রিয়াল মাদ্রিদের লোভনীয় প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে পিসএজির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছেন গত মে মাসে। কিন্তু তিন বছর চুক্তির ছয় মাস যেতে না যেতেই ক্লাব ছাড়তে চাইছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে—এমনই খবর ইউরোপীয় গণমাধ্যমে।
২৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড পিএসজির ওপর অসন্তুষ্ট বলে প্রায়ই গুঞ্জন শোনা যায়। গুঞ্জনের পালে হাওয়া দেয় তাঁরই কিছু কর্মকাণ্ড ও মন্তব্য। মৌসুমের শুরুতে নেইমারের সঙ্গে পেনাল্টি নিয়ে প্রকাশ্যে বিবাদে জড়িয়েছিলেন।
গত মাসে ফ্রান্স জাতীয় দলে খেলতে গিয়ে মন্তব্য করেন, জাতীয় দলের চেয়ে ক্লাবে কম স্বাধীনতা পান তিনি। এর মধ্যে গত সোমবার রেঁস ম্যাচের পর ঘটান আরেক কাণ্ড।
ইনস্টাগ্রামে নিজের একটি ছবি পোস্ট করে হ্যাশট্যাগ দেন ‘পিভোট গ্যাং’। আক্রমণভাগে সহায়তা কম পান, খেলতে হয় একা স্ট্রাইকার হিসেবে, এমন ইঙ্গিতবাহী সেই পোস্টটি অবশ্য কিছুক্ষণ পরই মুছে দেন।
পিএসজিতে মনমতো থাকতে না পারার এসব ইঙ্গিতের পরপরই এল তাঁর ক্লাব ছাড়ার ইচ্ছার খবর। ফরাসি গণমাধ্যম লেকিপ জানিয়েছে, এমবাপ্পের অসন্তুষ্টির অন্যতম হচ্ছে তাঁর পজিশন।
আক্রমণভাগে বাঁ পাশে খেলতে চান তিনি, কিন্তু এই পজিশনে খেলানো হয় নেইমারকে। আরেক পাশে খেলেন লিওনেল মেসি। কোচ ক্রিস্তোফ গালতিয়েরের অধীনে নিয়মিত গোলমুখে খেলতে হচ্ছে এমবাপ্পেকে।
সাবেক ফরাসি কিংবদন্তি থিয়েরি অঁরি এমবাপ্পের এই অসন্তুষ্টি নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।
তাঁর মতে ব্যক্তির পছন্দের ওপরে ক্লাব, ‘যিনি যে জায়গায় খুব ভালো নন, তিনি সেই জায়গায় খেলতে চাইবেন না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অপছন্দ করা পর্যন্তই। কারণ, সবকিছুর চেয়ে ক্লাব বড়।’
এমবাপ্পেকে ব্যক্তিস্বার্থের চেয়ে ক্লাব বড় বোঝাতে গিয়ে নিজের উদাহরণও টেনেছেন আর্সেনাল, বার্সেলোনার সাবেক ফরোয়ার্ড।
সিবিএস স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অঁরি জানান, বার্সেলোনায় যাওয়ার পর নিজের অপছন্দের পজিশনে খেলতে হয়েছিল তাঁকে, ‘বার্সেলোনায় উইংয়ে খেলতে আমার ভালো লাগত না। খুব অপছন্দ করতাম। কিন্তু দলের জন্য সেটাই আমাকে করতে হয়েছে। আমার এই ছাড়ের মানসিকতার জন্য কেউ প্রশংসাও করেনি। যারা আমার তুলনায় ম্যাচ কম খেলেছে, গোল কম করেছে, তাঁদের বদলে আমাকেই বাঁ পাশে খেলতে হয়েছিল।’
২০১০ বিশ্বকাপ দিয়ে ফ্রান্স জাতীয় দলকে বিদায় জানানো অঁরি, এখন আছেন বেলজিয়াম জাতীয় দলের সহকারী কোচের দায়িত্বে।
২৩ বছর বয়সী ফরাসি ফরোয়ার্ডের জন্য অঁরির পরামর্শ, অসন্তুষ্টি থাকলে যেন কোচের সঙ্গে কথা বলে নেন, ‘ফুটবলে একটাই নিয়ম। কোচ যদি কিছু করতে বলে, সেটাই করতে হবে। যদি সেটা দলের জন্য ভালো হয়। দলের জন্য ভালো না হলে নিজের মতামত দাও।’