ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে ফ্রান্স–স্পেন
ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে ফ্রান্স–স্পেন

ইউরো সেমিফাইনাল: ফ্রান্স–স্পেনের সেরা ৫ দ্বৈরথ

ইউরোর সেমিফাইনালে ফ্রান্স–স্পেন ব্লকবাস্টার ম্যাচের দিকে তাকিয়ে এখন ফুটবল–দুনিয়া। এই লড়াইয়ে জিতলেই স্বপ্নের ফাইনাল। স্পেন এখন পর্যন্ত দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দিয়েছে। কোয়ার্টার ফাইনালে তারা বিদায় করেছে স্বাগতিক ও টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেবারিট জার্মানিকে। বিপরীতে ফ্রান্স অবশ্য এখনো নিজেদের সেরা ফুটবলটা খেলতে পারেনি।

তবে বড় মঞ্চে ফরাসিরা বরাবরই অন্য রকম। কে জানে, গুরুত্বপূর্ণ সময়ের জন্য তারা নিজেদের সেরাটা জমিয়ে রেখেছে কি না! সেটি হলে কপাল পুড়তে পারে ছন্দে থাকা স্পেনের। সেমিফাইনালে এই লড়াইয়ের আগে সামনে আসছে দুই দলের অতীত লড়াইয়ের স্মৃতিও। তেমনই পাঁচটি ম্যাচ নিয়ে আয়োজন।

প্লাতিনির ইউরো

১৯৮৪ ইউরো, ফাইনাল

১৯৮৪ সালের ইউরোর ফাইনালের আগে ফুটবলের এই পরাশক্তি একে অপরের মুখোমুখি হয়নি। সেই টুর্নামেন্টটিকে নিজের করে নিয়েছিলেন মিশেল প্লাতিনি। সেবার এই কিংবদন্তির করা ৯ গোল এখনো ইউরোতে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ড হয়ে আছে। ঘরের মাঠের সেই আসরে ফাইনালে ৫৭ মিনিটে প্লাতিনির গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স।

ইউরোর ট্রফি হাতে মিশেল প্লাতিনি

তবে এই গোলে প্লাতিনির কৃতিত্ব যত, তার চেয়ে বেশি দায় ছিল স্প্যানিশ গোলরক্ষক লুইস আর্কোনাডার। ফরাসি কিংবদন্তির নেওয়া দুর্বল ফ্রি–কিক আর্কোনাডার হাত ফসকে জালে জড়ায়। এরপর ৯০ মিনিটে ব্রুনো বেলোনের করা দ্বিতীয় গোলটি নিশ্চিত করে ফ্রান্সের ইউরো জয়।

জোরকায়েফ–চমক

২০০০ ইউরো, কোয়ার্টার ফাইনাল

২০০০ সালে বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসে আয়োজিত ইউরোর শেষ আটে মুখোমুখি হয়েছিল ফ্রান্স ও স্পেন। এবারও জয়ী দলটির নাম ফ্রান্স। ম্যাচে ফ্রান্স জেতে ২–১ গোলে। ম্যাচের ৩২ মিনিটে জিনেদিন জিদানের দুর্দান্ত এক ফ্রি–কিক গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। একটু পরই অবশ্য পেনাল্টি গোলে ম্যাচে সমতা ফেরান মেনদিয়েতা। তবে বিরতির আগেই ফ্রান্সকে ২–১ গোলে এগিয়ে দেন জোরকায়েফ। বাঁ প্রান্ত দিয়ে ঢুকে তাঁর করা জোরালো শটের গোলটিই ফ্রান্সকে এনে দেয় ঐতিহাসিক এক জয়।

জিজুর জাদু

২০০৬ বিশ্বকাপ, শেষ ষোলো

জার্মানির মাটিতে নিজের শেষ বিশ্বকাপে অবিশ্বাস্য ফুটবল খেলেছেন জিনেদিন জিদান। প্রতিযোগিতার শেষ ষোলোয় মুখোমুখি হয় ফ্রান্স–স্পেন। ২৮ মিনিটে ডেভিড ভিলার গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। কিন্তু দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে ম্যাচে ফেরে ফ্রান্স। ফ্রাঙ্ক রিবেরির প্রথম আন্তর্জাতিক গোলে সমতায় ফেরার পর ফ্রান্সের জয় নিশ্চিত হয় প্যাট্রিক ভিয়েরা ও জিদানের গোলে।

বিশ্বকাপ ও ইউরো শিরোপা হাতে ফরাসি কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান।

অবশেষে স্পেনের জয়

২০১২ ইউরো, কোয়ার্টার ফাইনাল

অবশেষে এই ম্যাচ দিয়ে প্রথমবারের মতো কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ফ্রান্সকে হারাতে সক্ষম হয় স্পেন। সোনালি প্রজন্মের স্পেনের হয়ে ১৯ মিনিটে প্রথম গোলটি করেন জাবি আলোনসো। এরপর চেষ্টা করেও আর সমতায় ফিরতে পারেনি ফ্রান্স। শেষ দিকে নিজের শততম ম্যাচে দলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করে স্পেনের জয় নিশ্চিত করেন আলোনসো।

নেশনস লিগে ফ্রান্সের বাজিমাত

২০২১ নেশনস লিগ, ফাইনাল

বিতর্কিত ফাইনালে জয়ের পথেই ছিল স্পেন। মিকেল অয়রাজাবালের গোলে ৬৪ মিনিটে লিডও নিয়েছিল তারা। কিন্তু মিলানের ফাইনালে ২ মিনিট পরেই ফ্রান্সকে সমতায় ফেরান করিম বেনজেমা। এরপর ৮০ মিনিটে ফ্রান্সকে এগিয়ে দেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। তবে গোলের সময় এমবাপ্পে অফসাইডে ছিলেন দাবি করে অভিযোগ আনে স্পেন। যদিও তাতে লাভ হয়নি। এই গোলেই ফ্রান্স জিতে নেয় নেশনস লিগের শিরোপা।