মালদ্বীপের ইগলসকে হারিয়ে প্লে–অফ খেলার সুযোগ পেয়েছে আবাহনী
মালদ্বীপের ইগলসকে হারিয়ে প্লে–অফ খেলার সুযোগ পেয়েছে আবাহনী

কলকাতায় আবাহনীর অগ্নিপরীক্ষা 

কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে প্লে–অফে আজ মোহনবাগানের মুখোমুখি হচ্ছে আবাহনী। যাদের বিপক্ষে সর্বশেষ তিন ম্যাচে কোনো জয় নেই।

মোহনবাগানের বিপক্ষে বাংলাদেশের কোনো ক্লাবের সর্বশেষ জয় প্রায় এক দশক আগে। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইএফএ শিল্ডের ম্যাচে মোহনবাগানকে হারিয়েছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি। এরপর আবাহনী মোহনবাগানের বিপক্ষে একাধিক ম্যাচ খেললেও জিততে পারেনি কখনো। ম্যাচ হয়েছে মোট তিনটি। ২০১৭ সালে দুটি, গত বছর একটি। কলকাতার দুটি ম্যাচেই হেরেছে আবাহনী, ঢাকার ম্যাচটি শেষ হয়েছে ১–১ গোলে।

এএফসি কাপে আজ আবারও মুখোমুখি আবাহনী–মোহনবাগান। ম্যাচটা এক অর্থে দুই বাংলার ফুটবলের মর্যাদার লড়াইও। মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ হুয়ান ফেরান্দোর কথাবার্তাতেও সেই সুর। গতকাল কলকাতায় ম্যাচ–পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ফেরান্দো বলেছেন, ‘ম্যাচটা মোটেও সহজ হবে না। আবাহনীর বেশ কয়েকজন দারুণ খেলোয়াড় আছে। ম্যাচটা আমাদের জন্য ফাইনাল ম্যাচই এক অর্থে।’

মোহনবাগান খুবই শক্তিশালী দল। এই দলের বিপক্ষে আমরা যদি ভালো কিছু করতে চাই, তাহলে শতভাগেরও বেশি দিতে হবে।
মারিও লেমোস, কোচ, আবাহনী

গত বুধবার সিলেটে মালদ্বীপের ক্লাব ইগলসের বিপক্ষে আবাহনী জিতেছে ২–১ গোলে। প্লে–অফে প্রতিপক্ষ হিসেবে মোহনবাগান অনেক বেশি শক্তিশালী। গত বছর এএফসি কাপের প্লে–অফ রাউন্ডেই মোহনবাগানের কাছে ৩–১ গোলে হেরেছিল আবাহনী। কলকাতা যাওয়ার আগে আবাহনী কোচ মারিও লেমোস প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘মোহনবাগান খুবই শক্তিশালী দল। শক্তিমত্তায় কিছুটা এগিয়ে আছে তারা। এই দলের বিপক্ষে আমরা যদি ভালো কিছু করতে চাই, তাহলে শতভাগেরও বেশি দিতে হবে। মাঠে প্রতিটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে ঠিকঠাকভাবে। সুযোগের সদ্ব্যবহারও করতে হবে।’

তাহলে কি আজকের ম্যাচে মোহনবাগান পরিষ্কার ফেবারিট? সবুজ–মেরুনদের কোচ ফেরান্দো এ ব্যাপারে সরাসরি কিছু বলতে চাননি, ‘ফুটবল ৯০ মিনিটের খেলা। ম্যাচে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ৯০ মিনিটের ম্যাচে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। আবাহনী খুবই ভালো দল।’

ফুটবল ৯০ মিনিটের খেলা। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। ৯০ মিনিটের ম্যাচে যেকোনো কিছুই ঘটতে পারে। আবাহনী খুবই ভালো দল।
হুয়ান ফেরান্দো, কোচ, মোহনবাগান 

এ ম্যাচে আবাহনীর শক্তি নিঃসন্দেহে বিদেশি খেলোয়াড়েরা। গ্রানাডার কর্নেলিয়াস স্টুয়ার্ট, উজবেকিস্তানের মোজাফ্ফরভ, ব্রাজিলের দানিলো আগুস্তো, আর নাইজেরিয়ার দুই ফুটবলার ওজুকো ডেভিড ও এমেকা আর ইরানি মিলাদ শেখ—মোহনবাগানের সমীহ পাচ্ছেন এঁরা সবাই। কাল সংবাদ সম্মেলনেও আবাহনীর বিদেশি প্রসঙ্গ উঠছে। মোহনবাগানের কোচ এ ব্যাপারে দিয়েছেন কূটনৈতিক উত্তর, ‘আমরা শুধু আমাদের নিজেদের নিয়েই ভাবছি।’

আবাহনীর জন্য বড় হুমকি হতে পারেন মোহনবাগানের অস্ট্রেলিয়ান ফুটবলার জেসন কামিংস। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে খেলা এই ফুটবলারকে নিয়ে লেমোস বলেছেন, ‘বিশ্বকাপে যে খেলোয়াড় খেলেছে, সে খুবই উঁচু মানেরই হবে।’ তবে হুমকিটা যে শুধু কামিংস নন, সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘আমাদের মোহনবাগানের অন্য খেলোয়াড়দের নিয়েও ভাবতে হবে। তাদের আরও কয়েকজন ভালো ফুটবলার আছে। তাদের পাহারায় রাখতে হবে। মোটকথা, ম্যাচে কষ্ট করতে হবে। প্রতিপক্ষ যেহেতু খুবই শক্তিশালী, তাই ফল যে সব সময় পক্ষে যাবে, এটাও বলা যায় না।’

ভিসা পেতে দেরি হওয়ায় কলকাতায় পৌঁছাতেও দেরি হয়েছে আবাহনীর। পরশু বিকেলে ভিসা হাতে পাওয়ার পর গতকাল দুই ভাগে কলকাতায় যেতে হয়েছে। এক দল সকাল সাড়ে সাতটায়, আরেক দল দুপুর ১২টার ফ্লাইটে। ইগলস ম্যাচে আবাহনীর গোলবার সামলেছিলেন মাহফুজ হাসান প্রীতম। জ্বরে আক্রান্ত বলে তিনি দলের সঙ্গে কলকাতায় যেতে পারেননি। চোটের কারণে যাননি আলমগীর ও রেজাউলও।

আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আবাহনী যে অগ্নিপরীক্ষায় অবতীর্ণ, সেটি বলাই যায়।