২০০৮ থেকে ২০২৩—গত ১৫ বছর বার্সেলোনার ডিফেন্স ও মিডফিল্ডের সূত্রধর হিসেবে কাজ করে গেছেন সের্হিও বুসকেতস। এ সময়ে বার্সার অসামান্য সব সাফল্যের সারথি হয়েছেন এই স্প্যানিয়ার্ড। এর মধ্যে নিজেকে সময়ের অন্যতম সেরা ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবেও প্রতিষ্ঠা করেছেন বুসকেতস।
বিদায়ের সিদ্ধান্ত জানানোর পর বুসকেতসকে প্রশংসায় ভাসান লিওনেল মেসি–লুকা মদরিচরা। তাঁর সম্পর্কে বলতে গিয়ে একসময়ের সতীর্থ এবং বর্তমান বার্সা কোচ জাভি হার্নান্দেজ বলেছেন, ‘ব্যক্তিগত বিবেচনায়, সে আমার দেখা সেরা মিডফিল্ডার। আমার ক্যারিয়ারে দেখা সবচেয়ে বুদ্ধিমান খেলোয়াড়দের একজন।’
শুধু তা–ই নয়, অন্তত আরেক মৌসুমের জন্য বুসকেতস যেন বার্সায় থেকে যান, সে জন্য জাভি নাকি অনুরোধও করেছিলেন। এরপরও বুসকেতস অবশ্য নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেননি। মৌসুম শেষে বার্সেলোনা ছাড়বেন, এটা বুসকেতস জানিয়ে দিয়েছেন এরই মধ্যে।
এখন যাঁর প্রশংসায় জাভির মতো কিংবদন্তির মুখে প্রশংসার খই ফুটছে এবং যাঁকে রাখার জন্য এত প্রচেষ্টা, সেই বুসকেতসের বিদায় নিশ্চিতভাবেই বার্সার মিডফিল্ডে বড় ধরনের শূন্যতা তৈরি করবে। যেকোনো দলে এ ধরনের খেলোয়াড়ের ব্যক্তিগত শৈলীর পুনরাবৃত্তি রীতিমতো অসম্ভব বলা যায়।
কিন্তু সব ভালো কিছুই নাকি কখনো না কখনো শেষ হতে হয়। সময়, বয়স এবং ছন্দ ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যেতে শুরু করে। নিজের সেরা সময়টাকে পেছনে ফেলে আসার ইঙ্গিত নিশ্চয় বুসকেতস নিজেও বুঝতে পেরেছেন। এ কারণে মৌসুম শেষে বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী এই তারকা।
বার্সা ছেড়ে বুসকেতসের যুক্তরাষ্ট্রের এমএলএস কিংবা সৌদি প্রো লিগের কোনো ক্লাবে যাওয়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বার্সেলোনায় বুসকেতসের সম্ভাব্য বিকল্প কে? ইউরোপিয়ান একাধিক সংবাদমাধ্যমের খবর বলছে, বুসকেতসের বিকল্প হিসেবে বার্সেলোনা হাত বাড়াতে পারে বায়ার্ন মিউনিখের জার্মান ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার জশুয়া কিমিখের দিকে।
কিমিখ নিজেও নাকি এখন বায়ার্ন অধ্যায় পেছনে ফেলে নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চান। ২৮ বছর বয়সী কিমিখের সঙ্গে বার্সেলোনার যোগাযোগের খবরটি দিয়েছে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম মুন্দো দেপোর্তিভো।
২০১৫ সালে আরবি লাইপজিগ থেকে বায়ার্নে যোগ দেন কিমিখ। এর পর থেকে বায়ার্ন মিডফিল্ডের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন এই জার্মান। কিন্তু গত মার্চে ইউলিয়ান নাগলসমানের আকস্মিক বিদায়ের পর কিমিখও নাকি মিউনিখে থাকার ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।
তবে রবার্ট লেভানডফস্কির বায়ার্ন ছেড়ে বার্সায় যাওয়া নিয়ে দুই ক্লাবের তিক্ত সম্পর্ক কিমিখের ক্যাম্প ন্যুতে যাওয়াকে জটিল করে তুলতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, নিজেদের পরীক্ষিত মিডফিল্ডারকে ছাড়তে তারা বড় অঙ্কের মূল্য ধরিয়ে দিতে পারে বার্সাকে। ট্রান্সফার মার্কেটের দেওয়া তথ্য বলছে, কিমিখের বর্তমান মূল্য আট কোটি ইউরো।
পাশাপাশি কিমিখকে কেনার জন্য বার্সাকে লড়তে হতে পারে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গেও। মৌসুম শেষে আরেক জার্মান মিডফিল্ডার ইলকাই গুন্দোয়ানের সিটি ছাড়ার গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তাঁর বিকল্প হিসেবে নাকি কিমিখকে আনার কথা ভাবছেন গার্দিওলা। এর আগে গার্দিওলা যখন বায়ার্নে ছিলেন, তখনই কিমিখের সঙ্গে তাঁর জুটি দারুণভাবে জমেছিল। সেটিকেই নাকি এবার সিটিতে ফেরাতে চান স্প্যানিশ এই কোচ। সব মিলিয়ে আগামী মৌসুমে কিমিখকে নিয়ে লড়াইটা জমে উঠতে পারে।