল বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় ‘সি’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের মুখোমুখি হবে কোয়ার্টার ফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করে ফেলা উরুগুয়ে। এ ম্যাচে উরুগুয়ের ডাগআউটে দেখা যাবে না ‘কোচদের কোচ’ হিসেবে খ্যাত বিয়েলসাকে। তাঁর জায়গা নেবেন সহকারী কোচ পাবলো কুইরোগা।
কোপা আমেরিকার নিয়মে বলা হয়েছে, ‘ম্যাচ শুরুর সূচিকে কঠোরভাবে মানতে হবে প্রতিটি দলকে।’ এ নিয়ে কোনো নিয়ম ভাঙা হলে সে জন্য ‘নির্দিষ্ট ওই দলের কোচ দায়ী থাকবেন’। দ্বিতীয়ার্ধে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মাঠে ফেরার এই নিয়ম প্রথমবার ভাঙলে সতর্ক করে দেওয়া হয়। দ্বিতীয়বার ভাঙলে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হতে হয় এবং বিয়েলসাকে এই শাস্তিই পেতে হচ্ছে। উরুগুয়ে ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকেও ১৫ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে।
আর্জেন্টাইন কোচরা ঠিক কী কারণে নিয়ম ভাঙছেন কিংবা আর্জেন্টাইন কোচদের ক্ষেত্রে কেন বারবার এমন ঘটছে, তা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। তবে উরুগুয়ের সহকারী ডিয়েগো রেয়েস বিয়েলসার নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বলেছেন, ‘সর্বশেষ ম্যাচে (দেরি না করতে) আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। কিন্তু এমন কিছু অনিশ্চয়তা ছিল, যেসব সমাধান করা যায়নি। ম্যাচের সময় ড্রেসিংরুমে অনেক কিছু চলে। আর এই টুর্নামেন্টে এমন অল্প সময় নিয়েও তারাও (আয়োজকেরা) বেশ কঠোর।’
কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা ভেনেজুয়েলার কোচ বাতিস্তা গ্রুপ পর্বে জ্যামাইকার বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়াতে পারেননি। তার আগে মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দল নিয়ে মাঠে ফিরতে পারেননি বাতিস্তা। এর শাস্তি হিসেবে বাতিস্তাকে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি ভেনেজুয়েলা ফুটবল ফেডারেশনকেও ১৫ হাজার ডলার জরিমানা করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল।
চিলির কোচ গারেকা একই অপরাধে অভিযুক্ত হন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেওয়া চিলির শেষ ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়াতে পারেননি গারেকা। কানাডার বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছিল চিলি। ১৫ হাজার ডলার জরিমানাও দিতে হয় চিলি ফুটবল ফেডারেশনকে। চিলির বিপক্ষে সেই ম্যাচেই বিরতির পর দেরিতে মাঠে ফেরায় পেরুর বিপক্ষে পরের ম্যাচে নিষিদ্ধ হন আর্জেন্টিনা কোচ স্কালোনি। একই অঙ্কের জরিমানাও গুনতে হয় আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনকে (এএফএ)।
দল নিয়ে কোচদের মাঠে ফিরতে দেরি হওয়ার ব্যাপারে পেরু কোচ হোর্হে ফোসাত্তি বলেছেন, ‘স্টপওয়াচ বেঁধে কাজ করতে প্রথমার্ধ শেষের পর সঠিক সময় নয়। যদিও ড্রেসিংরুমে যাওয়ার পর এটাই চাওয়া হচ্ছে। কিছু স্টেডিয়ামে ড্রেসিংরুম অনেক দূরে, তাদের (আয়োজকদের) এটাও দেখতে হবে।’