লিডস ইউনাইটেডকে ২-১ গোলে হারিয়ে প্রিমিয়ার লিগ শিরোপার পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল ম্যানচেস্টার সিটি। দুইয়ে থাকা আর্সেনালের চেয়ে এখন ৪ পয়েন্টে এগিয়ে আছে তারা। সুবিধাজনক অবস্থানে থেকেও অবশ্য ম্যাচ শেষে মেজাজ হারিয়েছেন পেপ গার্দিওলা।
কারণ, আর্লিং হলান্ড নিজে পেনাল্টি না নিয়ে ইলকায় গুন্দোয়ানকে সুযোগ দিয়েছেন। গুন্দোয়ান আবার সেই পেনাল্টি মিসও করেছেন। মাঠে তাৎক্ষণিকভাবে পেনাল্টি নেওয়ার সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের বিষয়টি মানতে পারেননি গার্দিওলা। এ নিয়ে সতর্কবার্তাও দিয়েছেন এই স্প্যানিশ কোচ। বলেছেন, যাঁর পেনাল্টি নেওয়ার কথা, তাঁকেই নিতে হবে।
লিডসের বিপক্ষে ম্যাচের ২৭ মিনিটের মধ্যেই গুন্দোয়ানের জোড়া গোলে ২-০–তে এগিয়ে যায় সিটি। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে পেনাল্টি পায় ম্যান সিটি। এমনিতে দলের হয়ে হলান্ডই নিয়মিত পেনাল্টি নেন। কিন্তু কাল গুন্দোয়ানের সামনে হ্যাটট্রিকের সুযোগ থাকায় পেনাল্টিটি তাঁকেই নিতে দেন হলান্ড।
গুন্দোয়ান পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারেননি। তাঁর নেওয়া শট গোলকিপারকে ফাঁকি দিলেও ফিরে আসে পোস্টে লেগে। সে সময় হলান্ডের উদ্দেশে গার্দিওলাকে বলতে শোনা যায়, ‘তোমাকে নিতে হবে।’ এরপর সিটির বিপদ বাড়ে এক মিনিট না পেরোতেই লিডস একটি গোল শোধ করে দিলে।
পুরো বিষয়টি যে গার্দিওলা ভালোভাবে নেননি, তা স্পষ্ট হয়েছে ম্যাচের পর গার্দিওলা ও গুন্দোয়ানের বক্তব্যে। গুন্দোয়ান ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘প্রথমে তিনি আর্লিংকে (হলান্ডকে) দেখান যে এটা নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ ছিলেন। এরপর তিনি আমাকে বলেন।’
নিজে পেনাল্টি নেওয়ার ঘটনাটি নিয়ে গুন্দোয়ান আরও বলেছেন, ‘যখন আর্লিং বলটি হাতে নিল, আমি নিশ্চিত ছিলাম, সে পেনাল্টি নেবে। কিন্তু এরপর সে আমার দিকে তাকাল। আমি বোঝার চেষ্টা করলাম, সে নিশ্চিত কি না। এরপর সে বলটি আমাকে দিয়ে দিল। আমি গোলের ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলাম। আমি এখন মনেও করতে পারছি না যে বলটি গোলক্ষক আটকে দিয়েছিল নাকি পোস্টে লেগে ফিরে এসেছিল।’
গোলটি করা উচিত ছিল জানিয়ে গুন্দোয়ান আরও বলেছেন, ‘আমাদের তৃতীয় গোলটি করা উচিত ছিল। মাঝেমধ্যে এভাবেই তারা প্রতি–আক্রমণে গিয়ে গোল করে। তখন সবকিছু বদলে যেতে পারে। তবে আমরা ভালোভাবেই বিষয়টা সামলাতে পেরেছি এবং তিন পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয় নিয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন গার্দিওলাও। তিনি বলেছেন, ‘ম্যাচ তখনো শেষ হয়ে যায়নি। এখানে দেখা গেল, আর্লিং কতটা দারুণ এবং উদার। যদি ১০ মিনিট হাতে রেখে ম্যাচে ৪-০ হতো, তাহলে ঠিক ছিল। কিন্তু এটা ছিল ২-০। তখনো সব শেষ হয়ে যায়নি।’
হলান্ডের পেনাল্টি নেওয়া উচিত ছিল উল্লেখ করে গার্দিওলা আরও বলেছেন, ‘আর্লিং সেরা পেনাল্টি নেওয়া খেলোয়াড়, তাই এটা তার নেওয়া উচিত ছিল। যে পেনাল্টি নেয়, তাকেই আমি চাই। কারণ, এটা তারা নিয়মিত করে এবং এ কাজে তারা বিশেষ।’
গার্দিওলা এরপর যোগ করেন, ‘গুন্দোয়ান যে পেনাল্টি নেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছে, আমি তার প্রশংসা করছি। কিন্তু যার পেনাল্টি নেওয়ার কথা, তাকেই নিতে হবে। তাই আর্লিংয়ের এটা নেওয়া উচিত। কারণ, সে এতে বিশেষায়িত। যদি গুন্দোয়ান পেনাল্টি থেকে গোল করত, সবাই সেটা ভালোভাবে নিত। হ্যাটট্রিকও হয়ে যেত। কিন্তু পেনাল্টি যে নেয়, তাকেই নিতে হবে।’