উত্তরা ফুটবল ক্লাব লিমিটেডকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বসুন্ধরা কিংস
উত্তরা ফুটবল ক্লাব লিমিটেডকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বসুন্ধরা কিংস

নারী ফুটবল লিগ

সাবিনা-কৃষ্ণার গোলে জয়ে শুরু কিংসের

জয়ের পর কোনো উদ্‌যাপনই করলেন না বসুন্ধরা কিংসের মেয়েরা। কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের টার্ফের একপাশে বসে মারিয়া মান্দা পায়ের চোটে পানি ঢালতে লাগলেন। অধিনায়ক সাবিনা খাতুনও কুলডাউনের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।

কমলাপুর স্টেডিয়ামে আজ শুরু হয়েছে নারী ফুটবল লিগ। প্রথম ম্যাচে উত্তরা ফুটবল ক্লাব লিমিটেডকে ২-০ গোলে হারিয়েছে বসুন্ধরা কিংস। ম্যাচে সাবিনা নিজে ১টি গোল করেছেন। অন্যটি করিয়েছেন কৃষ্ণা রানী সরকারকে দিয়ে।

মেয়েদের ফুটবল লিগে সর্বশেষ দুই আসরেই চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস। সবচেয়ে বড় কথা, লিগে বসুন্ধরা কিংসের মাঠে নামা মানেই প্রতিপক্ষকে দুমড়েমুচড়ে মুড়িমুড়কির মতো ভূরি ভূরি গোল দেওয়া। এবারও সেই প্রত্যাশা নিয়েই মাঠে নেমেছিল দলটি। কিন্তু উত্তরা ফুটবল ক্লাবকে সেই সুযোগ এবার মোটেও দেয়নি বসুন্ধরা কিংস।

বরাবরের মতোই এবারও জাতীয় দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড় নিয়ে দল গড়েছে বসুন্ধরা। সদ্য সাফজয়ী বাংলাদেশ দলের ২৩ খেলোয়াড়ের মধ্যে ১৭ জনই নাম লিখিয়েছেন বসুন্ধরা কিংসে। যদিও চোটের কারণে দলের প্রধান গোলরক্ষক রুপনা চাকমাকে আজ খেলাননি কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানী। দ্বিতীয় গোলরক্ষক ইয়াসমিন আক্তারকে অবশ্য খুব বেশি পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হয়নি।

গত সেপ্টেম্বরে চোটের কারণে সাফের ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে মাত্র ৩ মিনিটেই মাঠ ছেড়েছিলেন স্ট্রাইকার সিরাত জাহান। সেই চোট সারিয়ে এখনো পুরোপুরি ফিট হয়ে উঠতে পারেননি রংপুরের এই ফুটবলার।

গোল করেছেন এবং গোল করিয়েছেন

অথচ সিরাত আক্রমণভাগে বসুন্ধরা কিংসের অন্যতম বড় ভরসা। কবে নাগাদ মাঠে ফিরতে পারবেন, সেটা আজ মাঠে দাঁড়িয়ে নিশ্চিত করে বলতে পারলেন না সিরাত। পিঠে চোট রয়েছে মিডফিল্ডার মিসরাত জাহানেরও।

এ ছাড়া কিছুদিন আগেই মালদ্বীপের ফুটসাল টুর্নামেন্টে খেলে বসুন্ধরা কিংসের ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন সাবিনা। গলায় অস্ত্রোপচারের কারণে মারিয়া মান্দাও মাঝে কিছুদিন হাসপাতালে ছিলেন। সব মিলিয়ে এখনো দল হয়ে মাঠে খেলতে পারছে না বসুন্ধরা কিংস।

বসুন্ধরাকে প্রথম গোলটি পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে বিরতির ঠিক আগ মিনিট পর্যন্ত। আনাই মগিনির ক্রস থেকে সাবিনার সাইড ভলিতে ১-০ তে এগিয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস। এরপর ৭৬ মিনিটে সাবিনার পাস থেকে প্লেসিংয়ে কৃষ্ণা করেন ২-০।

জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়তে পেরেই খুশি সাবিনা। ম্যাচ শেষে বলছিলেন, ‘প্রথম ম্যাচ জয় দিয়ে শুরু করতে চেয়েছিলাম। সেটা করতে পেরেই খুশি। আসলে অনেক দিন পর মাঠে নেমেছি। একটু অগোছালো ছিল খেলা। তা ছাড়া আমাদের মেয়েরা ক্লান্ত। একটার পর একটা সংবর্ধনা, বিভিন্ন অনুষ্ঠান—এসব তো লেগেই আছে। অনুশীলনও একটু কম হয়েছে। তবে আশা করি, পরের ম্যাচ থেকে আমরা ছন্দে ফিরব।’

স্ট্রাইকার কৃষ্ণা রানী সরকার গত মৌসুমে ২৮ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার জিতেছিলেন। এবার প্রথম ম্যাচেই গোল পেয়ে খুশি, ‘প্রথম ম্যাচে গোল পেয়েছি, এ জন্য খুশি। সাফের পর এটাই আমাদের প্রথম ম্যাচ, অনেক দিন বিরতির কারণে খেলার মধ্যে ছিলাম না। তবে আমরা ৩ পয়েন্ট পেয়েছি বলে খুশি। পরের ম্যাচে যাতে আমি আরও বেশি গোল করতে পারি, সেদিকে মনোযোগ দেব।’

দিনের অন্য ম্যাচে আতাউর রহমান ভূঁইয়া কলেজ স্পোর্টিং ক্লাব ৪-০ গোলে হারিয়েছে সিরাজ স্মৃতি সংসদকে। জোড়া গোল করেছেন আকলিমা খাতুন। ১টি করে গোল করেছেন নোসুন জাহান ও রুপা খাতুন।

এবারের লিগে অংশ নিচ্ছে ১২টি ক্লাব—বসুন্ধরা কিংস, আতাউর রহমান ভূঁইয়া কলেজ স্পোর্টিং ক্লাব, এফ সি ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা ইউনাইটেড ক্লাব, কাচারীপাড়া একাদশ উন্নয়ন সংস্থা, নাসরিন স্পোর্টস একাডেমী, সদ্যপুষ্কুরিণী যুব স্পোর্টিং ক্লাব, বরিশাল ফুটবল একাডেমি, ঢাকা রেঞ্জার্স ফুটবল ক্লাব, ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব, সিরাজ স্মৃতি সংসদ ও উত্তরা ফুটবল ক্লাব লিমিটেড।