সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগের দিন বাংলাদেশ দলের কোচ পিটার বাটলার তোপ দেগেছিলেন সাবিনা খাতুনদের সাবেক কোচ গোলাম রব্বানীকে। নাম উচ্চারণ না করে বলেছিলেন, রব্বানী বাইরে থেকে মেয়েদের মনোযোগ নষ্ট করছেন, প্ররোচিত করছেন। এই ছিল তাঁর অভিযোগ।
যদিও তা অস্বীকার করে উল্টো বাটলারকে দল পরিচালনায় ব্যর্থ বলেছেন গোলাম রব্বানী। বাংলাদেশের সাবেক কোচ এ–ও বলেছেন, সেমিফাইনালের আগে এসব অভিযোগ তোলা ঠিক নয়। বাটলারের উচিত দলের দিকে মনোযোগ দেওয়া।
তবে আজ ভুটানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে সেই বিতর্কের প্রভাব সাবিনাদের মাঠের খেলায় পড়েনি। ভুটানকে ৭-১ গোলে উড়িয়ে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক করতে পেরে বাটলার দল নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। দল সঠিক পথেই আছে জানিয়ে বলেছেন, একটা ভালো দলের মতো দেখাচ্ছে বাংলাদেশকে।
কীভাবে ভালো দলের মতো দেখাচ্ছে, বাটলার সেটার ব্যাখ্যাও দেন, ‘পেশাদারত্বের সঙ্গে নিজেদের কাজটা করে যাওয়া এবং ৯০ মিনিট কোনো খেলোয়াড়ের চোট ছাড়া শেষ করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। আমাদের একটা ভালো ফুটবল দলের মতো দেখাচ্ছে।’ তবে খেলোয়াড়দের আরও ভালো ছন্দে দেখতে চান বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ, ‘দলে কোনো চোট নেই, গোলও পাচ্ছি আমরা, এতে আমি খুশি। আমি আজ উপভোগ করব। তবে এই টুর্নামেন্টে আমাদের আরও ভালো হতে হবে। রিকভারি শেষে ফাইনাল নিয়ে ভাবব।’
দলের ভেতর-বাইরে চলা বিতর্ক নিয়েও সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন বাটলার, ‘আমি খুবই পেশাদার একজন মানুষ। যারা এই মেয়েদের প্ররোচিত করতে চায়, তাদের কেউই আমি যে পর্যায়ে খেলেছি, তারা (সে পর্যায়ে) খেলেনি। আমি যে পর্যায়ে কোচিং করিয়েছি, তারা করায়নি। এসব বিষয় সামাল দিতে অনেক সময় শান্ত থাকা প্রয়োজন, আমি তাই করেছি।’
এরপর বাটলারের মুখে তৃপ্তির সুর, ‘আমরা অনেক নতুন খেলোয়াড়কে খেলার সুযোগ দিতে পেরেছি, যাতে ওরা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে, এটা ভালো দিক। আজ আমরা ভালো খেলতে পেরেছি, তাই ভালো লাগছে। মেয়েরাও খুশি, গত ছয়-সাত মাস আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি দলে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিবেশ আনতে। যে চেষ্টা ও নিবেদন নিয়ে এই মেয়েরা খেলে, আমি তাদের নিয়ে সব সময়ই খুশি।’
অসুস্থ থাকায় গতকাল অনুশীলন করেননি অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তাঁকে নিয়ে একটু সংশয়ে ছিলেন বাটলার। তবে ম্যাচে সাবিনা দুই গোল করে বড় জয়ে অবদান রাখায় খুশি বাটলার, ‘সাবিনা অসুস্থ ছিল, তবে আমি ভেবেছিলাম, সে ৪০-৪৫ মিনিট খেলতে পারবে। বিরতির সময় আমি তাকে জিজ্ঞেস করি, খেলা চালিয়ে যেতে পারবে বলল। তবে ৩৫-৪০ মিনিট পরই তাকে ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। তবে সে আসলেই ভালো দুটি গোল পেয়েছে। দলের জন্য সে একটা উদাহরণ।’