রিয়াল গোলকিপার থিবো কোর্তোয়ার দিকে লাইটার, প্লাস্টিক বোতল ছুঁড়ে মারেন আতলেতিকো সমর্থকেরা
রিয়াল গোলকিপার থিবো কোর্তোয়ার দিকে লাইটার, প্লাস্টিক বোতল ছুঁড়ে মারেন আতলেতিকো সমর্থকেরা

মাদ্রিদ ডার্বিতে দর্শকদের ঝামেলা, কোর্তোয়াকে দোষারোপ সিমিওনের

ম্যাচের তখন ৬৮ মিনিট ৩০ সেকেন্ড। রেফারির নির্দেশে মাঠ ছেড়ে উঠে গেলেন দুই দলের খেলোয়াড়েরা। আবার যখন খেলা যখন শুরু হলো, পেরিয়ে গেছে ১৫ মিনিট। কাল ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোয় মাদ্রিদ ডার্বিতে দেখা গেছে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ম্যাচ–স্থগিতের ঘটনা।

দর্শকের ঝামেলায় ১৫ মিনিট থমকে থাকা ম্যাচটিতে শেষ পর্যন্ত অবশ্য কেউ জেতেনি। খেলা থামিয়ে দেওয়ার আগে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে গোল করেন এদের মিলিতাও, আর ম্যাচের শেষ দিকে সেটি শোধ করেন আতলেতিকো মাদ্রিদের আনহেল কোরেয়া। ম্যাচের পর দর্শকদের ক্ষুব্ধ করে তোলার পেছনে রিয়াল গোলকিপার থিবো কোর্তোয়াকে দায়ী করেছেন আতলেতিকো কোচ দিয়েগো সিমিওনে।

প্রায় নিষ্প্রাণ ম্যাচে আতলেতিকোর সমর্থকদের ফুঁসে ওঠার শুরু রিয়ালের গোলের পর। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে ভিনিসিয়ুসের সহায়তায় রিয়ালকে ১–০ গোলে এগিয়ে দেন মিলিতাও। এগিয়ে যাওয়ার আনন্দে রিয়াল গোলকিপার কোর্তোয়ার উদ্‌যাপন পছন্দ হয়নি আতলেতিকো সমর্থকদের। গোলপোস্টের পেছনে থাকা সমর্থকদের দিক থেকে মাঠে উড়ে আসে লাইটার ও প্লাস্টিক বোতল। ২০১৮ সালে রিয়ালে যোগ দেওয়া কোর্তোয়া ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আতলেতিকোয় ছিলেন। একজন সাবেক খেলোয়াড়ের মেত্রপলিতানোয় এসে এভাবে উদ্‌যাপন হজম হয়নি আতলেতিকো সমর্থকদের।

গোল করেছেন এদের মিলিতাও, অ্যাসিস্ট করেছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। তবু রিয়ালের গোলের পর জুড বেলিংহামের একার উদ্‌যাপনও ছিল বড় আনন্দের

কোর্তোয়া মাঠ থেকে একটি লাইটার কুড়িয়ে রেফারিকে দেন। রেফারি তখন টাচলাইনে গিয়ে ম্যাচ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। ওই সময় স্টেডিয়ামের লাউড স্পিকারে দর্শকদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘এ ধরনের আচরণ বন্ধ করুন। নইলে খেলা স্থগিত হয়ে যাবে।’

এরপর খেলা শুরু হলেও দর্শকদের এটা–সেটা ছুড়ে মারা বন্ধ হয়নি। কোর্তোয়া আবারও রেফারির কাছে অভিযোগ করলে তিনি দুই কোচ ও লা লিগা প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে ম্যাচ থামিয়ে দেন। দুই দলের খেলোয়াড়েরা চলে যান টানেলের ভেতরে। এ সময় আতলেতিকো কোচ সিমিওনে এবং অধিনায়ক কোকে ও ডিফেন্ডার হোসে মারিয়া হিমেনেজকে গোলপোস্টের পেছনের গ্যালারিতে গিয়ে দর্শকদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।

খেলা থামিয়ে দেওয়া হলে মাঠ ছেড়ে যায় দুই দল

স্পষ্টতই ম্যাচে খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পেছনে ছিল আতলেতিকোর সমর্থকদের ভূমিকা। তবে ম্যাচের পর সমর্থকদের খেপিয়ে দেওয়ার পেছনে কোর্তোয়াকেই দায়ী করেছেন আতলেতিকো কোচ, ‘আপনি গোল উদ্‌যাপন করতেই পারেন, কিন্তু সেটা (প্রতিপক্ষ) সমর্থকদের দিকে তাকিয়ে নয়। গ্যালারির দিকে গিয়ে এমনভাবে নয়। সমর্থকেরা এমনিতেই চটেনি, তাদের চটার কারণ আছে।’

রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আনচেলত্তি সরাসরি কারও দিকে আঙুল তোলেননি। তবে ম্যাচ স্থগিতের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলে মনে করেন, ‘ওটা সঠিক সিদ্ধান্তই ছিল। কেউই খেলা থামাতে চায় না। সবাই খেলতে চায়। কিন্তু রেফারি এখানে ভালো করেছেন।’ ম্যাচ শেষে আতলেতিকো মাদ্রিদের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়, মাঠে বিভিন্ন জিনিস ছুড়ে দেওয়ার সময়ই ক্লাবের নিরাপত্তা বিভাগ পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করেছে। ঘটনায় জড়িত এক ব্যক্তিকে চিহ্নিতও করা হয়েছে।

সমর্থকদের আচরণে বিরক্ত হলেও তাঁদের পাশেই দাঁড়িয়েছেন দিয়েগো সিমিওনে

নতুন মৌসুমের প্রথম মাদ্রিদ ডার্বি অবশ্য মাঝে স্থগিত হয়ে যাওয়াতেই সীমাবদ্ধ ছিল না, যোগ করা সময়ের নবম মিনিটে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় আতলেতিকোর মার্কোস লরেন্তেকে। ফ্রান গার্সিয়াকে ফাউল করায় প্রথম হলুদ কার্ড দেখানো হয়েছিল তাঁকে। তবে ভিএআরে সেটি লাল কার্ডে পরিণত হয়। এর আগে যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে কোরেয়ার গোলটিও আসে ভিএআর রিভিউর পর, যা প্রথমে অফসাইড বলে বাতিল করা হয়েছিল।

লা লিগায় অষ্টম রাউন্ড শেষে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে রিয়াল, ১৬ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আতলেতিকো। বার্সেলোনা ২১ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে।