এক মাসের কম সময়ের ব্যবধানে মেয়েদের সামনে আরও একটি সাফ ফুটবল টুর্নামেন্ট। অনূর্ধ্ব–১৬ বছর বয়সীদের জন্য এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে নেপালের কাঠমান্ডুতে। ফেব্রুয়ারির শুরুতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব–১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের পর বাংলাদেশের মেয়েদের আরও একটি বয়সভিত্তিক দল মাঠে নামবে আঞ্চলিক শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে। ১ মার্চ থেকে শুরু হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত, ভুটান ও স্বাগতিক নেপাল।
মেয়েদের জাতীয় দলের কোচ সাইফুল বারী অনূর্ধ্ব–১৬ দলেরও দায়িত্বে। এ মাসের শুরুতে মেয়েদের অনূর্ধ্ব–১৯ দলের আফঈদা–সাগরিকা–স্বর্নারা এই কোচকে উপহার দিয়েছেন প্রথম শিরোপা। টস–বিতর্কে যদিও সেই শিরোপা ভারতের সঙ্গে ভাগ করতে হয়েছে। এবার অবশ্য অনূর্ধ্ব–১৬ দলকে নিয়ে বেশখানিকটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে কোচ সাইফুল বারীকে।
নেপালে যে দলটি যাচ্ছে, সেটি একেবারেই অনভিজ্ঞ। তবে সাইফুল বারী এ চ্যালেঞ্জ নিচ্ছেন, ‘শিরোপা জিততে হলে চ্যালেঞ্জ নিতেই হবে। আর আমাদের মেয়েরা এ দেশে চ্যালেঞ্জ নিয়েই ফুটবল খেলে। সুতরাং এসব তাদের কাছে সমস্যা নয়। দলটিতে নতুন অনেক খেলোয়াড় আছে, যারা এই প্রথম বিদেশ যাবে, বিমানে চড়বে। অভিজ্ঞতার ঘাটতি আছে। তবে আমি মনে করি, আমার দলের মেয়েরা প্রতিভাবান, ওরা লড়াই করেই চ্যালেঞ্জ জয় করবে।’
অনূর্ধ্ব–১৬ দলের প্রস্তুতিতেও কিছুটা ঘাটতি আছে। সেটি মূলত কোচিং স্টাফের অনূর্ধ্ব–১৯ দল নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণেই। সাইফুল বারী সেটি স্বীকারও করলেন, ‘এ মাসের শুরুতে সাফ অনূর্ধ্ব–১৯ টুর্নামেন্ট ছিল। আমি, আমার সহকারী লিটু (মাহবুবুর রহমান), পান্নু (গোলকিপিং কোচ আরিফ আহমেদ) সবাই ব্যস্ত ছিলাম। তবে এই দলটাকে দেখভাল করেছে আরেক সহকারী কোচ মিরোনা। উনিশের টুর্নামেন্টের পর ওদের নিয়ে কাজ করেছি। গত কয়েক দিনে বেশ কিছু প্রস্তুতিমূলক ম্যাচও খেলেছে ওরা। কিছু প্রতিভাময়ী খেলোয়াড় আছে। আমি নাম বলব না, তবে ওদের নিয়ে আমি আশাবাদী।’
দলের ৩০ খেলোয়াড় থেকে ৭ জনকে বাদ দিয়েছেন কোচ। দলে ৭ জন বাফুফের মেয়েদের ক্যাম্পের খেলোয়াড়, ৬ জনকে নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) থেকে। বাকিদের বাছাই করা হয়েছে সারা দেশ থেকে। নেপালের ঠান্ডা আবহাওয়া ও সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উঁচুতে খেলার যে ধকল, সেগুলো এই দলকে কতটা ভোগাবে? সাইফুল বারীর উত্তর, ‘এই জায়গাগুলোতেই তো মানসিকতার ব্যাপার এসে যায়। যদিও দলটা (অনূর্ধ্ব) ১৬ বছরের মেয়েদের নিয়ে গড়া। ওদের ওপর কোনো প্রত্যাশার চাপ তৈরি করা ঠিক নয়। ওরা সবাই শিখছে, নিজেদের গড়ে তুলছে। নেপালের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ। এরপর আমরা ম্যাচ ধরে ধরে এগিয়ে যাব। ফাইনালে ওঠাই লক্ষ্য। সেটিতে সফল হলে শিরোপা জিতেই আসতে হবে। এর বিকল্প নেই।’
অনূর্ধ্ব–১৬ দলের অধিনায়ক, দলের রক্ষণভাগের খেলোয়াড় অর্পিতা বিশ্বাস আত্মবিশ্বাসী এ টুর্নামেন্ট নিয়ে, ‘আমাদের প্রথম ম্যাচটা নেপালের সঙ্গে। সেটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচ ধরে ধরেই এগোতে হবে। তবে আমি আশাবাদী আমরা ভালো কিছু করতে পারব।’ সহ–অধিনায়ক থুইনুই মারমাও আশার কথা শোনালেন, ‘আমাদের একটাই লক্ষ্য, টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলা। সেই সামর্থ্য এই দলের আছে।’
১ মার্চ টুর্নামেন্ট শুরু হলেও বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ২ মার্চ, নেপালের বিপক্ষে। এরপর ভারত ও ভুটানের বিপক্ষে খেলা যথাক্রমে ৫ ও ৮ মার্চ। টুর্নামেন্টের ফাইনাল ১০ মার্চ। আগামীকাল নেপালের উদ্দেশে যাত্রা করবে অর্পিতারা।