সাফ অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপে সর্বোচ্চ গোলদাতার পাশাপাশি সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতেছেন শামসুন্নাহার
সাফ অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপে সর্বোচ্চ গোলদাতার পাশাপাশি সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতেছেন শামসুন্নাহার

‘শেষ সুযোগ’ কাজে লাগিয়ে যেখানে একা শামসুন্নাহার

অধিনায়ক হিসেবে সত্যিকার অর্থেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে চার ম্যাচে একটি হ্যাটট্রিকসহ করেছেন সর্বোচ্চ পাঁচ গোল। সর্বোচ্চ গোলদাতার পাশাপাশি জিতেছেন সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও। এক টুর্নামেন্টেই এত কীর্তি!

তবে এই সবকিছুকে ছাড়িয়ে শামসুন্নাহারের সবচেয়ে বড় অর্জন দলকে চ্যাম্পিয়ন করা এবং নিজে জাতীয় ও বয়সভিত্তিক মিলিয়ে সাফের সব চ্যাম্পিয়ন দলে খেলা একমাত্র বাংলাদেশি খেলোয়াড় হয়ে যাওয়া।

২০১৭ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম খেলেন শামসুন্নাহার। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। ছিলেন ২০১৮ সালে ভুটানে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দলেও। খেলেছেন ২০২১ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ টুর্নামেন্টে এবং গত বছর সেপ্টেম্বরের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের জাতীয় দলেও। বাংলাদেশকে চ্যাম্পিয়ন করতে নেপালের বিপক্ষে ফাইনালে একটি গোলও ছিল তাঁর। এবার অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়ন দলে তো অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ছিল শামসুন্নাহারের বাহুতেই।

নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন শামসুন্নাহার

বাংলাদেশের মেয়েদের ফুটবল এমন উচ্চতায় উঠে যাওয়ায় উচ্ছ্বসিত শামসুন্নাহার। আজ প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অনূর্ধ্ব–২০ দলের অধিনায়ক বলেছেন, ‘আমার বয়সভিত্তিক দলগুলোয় খেলার বয়স আছে এবং পারফর‍ম্যান্স ভালো বলেই খেলতে পারছি। এটা আমার জন্য ভালো। যেহেতু আমি জুনিয়র, সিনিয়র টিমে যতটুকু সুযোগ পাই চেষ্টা করি কাজে লাগাতে। সানজিদা আপা, মারিয়া আপাদের বয়স শেষ হয়ে গেছে। আমারও শেষ হবে। বয়সভিত্তিকে আগের দুটি আসরে অধিনায়ক হয়েও দলকে জেতাতে পারিনি। এবার শেষ সুযোগ ছিল। দলকে চ্যাম্পিয়ন করতে পেরে প্রচণ্ড খুশি আমি।’

এ পর্যন্ত যত টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন দলে খেলেছেন, তার মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই গত সাফের জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়াটাকে এগিয়ে রাখছেন শামসুন্নাহার, ‘এমন একটা টুর্নামেন্টের ফাইনালে যদি খেলতে না পারতাম, আমার ভেতর একটা আক্ষেপ থেকে যেত। শেষ পর্যন্ত খেলার সুযোগ পেয়েছিলাম স্বপ্না আপুর (সিরাত জাহান) চোটের কারণে। এখন পর্যন্ত সাফের ওই টুর্নামেন্টকেই তাই আমি এগিয়ে রাখব।’

সাফ অনূর্ধ্ব–২০ চ্যাম্পিয়নশিপে রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিলেন শামসুন্নাহার

সাক্ষাৎকারে শামসুন্নাহার বলেন, ঢাকায় প্রথমবার জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নামার অভিজ্ঞতা তিনি আজও ভোলেননি। এখন বোঝেন, দেশের জার্সি পরে খেলার কত মর্যাদা। শামসুন্নাহার বলেন, ‘তখন ১৬ নম্বর জার্সি ছিল আমার। স্যার (কোচ গোলাম রব্বানী) সুযোগ দিয়েছিলেন। ভারতের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে যোগ হওয়া সময়ে নামি। আমি দুইটা টান (মুভ) দিয়েছিলাম। ওটা দেখেই স্যাররা আমার খেলা পছন্দ করেন।’
মাঠে থাকলে শতভাগ উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা করেন শামসুন্নাহার, ‘যে পর্যন্ত বল মাঠের বাইরে না যায়, সে পর্যন্ত আমি দৌড়াতেই থাকি। আমার এই চেষ্টা প্রতি ম্যাচেই থাকবে।’

* এসব প্রসঙ্গ ছাড়া আরও অনেক বিষয়ে শামসুন্নাহারের সাক্ষাৎকার পড়ুন প্রথম আলোর আগামীকালের ছাপা পত্রিকা ও অনলাইনে।