তাঁর বয়সটাই এমন যে, কোনো টুর্নামেন্টে প্রথমবার খেলতে নামলেই সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হওয়ার কীর্তি গড়েন। আজ ইউরোতে প্রথমবার খেলতে নেমেও লামিনে ইয়ামাল গড়লেন আরেক কীর্তি। ইউরোপ মহাদেশের শ্রেষ্ঠত্বের এই প্রতিযোগিতায় তিনিই এখন সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়।
শুধু কি তাই? গোলে সহায়তা করার দিক থেকেও ইয়ামাল এখন ইউরোর ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী ফুটবলার। তাঁর কাছ থেকে বল পেয়ে ক্রোয়েশিয়ার জাল কাঁপিয়ে দানি কারভাহাল আবার বনে গেছেন এই প্রতিযোগিতায় স্পেনের সবচেয়ে বেশি বয়সী গোলদাতা। রিয়াল মাদ্রিদের কারভাহাল আর বার্সেলোনার ইয়ামালের ‘যৌথ প্রযোজনায়’ কীর্তিগাথা গোলটির আগে ফাবিয়ান রুইজ ও অধিনায়ক আলভারো মোরাতা খুঁজে নিয়েছেন জালের ঠিকানা। সেটাই লুকা মদরিচ–মাতেও কোভাচিচদের দৈন্য দশার জন্য যথেষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপের প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়াকে ৩–০ গোলে উড়িয়ে ইউরোয় শুভসূচনা করেছে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন স্পেন। স্প্যানিশদের তিনটি গোলই হয়েছে প্রথমার্ধে। ম্যাচজুড়ে ইয়ামাল, কারভাহাল, পেদ্রি, রুইজরা এতটাই দাপুটে ফুটবল খেলেছেন যে, দ্বিতীয়ার্ধে গোল না পাওয়া আশ্চর্যের ব্যাপার মনে হতে পারে।
শুরু থেকে দারুণ খেলতে থাকলেও প্রথম গোল পেয়ে স্পেনকে প্রায় আধঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। ২৯ মিনিটে রুইজের পাস থেকে গোলমুখ খোলেন মোরাতা। ৩ মিনিট পর পিএসজি মিডফিল্ডার রুইজই পেদ্রির কাছ থেকে বক্সের জটলায় বল পেয়ে ব্যবধান ২–০ করেন।
ম্যাচের সেরা মুহূর্তটা আসে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে। ১৬ বছর ৩৩৮ দিন বয়সে খেলতে নেমেই ইউরোয় সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড়ের নতুন কীর্তি গড়া (ভাঙেন পোল্যান্ডের কাসপার কোজলভস্কির রেকর্ড—১৭ বছর ২৪৬ দিন) ইয়ামাল কারভাহালের উদ্দেশে অসাধারণ এক ক্রস বাড়ান। বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দারুণ ফিনিশিং দেন কারভাহাল। রিয়ালের এই ডিফেন্ডার ৩২ বছর ১৫৬ দিন বয়সে গোল করে হয়ে ইউরোয় স্পেনের সবচেয়ে বেশি বয়সী গোলদাতা। আর বার্সার উইঙ্গার ইয়ামাল ইউরোয় সবচেয়ে কম বয়সে গোলে সহায়তা করার ইতিহাস গড়েন।
বিরতির পর বেশ কয়েকটি সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি কোনো দল। মদরিচ এ দিন নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারেননি। ৬৫ মিনিটে তাঁকে তুলে নিয়ে মারিও পাসালিচকে নামান ক্রোয়াট কোট জ্লাতকো দালিচ। মাঠ ছাড়ার সময় মদরিচকে খুব হতাশ দেখাচ্ছিল।
অবশ্য ৮১ মিনিটে সান্ত্বনাসূচক গোল করার সুযোগ পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। রদ্রি নিজেদের বক্সে ব্রুনো পেতকোভিচকে ফাউল করে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। পেনাল্টি থেকে পেতকোভিচই শট নিতে যান। কিন্তু তাঁর শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন স্প্যানিশ গোলকিপার উনাই সিমন। শেষ পর্যন্ত শূন্য হাতেই মাঠ ছাড়তে হয় ক্রোয়াটদের।