ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর স্বপ্নের চেয়েও সুন্দর সময় কাটছে লিওনেল মেসির। তাঁর ছোঁয়ায় মায়ামিও যেন বদলে যাওয়া এক দল। দলটির হয়ে এখনো পর্যন্ত যে ৮ ম্যাচ খেলেছেন, সব কটিতেই জেতাতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। নিজে ১০ গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ৩টি। ক্লাবটিতে এনে দিয়েছেন তাদের ইতিহাসের প্রথম শিরোপা, আরেকটি প্রতিযোগিতার ফাইনালে তুলেছেন।
তবে মেসি এই ম্যাচগুলো খেলেছেন কনক্যাকাফ লিগস কাপ ও ইউএস ওপেন কাপে। যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে সবচেয়ে বড় ঘরোয়া প্রতিযোগিতা মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) এখনো অভিষেক হয়নি তাঁর। এর আগে ২০ আগস্ট এমএলএসে প্রথমবার খেলতে নামার কথা থাকলেও সেটা পিছিয়েছে তাঁর কারণেই। মায়ামিকে লিগস কাপের শিরোপা জেতাতে গিয়ে দলটির ম্যাচের সংখ্যাও বেড়েছে। লিগস কাপ ও এমএলএসের সূচি তাতে ‘সাংঘর্ষিক’ হয়ে পড়ায় এমএলএসের ম্যাচটা পেছাতে হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের লিগে তাই মেসির অভিষেক হওয়ার কথা আগামীকাল ভোরে। এ দিন মায়ামির প্রতিপক্ষ নিউইয়র্ক রেড বুলস। ম্যাচটি হবে নিউইয়র্কের মাঠ রেড বুল অ্যারেনায়। মেসির খেলা মাঠে বসে দেখতে সেখানকার দর্শকের মধ্যে উন্মাদনার মাত্রা এতটাই চড়েছে যে একটি টিকিটের দাম ২৩ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৫ লাখ টাকার বেশি) ছাড়িয়েছে। তবে চড়া মূল্যে টিকিট কেটেও মেসির খেলা তাঁরা দেখতে পারবেন কি না, নিশ্চিত নয়। টানা খেলার মধ্যে থাকা আর্জেন্টাইন তারকাকে যে বিশ্রাম দেওয়ার সম্ভাবনা আছে! সেটা হলে এমএলএসে তাঁর অভিষেক আবারও পিছিয়ে যাবে।
মায়ামিতে যোগ দেওয়ার এক মাসের মধ্যে ৮ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন মেসি। এর মধ্যে ৩টি ম্যাচ আবার গড়িয়েছিল টাইব্রেকারে। সব মিলিয়ে তিনি মাঠে ছিলেন ৭১৪ মিনিট। ৩৬ বছর বয়সী যেকোনো ফুটবলারের জন্যই কাজটা কঠিন। তা ছাড়া নতুন শহরের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া এমনকি বাড়ি খোঁজার জন্য দৌড়ঝাঁপ করতে হয়েছে। মেসিকে তাই ক্লান্ত বলাই যায়।
ব্যাপারটা বুঝতে পারছেন মায়ামি কোচ জেরার্দো টাটা মার্তিনোও। সে কারণে দলের প্রাণভোমরাকে কাল বিশ্রামে রাখার পক্ষে তিনি। নিউইয়র্কের বিপক্ষে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমি বুঝতে পারছি সবাই মেসির খেলা দেখতে চায়। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। কিন্তু আমাকে এসবের ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিলে চলবে না। ভুল কাজ করে আমি ঝুঁকি নিতে চাই না। একটি বিষয় এখন আমার সামনে ঘুরপাক খাচ্ছে, মেসি খেলার জন্য আদৌ প্রস্তুত কি না।’
মেসিকে বিশ্রামে রাখার ব্যাপারে মার্তিনো আরও বলেছেন, ‘পুরো ক্যারিয়ারে সে সব সময়ই সব ম্যাচ খেলতে চেয়েছে। মাঝেমধ্যে চাঙা করে ফিরিয়ে আনার জন্য ওকে বিশ্রাম নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আমি বাইরের চাপে পড়ে ওকে খেলানো বা না খেলানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আজ সন্ধ্যায় অনুশীলনের পর ওর সর্বশেষ পরিস্থিতি আবার দেখা হবে। তবে এটা অবশ্যম্ভাবী যে কোনো না কোনো সময় ওকে ছাড়াই আমাদের খেলতে হবে।’
এমএলএসে ইন্টার মায়ামির অবস্থা ভালো নয়। ইস্টার্ন কনফারেন্সে তারা আছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে। প্লে-অফে জায়গা করে নিতে হলে পরবর্তী ১২ ম্যাচের মধ্যে কমপক্ষে ১০টিতে জিততে হবে। কাজটা যে মেসিকে ছাড়া প্রায় অসম্ভব, সেটা তো তিনি মায়ামিতে যোগ দেওয়ার আগের ম্যাচগুলোর ফলের দিকে তাকালেই বোঝা যায়।