বিশ্বকাপের পর প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা
বিশ্বকাপের পর প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে আর্জেন্টিনা

আর্জেন্টিনার আন্তর্জাতিক ম্যাচ না বিশ্বকাপ জয়ের পার্টি

কাতারে গত ডিসেম্বরে বিশ্বকাপ জয়ের পর এই প্রথম মাঠে নামছে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। পানামার বিপক্ষে এই ম্যাচ বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর ছয়টায়। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এটি যেন আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের আড়ালে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ের উৎসব!

বুয়েনস এইরেসের মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে এই ম্যাচ দেখতে ১৫ লাখ টিকিটের আবেদন জমা পড়েছে—খবরটি পুরোনো। এমনকি ম্যাচটি কাভারের আবেদন করা সাংবাদিকদের সংখ্যাও রেকর্ড পরিমাণ।

ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ে ৬১তম স্থানে থাকা পানামার বিপক্ষে ম্যাচটি হয়তো আন্তর্জাতিক ফুটবলে বিরাট কিছু নয়, কিন্তু আর্জেন্টাইনদের কাছে এটির মূল্য অনেক। জার্সিতে তিনবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বীকৃতিসূচক তিন তারকা নিয়ে এ ম্যাচেই যে প্রথম মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা দল।

আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ৮৩ হাজার দর্শকের ধারণক্ষমতাসম্পন্ন মনুমেন্টাল স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরুর আগে আর্জেন্টাইন দল নাকি বিশ্বকাপ ট্রফি প্রদর্শন করবে। কাতারে ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জেতার পর এ যেন বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনা দলের পুনর্মিলনী।

আর্জেন্টিনার অনুশীলনে মেসি

বিশ্বকাপ জয়ের পর প্রথম ম্যাচ, সেটাও আবার ঘরের মাঠে আর্জেন্টিনার জায়গা থেকে দেখলে এটাই আসলে ম্যাচের মূল আর্কষণ। আর্জেন্টিনার লা নাসিওন পত্রিকা জানিয়েছে, এই ম্যাচে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ পানামাও নাকি তাদের বেশ কয়েকজন মূল খেলোয়াড়কে ছাড়াই এই ম্যাচটি খেলতে এসেছে।

বিশ্বকাপের পর বুয়েনস এইরেসে আর্জেন্টিনা দলকে বিপুল সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। লাখ লাখ জনতার মধ্যে মেসি-দি মারিয়ারা খোলা বাসে চড়ে প্যারেড করেছিলেন। ফিরেছিলেন যাঁর যাঁর ঘরে। সেখানে সংবর্ধনা-উৎসব সবই হয়েছে। এরপর চলে গিয়েছিলেন নিজ নিজ ‘কর্মস্থলে’, মানে যিনি যে ক্লাবে খেলেন, তাদের ডেরায়। পেশাদার ফুটবলের ব্যস্ততায় কেটেছে মাঝের তিনটি মাস।

কিন্তু বিশ্বকাপের সুখস্মৃতির চর্চা করে গেছে তাঁরা এর মধ্যেও। ফিফা উইন্ডোতে পানামার বিপক্ষে ম্যাচটি অনেকটাই আর্জেন্টাইনদের ‘অসম্পূর্ণ’ উৎসবের বাকি অংশ। যেটি বোঝা গেছে, আন্তর্জাতিক বিরতিতে খেলোয়াড়েরা যখন নিজ নিজ ক্লাব থেকে ছুটি নিয়ে আর্জেন্টিনায় ফিরলেন। উৎসবের সেই ‘বাকি অংশ’ শুরু হয়ে গেছে তখন থেকেই।

আর্জেন্টিনার অনুশীলনের ফাঁকে মার্তিনেজরা

মেসি তাঁর পরিবার নিয়ে আর্জেন্টিনায় এক রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। সেখানে বিপুলসংখ্যক ভক্তের চাপে খাওয়া অসম্পূর্ণ রেখেই চলে আসতে হয় তাঁদের। মেসি কেন অন্যরাও নানা রকম সুখের অত্যাচার সহ্য করছেন। লিওনেল স্কালোনির অধীনে অনুশীলনেও ছিল উৎসবের ছোঁয়া। মেসিরা হাসছেন, খুনসুটি করছেন; যেন বিকেল বেলায় পাড়ায় বন্ধুবান্ধবেরা ফুটবল খেলতে জড়ো হয়েছেন। কোনো তাড়া নেই। কোনো চাপ নেই। আন্তর্জাতিক ফটো এজেন্সিগুলো কিংবা সামাজিক

যোগাযোগমাধ্যমে আর্জেন্টাইন দলের অনুশীলন সেশনের যে ছবি প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলো দেখে যে কারও মনে হওয়া স্বাভাবিক, পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ তাঁরাই।
গোটা চিত্রটা উঠে আসে লা নাসিওনকে দেওয়া দি মারিয়ার এক সাক্ষাৎকারে, ‘কোচ সেদিন বললেন, বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আর্জেন্টাইনদের সুখী দেখাটাই দারুণ ব্যাপার। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা আমরা প্রতিদিনই উপভোগ করছি, উদ্‌যাপন করছি। এখন আর্জেন্টিনায় ফিরে ব্যাপারটা আরও উপভোগ করছি। আশা করছি, ম্যাচের দিনটা হবে দুর্দান্ত।’