ডর্টমুন্ডের রক্ষণভাগের ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে আতলেতিকোকে শুরুতেই এগিয়ে দেন দি পল (বাঁয়ে)
ডর্টমুন্ডের রক্ষণভাগের ভুলের সুযোগ কাজে লাগিয়ে আতলেতিকোকে শুরুতেই এগিয়ে দেন দি পল (বাঁয়ে)

রক্ষণের ভুলে ডর্টমুন্ডের সর্বনাশ, সেমির পথে এগিয়ে গেল আতলেতিকো

আতলেতিকো মাদ্রিদ ২ : ১ বরুসিয়া ডর্টমুন্ড

মাদ্রিদের এক অংশে কাল ম্যাচ শেষে ছিল হতাশার ছাপ। ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে যে এগিয়ে গিয়েও ড্র করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। তবে মাদ্রিদের আরেক অংশকে আজ হতাশ হতে হয়নি। সিটিকে রিয়াল হারাতে না পারলেও বরুসিয়া ডর্টমুন্ডকে ঠিকই ২–১ ব্যবধানে হারিয়ে দিল তাদের নগর প্রতিদ্বন্দ্বী আতলেতিকো মাদ্রিদ।

ঘরের মাঠ ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোয় ম্যাচের ৪ মিনিটেই আতলেতিকো এগিয়ে দেন আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপ জেতা রদ্রিগো দি পল। ৩২ মিনিটে ব্যবধান ২–০ করেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার সামুয়েল লিনো। ডর্টমুন্ডের দুই গোল হজমেই ছিল তাদের রক্ষণভাগের দায়। মরণব্যাধি ক্যানসারজয়ী সেবাস্তিয়ান হলার ৮১ মিনিটে এক গোল শোধ করলেও দলের হার এড়ানোর জন্য তা যথেষ্ট ছিল না। রক্ষণভাগের ভুলের খেসারত দিয়েই মাঠ ছাড়তে হয়েছে অতিথিদের।

চ্যাম্পিয়নস লিগে ২০১৯ সালের পর এই প্রথম ঘরের মাঠে টানা ৫ ম্যাচ জিতল আতলেতিকো। প্রতিপক্ষের মাঠে সর্বশেষ ১১ ম্যাচে এটি ডর্টমুন্ডের নবম হার। কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগ জিতে সেমিফাইনালের পথে কিছুটা এগিয়েও গেল দিয়েগো সিমিওনের দল।

আতলেতিকোর গোল দুটি আর্জেন্টিনার দি পল আর ব্রাজিলের লিনোর সৌজন্যে এলেও ম্যাচের আসল নায়ক ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়ী ফরোয়ার্ড আঁতোয়ান গ্রিজমান। ম্যাচে ৬টি গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন গ্রিজমান, যা তাঁর চ্যাম্পিয়নস লিগের এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি। ২০১৬ সালের পর আতলেতিকোর কোনো খেলোয়াড়ের সবচেয়ে বেশি সুযোগ তৈরির নজিরও এটি। ৮ বছর আগে কোকে পিএসভি আইন্দহফেন বিপক্ষে ৮টি সুযোগ তৈরি করেছিলেন।

সামুয়েল লিনোর গোল উদ্‌যাপন

লিনোর গোলটা করেছেন গ্রিজমানের বাড়ানো বল থেকেই। গ্রিজমান ডর্টমুন্ডের দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে যেভাবে লিনোকে পাসটা দিয়েছেন, তাতে তিনি গোল না পেলে বরং ‘অপরাধী’ হয়ে থাকতেন। বাঁ পাশে পুরোপুরি অরক্ষিত ছিলেন লিনো। বল রিসিভ করেই ডান পায়ের টোকায় পাঠিয়ে দেন ডর্টমুন্ডের জালে। জার্মান ক্লাবটির গোলকিপার গ্রেগর কোবেলের তা থামানোর কোনো সুযোগই ছিল না।

লিনোর এই গোলটা হতে পারত ডর্টমুন্ডের জার্সিতেও। ২০২২ সালে ৬৫ লাখ ইউরোর বিনিমিয়ে তাঁকে পর্তুগিজ ক্লাব জিল ভিসেন্তের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নেন আতলেতিকোর পরিচালক বের্তা। খেলোয়াড় ‘ছিনতাইয়ের’ যেসব গল্প প্রায়ই শোনা যায়, সেটার অংশ হতে পারতেন তিনিও। সেবার লিনোকে নেওয়ার পর উঠেপড়ে লাগে ডর্টমুন্ড। আতলেতিকোর ৬৫ লাখ ইউরোর বিপরীতে তারা ১ কোটি ৫০ লাখ ইউরোর প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তত দিনে আতলেতিকোর সঙ্গে চুক্তির সব প্রক্রিয়া সেরে ফেলেছিলেন লিনো।

এর আগে ম্যাচের ৪ মিনিটে দি পল যে গোলটা করেন, সেখানে সাঙ্ঘাতিক ভুল করেন বসে ডর্টমুন্ড। নিরাপদ জায়গায় দাঁড়ানো কাউকে পাস দেওয়ার সুযোগ থাকলেও গোলকিপার কোবেল বল দেন মার্কিংয়ে থাকা ইয়ান ম্যাটসেনকে। ম্যাটসেন বল নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হন। তাঁর কাছ থেকে বল ছোঁ মেরে কেড়ে নেন দি পল। বাকি কাজটা অনায়াসে সারেন।

ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে গ্রিজমানের সেলফি

বিরতির পর গোলের আরও সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি আতলেতিকো। তবে ৮১ মিনিটে পাওয়া সুযোগটা ঠিকই কাজে লাগান হলার। বক্সের কিনারা থেকে গোল করেন তিনি। ৮৭ মিনিটে সমতা ফেরানোর সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিল ডর্টমুন্ড। কিন্তু জেমি বায়নো গিটেনসের শট ক্রসবারে লাগলে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ডর্টমুন্ডকে।