সময়টা ভালো যাচ্ছিল না ঢাকা আবাহনীর। স্বাধীনতা কাপের সেমিফাইনালে বসুন্ধরা কিংসের কাছে ৪-০ গোলে হার। প্রিমিয়ার লিগের প্রথম ম্যাচে ড্র। দ্বিতীয় ম্যাচে হার। তৃতীয় ম্যাচে জয়ের দেখা মিলেছে। লিগে স্বস্তির সেই জয়ের চার দিনের মধ্য আরেকটি জয় পেয়েছে আবাহনী। এই জয় অবশ্য লিগে নয়, ফেডারেশন কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে। সেটাও বিশাল এক জয়। আজ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় আবাহনী ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে। ৭১ থেকে ৮৬ মিনিটের মধ্যে হয়েছে ৪ গোল।
হ্যাটট্রিক করেছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়াশিংটন ব্রানদ্রাও দস সান্তোস। দলের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ গোল তাঁর। ৩৭, ৭১ ও ৭৩ মিনিটে হয়েছে এই গোলগুলো । চলতি মৌসুমে ঘরোয়া ফুটবলে এটি প্রথম হ্যাটট্রিক। সেন্ট ভিনসেন্টের স্ট্রাইকার কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট ৮৩ ও ৮৬ মিনিটে করেছেন ৫ম ও ৬ষ্ঠ গোল। ১৫ মিনিটে প্রথম গোলটা নাবিব নেওয়াজের। আবাহনীর হয়ে আজই মৌসুমে প্রথমবার প্রথম একাদশে সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
সবাইকে ছাপিয়ে আলো কাড়েন ওয়াশিংটন। বাংলাদেশে প্রথম এসে এবার নজর কাড়েন স্বাধীনতা কাপের সেমিতে। সে ম্যাচে বসুন্ধরা কিংসকে প্রথম কয়েক মিনিট ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন এই ফরোয়ার্ড। গতির ঝড় তুলে কাঁপিয়ে দেন কিংসের রক্ষণ। কিন্তু গোল পাননি। সে ম্যাচে ৪ গোলের বড় হার নিয়ে মাঠে ছাড়ার দিনে ওয়াশিংটনের মন খারাপ ছিল অনেক। সুযোগ খুঁজছিলেন নিজেকে মেলে ধরার। সেটা আজ পারলেন।
স্বাভাবিকভাবেই ৩২ বছর বয়সী ফুটবলার ছিলেন খুবই খুশি। ফুটবল ক্যারিয়ারে এটি তাঁর তৃতীয় হ্যাটট্রিক। আগের দুটি করেছেন ব্রাজিল ও ডেনমার্কে। আজ ম্যাচসেরার পুরস্কার নিয়ে প্রথম আলোকে বললেন, ‘দলের জন্য অবদান রাখতে পেরে ভীষণ ভালো লাগছে। ম্যাচটা দারুণ ছিল আমাদের জন্য। সেরাটা দিতে চাই সব সময়। আজ ছন্দে ছিলাম এবং গোল পেয়েছি।’
ওয়াশিংটনের হ্যাটট্রিকে পর হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট। কিন্তু তৃতীয় গোল করার সুযোগ তাঁকে দেননি কোচ আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানি। কর্নেলিয়াসকে মাঠ থেকে তুলে নেওয়া হয় শেষ দিকে। তাঁর প্রথম ও দলের ৫ম গোলটা ছিল ম্যাচের সেরা। কোনাকুনি দারুণ শটে বল পাঠান জালে। মৌসুমে এটি তাঁর দ্বিতীয় গোল। আগের ম্যাচে শেখ জামালের বিপক্ষে ৫৫ মিনিট ১০ জন নিয়েও আবাহনী যে ১-০ গোলে জিতেছিল, জয়সূচক গোলটি কর্নেলিয়াসেরই। কর্নেলিয়াস আজ দলের ষষ্ঠ গোলটি করেন বাঁ পায়ের দারুণ এক ব্যাক হিলে।
প্রথমার্ধে দুই গোল করা আবাহনী দ্বিতীয়ার্ধে করেছে বাকি ৩ গোল। তবে গোল হতে পারত আরও বেশি। ব্রাদার্সকে আরও বড় গোলের মালা পরাতে পারত আকাশি-নীলেরা। তবে ৬ গোলও অনেক। গত লিগ ম্যাচেই মোহামেডানের কাছে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে ব্রাদার্স। লিগ ও ফেডারেশন কাপ মিলিয়ে দুই ম্যাচে গোপীবাগের দলটি ১১ গোল হজম করেছে।
ব্রাদার্সের ডাগআউটে ছিলেন গাম্বিয়ার কোচ ওমর সিসে। তাঁর জন্য দিনটা কেটেছে খুবই খারাপ। ম্যাচ শেষে ম্যানেজার আমের খান, সহকারী কোচ ফয়সাল মাহমুদরা যখন আত্মসমালোচনা করছেন, ততক্ষণে সিসে মাঠ ছেড়েছেন। অন্য দিকে আবাহনীর কোচ ক্রুসিয়ারির মুখে থাকল চওড়া হাসি। মাঠ ছাড়ার আগে বললেন, ‘আমরা আজ ভালো খেলেছি। এই খেলাটা লিগ ম্যাচেও আমাদের ধরে রাখতে হবে।’