২০১৮ সালের জুনে থাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহায় আটকা পড়ে বিশ্ববাসীর মনোযোগ কেড়েছিলেন ১২ খুদে ফুটবলার এবং তাদের কোচ। বন্যার পানিতে গুহার পানিও বেড়ে যাওয়ায় তাঁদের বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। প্রায় তিন সপ্তাহ আটক থাকার পর জীবিত উদ্ধার করা হয় সবাইকে। সেই দলটির কোচ এক্কাপল চ্যানতাওং আবারও শিরোনাম হলেন, এবার আকস্মিক বন্যায় আটকা পড়ে। আকস্মিক বন্যায় তাঁর বাড়িতে পানি ওঠায় ছাদে উঠে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন চ্যানতাওং।
থাইল্যান্ডের চিয়াং রাই প্রদেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা মায়ে সাইয়ে চ্যানতাওংয়ে বাড়ি। বুধবার তিনি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ২০১৮ সালে ‘ওয়াইল্ড বোয়ার্স’ দলের সঙ্গে গুহায় আটকা পড়ার সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি বাসায় বন্যাদুর্গত অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে মুষলধারে টানা বৃষ্টিপাতে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধস হয়েছে থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চল, ভিয়েতনাম, লাওস ও মিয়ানমারে।
ফোনে এএফপিকে এক্কাপল বলেছেন, গত মঙ্গলবার সকালে তাঁর গ্রামে আকস্মিকভাবে বন্যার পানি ওঠায় পরিবার নিয়ে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পারেননি। পানি ক্রমাগত বেড়ে চলায় প্রেমিকা ও তাঁর এক আত্মীয়কে নিয়ে গত মঙ্গলবার রাতটা বাসার ছাদের ওপর কাটান চ্যানতাওং, ‘ভয় পেলেও নিজেকে বলেছি শান্ত থেকে অপেক্ষা করতে হবে এবং পরিস্থিতি বিবেচনা করতে হবে।’
পানি নেমে যাওয়ার পর বাসার নিচতলায় নেমে আসেন চ্যানতাওং। কিন্তু বাইরে স্রোতের বেগ তখনো খুব বেশি থাকায় বাসা ছেড়ে যেতে পারেননি তিনি।
২০১৮ সালে চ্যানতাওং এবং তাঁর ‘ওয়াইল্ড বোয়ার্স’ দল থাম লুয়াং গুহায় আটকা পড়ার পর আন্তর্জাতিকভাবে উদ্ধার দল গঠন করে তাঁদের বাঁচানো হয়েছিল। চ্যানতাওং জানিয়েছেন, গুহায় আটকা পড়ার সেই অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া শিক্ষা তিনি বন্যার দুর্দশা থেকে বাঁচতে কাজে লাগিয়েছেন, ‘এটা আলাদা কিছু ছিল বলে মনে করি না। প্রথমে (সমস্যায়) মনোযোগ দিতে হয়েছে, এরপর সমস্যাগুলো সমাধান করতে হয়েছে। এভাবে আটকা পড়ায় বেশি চাপ অনুভব করিনি। পরিত্রাণের পথ বের করার চেষ্টা করেছি।’
চ্যানতাওংয়ের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তৃতীয়বার এমন কোনো অভিজ্ঞতার সন্মুখীন হওয়ার কথা তিনি কল্পনা করেন কি না? হাসতে হাসতে এই ফুটবল কোচ বলেছেন, ‘বলা কঠিন। কী হবে তা তো আমরা জানি না। কিন্তু আশা করছি আজ রাতে আবারও বাসার ছাদে উঠতে হবে না।’