হারের পর বিষণ্ন আর্জেন্টিনার ছেলেদের অলিম্পিক ফুটবল দলের কোচ হাভিয়ের মাচেরানো
হারের পর বিষণ্ন আর্জেন্টিনার ছেলেদের অলিম্পিক ফুটবল দলের কোচ হাভিয়ের মাচেরানো

প্যারিস অলিম্পিক

আর্জেন্টিনার বিদায় মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে মাচেরানোর

খেলোয়াড়ি ক্যারিয়ারে হাভিয়ের মাচেরানো নিজেও এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছেন। তিনি দেখেছেন, জয়ের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও কখনো কখনো হারতে হয়। মাচেরানোর কাছে এটাই ফুটবল। ২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনাল, ২০১৫ ও ২০১৬ কোপা আমেরিকার ফাইনাল তাঁকে এমন অভিজ্ঞতাই উপহার দিয়েছে। শিরোপা জিততে পারেননি, কিন্তু চেষ্টারও ত্রুটি রাখেননি। প্যারিস অলিম্পিকে ছেলেদের ফুটবলে গতকাল রাতে কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ১-০ গোলে হেরে আর্জেন্টিনার বিদায়ের পর এসব কথাই বললেন মাচেরানো।

আর্জেন্টিনার অলিম্পিক দলের এই কোচ মনে করেন, তাঁদের বিদায় নিয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্তে চলে আসা অনুচিত হবে। গোল না পাওয়া ছাড়া মাঠে আর কোনো কিছু যে বাদ রাখেনি তাঁর দল! হারের পর সংবাদকর্মীদের মাচেরানো বলেছেন, ‘এটা নতুন না। এখনই কোনো সিদ্ধান্তে আসা ঠিক হবে না। আমরা গোল পাইনি। ম্যাচে প্রথম ১৫ মিনিট কঠিন ছিল, বিশেষ করে শুরুর দিকে গোল হজমের পর। এরপর দল গুছিয়ে নিয়েছে এবং সমতায় ফেরার বেশ কিছু সুযোগও পেয়েছে।’

মাচেরানো এরপর দার্শনিকসুলভ কণ্ঠে বলেছেন, ‘যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি, সেটা নতুন কিছু না। ফুটবল এমনই। হার এড়াতে সম্ভাব্য সবকিছু করার পরও খালি হাতে ফিরতে হলো।’

মাতেতার গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। পরে এই গোল পুঁজি করেই জিতেছে

ফরাসি স্ট্রাইকার জ্যাঁ-ফিলিপ মাতেতা ম্যাচের পাঁচ মিনিটে গোল করে এগিয়ে দেন ফ্রান্সকে। বেশ কিছু সুযোগ পেলেও গোলটি আর পরিশোধ করতে পারেনি আর্জেন্টিনা। বোর্দোয় জয়ের পর ফ্রান্স দলের উদ্‌যাপনের শুরু হয় কুৎসিত এক সংঘর্ষে। আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসের দাবি, উদ্‌যাপনের সময় ফরাসি মিডফিল্ডার এনজো মিলোট আর্জেন্টিনার বেঞ্চকে লক্ষ্য করে চিৎকার ও অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেছেন। এতে তেতে ওঠেন আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়েরাও। খেলোয়াড়দের পাশাপাশি কোচ ও কর্মকর্তারাও এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। উত্তেজিত ছিলেন দর্শকেরা। তবে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে দেয়নি।

তবে এসব ছাপিয়ে বিদায়টাই বেশি কষ্ট দিচ্ছে মাচেরানোকে। ১৬টি গোলের সুযোগ তৈরি করেও পারেনি আর্জেন্টিনা। সেমিফাইনালে যাওয়া ভাগ্যে ছিল না—মাচেরানোর কথা শুনলে এমনটাই মনে হয়, ‘আমরা প্রতিপক্ষের চেয়ে বেশি সুযোগ তৈরি করেছি। কিন্তু ফুটবল প্রতিভা বোঝে না। এটাই বাস্তবতা এবং আজ (গতকাল) ছিল আমাদের ঘরে ফেরার পালা।’

ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছেন না মাচেরানো

২০২৫ সালে চিলিতে শুরু হবে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ। মাচেরানো তত দিন পর্যন্ত কোচের দায়িত্বে থাকবেন কি না, টিওয়াইসি স্পোর্টসের এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন সাবেক এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার, ‘ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছি না। আগে হোটেলে ফিরে হারটা হজম করার চেষ্টা করি।’

আর্জেন্টিনার অনূর্ধ্ব-২৩ দলে খেলা সিনিয়র এই তিন খেলোয়াড়কে ধন্যবাদও জানিয়েছেন মাচেরানো, ‘তিন সিনিয়র খেলোয়াড়ের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। সাহায্য করতে তারা আমাদের প্রতি হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তরুণদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা। বাস্তবতা হলো, খুব খারাপ লাগছে। কারণ, দল অনেক দূর যাবে, এই আশা ছিল আমাদের।’