রদ্রির ব্যালন ডি’অর জয় নিয়ে ফুটবল বিশ্ব যেন এখন দুই ভাগে বিভক্ত
রদ্রির ব্যালন ডি’অর জয় নিয়ে ফুটবল বিশ্ব যেন এখন দুই ভাগে বিভক্ত

‘ফুটবল সবার, শুধু রিয়াল মাদ্রিদের জন্য নয়’

ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মাসখানেক ধরে যেভাবে একতরফা খবর প্রকাশ করে যাচ্ছিল, তাতে মনে হচ্ছিল ফরাসি সাময়িকী ‘ফ্রান্স ফুটবল’ ব্যালন ডি’অর পুরস্কার দেওয়ার আগেই তা পেয়ে গেছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।

কিন্তু প্যারিসের থিয়েটার দু শাতলেতে কাল রাতে দেখা গেছে অন্য দৃশ্য। রিয়াল মাদ্রিদের ভিনিসিয়ুসকে পেছনে ফেলে ম্যানচেস্টার সিটির প্রথম ফুটবলার হিসেবে ব্যালন ডি’অর জিতেছেন রদ্রি

সোনার বলটা যে ভিনিসিয়ুসের বদলে রদ্রির হাতে উঠছে, তা আগেই জেনে গিয়েছিল রিয়াল কর্তৃপক্ষ। সেই ক্ষোভ থেকে কিংবা প্রতিবাদস্বরূপ ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠান বর্জন করে প্যারিসে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রিয়াল। ক্লাবটির এমন আচরণে তাদের ওপর চটেছেন সের্হিও আগুয়েরো। ম্যানচেস্টার সিটি ও বার্সেলোনার সাবেক এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের দাবি, রিয়াল সবকিছুকে নিজেদের মনে করে।

আগুয়েরো (বাঁয়ে) ও রদ্রি যখন ম্যানচেস্টার সিটিতে সতীর্থ ছিলেন

ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠান বর্জনের কারণ হিসেবে রিয়ালের পক্ষ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলা হয়, ‘পুরস্কারের মানদণ্ড অনুযায়ী বিজয়ী হিসেবে যদি ভিনিসিয়ুসকে বেছে না নেওয়া হয়, তাহলে একই মানদণ্ড বিচারে দানি কারভাহালকে (রিয়ালের ডিফেন্ডার) বিজয়ী হিসেবে চিহ্নিত করা উচিত। যেহেতু এমন কিছু হয়নি, তাই এটা পরিষ্কার যে ব্যালন ডি’অর কর্তৃপক্ষ ও উয়েফা রিয়াল মাদ্রিদকে সম্মান করে না। আর যেখানে সম্মান নেই, রিয়াল মাদ্রিদ সেখানে যায় না।’

ভিনিসিয়ুসের বর্ষসেরার স্বীকৃতি না পাওয়ার ঘটনাকে তাঁর রিয়াল সতীর্থ এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা ‘ফুটবল রাজনীতি’ বলেছেন। আর লস ব্লাঙ্কোস সমর্থকেরা রদ্রির ব্যালন ডি’অর জয়কে বলছেন ‘ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ডাকাতি’।

তবে ব্যালন ডি’অরের আয়োজক ফ্রান্স ফুটবলের প্রতি রিয়ালের এমন অসম্মান ও নিজেদের দাম্ভিকতা সহজভাবে নিতে পারেননি আগুয়েরো। লাইভ ভিডিও স্ট্রিমিং পরিষেবা টুইচে সাবেক এই স্ট্রাইকার রিয়ালের কড়া সমালোচনা করেছেন। একই সঙ্গে জানিয়েছেন, তাঁর একসময়ের ম্যানচেস্টার সিটি সতীর্থ রদ্রি যোগ্য খেলোয়াড় হিসেবেই ব্যালন ডি’অর জিতেছেন, ‘এটা সত্যিকার অর্থেই রদ্রির প্রাপ্য। সে বিশ্বসেরা ফুটবলার। ফুটবল সবার, শুধু রিয়াল মাদ্রিদের জন্য নয়। ওরা সবকিছুকে নিজেদের সম্পত্তি মনে করে।’

ক্লাব ও জাতীয় দল মিলে গত মৌসুমে চারটি শিরোপা জেতেন রদ্রি

এবার ব্যালন ডি’অর পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে গত বছরের ১ আগস্ট থেকে এ বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত পারফরম্যান্স বিবেচনা করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে রদ্রি ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, উয়েফা সুপার কাপ ও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জিতেছেন। জাতীয় দল স্পেনের হয়ে জিতেছেন ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ।

ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হয়েও ক্লাব–জাতীয় দল মিলে ১৪ গোল করেছেন, সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ১৮টি। ওয়েম্বলিতে গত মে মাসে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে এফএ কাপ ফাইনালে হারের আগে টানা ৮৫ ম্যাচ অপরাজিত ছিলেন রদ্রি।