প্রশ্নটা ফাইনাল শেষ হতে না হতেই উঠেছিল। ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনার ফাইনাল ম্যাচই কি বিশ্বকাপ ইতিহাসের সেরা ফাইনাল ম্যাচ? ফুটবল বিশ্লেষকদের বেশির ভাগেরই উত্তর—‘হ্যাঁ’। তবে এমন একটা ফাইনালে শুরুটা কিন্তু ছিল বড্ড একপেশে।
প্রথমার্ধে মাঠে দিদিয়ের দেশমের দলকে খুব একটা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফ্রান্স ম্যাচে ফেরে দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে। কিলিয়ান এমবাপ্পের ৯৭ সেকেন্ডের জাদুতে। ৮০ মিনিটে প্রথম গোল করার পর এমবাপ্পে দ্বিতীয় গোলটি করেন এক মিনিটের মধ্যেই। মাঠে ফরাসিদের ম্যাচে ফেরানো এমবাপ্পে প্রথমার্ধ শেষে ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকা দলটাকেও তাতিয়ে দিয়েছিলেন।
এমবাপ্পের বয়স মাত্র ২৪। স্বাভাবিকভাবেই দলের জুনিয়র ফুটবলারদের একজন তিনি। ফ্রান্সের বিশ্বকাপ স্কোয়াডের ১৯ জন ফুটবলারের বয়স তাঁর চেয়ে বেশি ছিল। তবে ফাইনালে প্রথমার্ধে দলের পারফরম্যান্সে এই জুনিয়র ফুটবলারই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
২ গোল হজমের পরও ম্যাচে ফেরা সম্ভব—এই কথা বলে সতীর্থদের উদ্বুদ্ধ করেন এমবাপ্পে। দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে যা নিজে করেও দেখিয়েছেন। ড্রেসিংরুমে এমবাপ্পে সতীর্থদের বলেন, ‘এটা বিশ্বকাপ ফাইনাল। এটা জীবন–মরণের লড়াই। প্রথমার্ধে যা খেলেছি, এর চেয়ে খারাপ খেলা সম্ভব নয়। হয় শুধু আর্জেন্টিনাকে এভাবে খেলতে দাও, নইলে নিজেদের খেলার গতি বাড়াও। ওরা দুই গোল করেছে, আমরাও পারব। আমরা ম্যাচে ফিরে আসতে পারব। বিশ্বকাপ কিন্তু চার বছরে একবারই আসে!’
এরপর মাঠে নেমে এমবাপ্পে যা করেছেন, সেটা তো ইতিহাস। জিওফ হার্স্টের পর প্রথম ফুটবলার হিসেবে ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেছেন এই পিএসজি তারকা। জিতেছেন গোল্ডেন বুট। তবে কোনো কিছুই ফ্রান্সের শিরোপা ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট ছিল না।
শুধু এমবাপ্পে নয়, প্রথমার্ধ শেষে দিদিয়ের দেশমও ছিলেন ক্ষুব্ধ। দল হিসেবে মাঠে খেলতে না পারায় পুরো দলকে ধুয়ে দেন তিনি, ‘সিদ্ধান্ত নেওয়ার বেলায় চিন্তাভাবনা আরও স্পষ্ট করতে হবে। আমরা দল হিসেবে খেলছি না। মাঠে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব কমাতে হবে। বিশ্বকাপ জেতার দ্বিতীয় কোনো সুযোগ নেই। দেখে মনে হচ্ছে, তোমরা বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলছ না। আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের মধ্যে পার্থক্য কোথায় জানো? তারা ফাইনালে সবটা নিংড়ে দিয়ে খেলছে, তোমরা না।’