বার্সেলোনার নৈশ ক্লাবে এক তরুণীকে ধর্ষণ করার দায়ে ব্রাজিল ও বার্সেলোনার সাবেক ডিফেন্ডার দানি আলভেজকে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন স্পেনের একটি আদালত। ১৪ মাস কারাভোগের পর গত মাসে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন তিনি। তবে সেটি সম্ভব হয়েছে ১০ লাখ ইউরো মুচলেকা দেওয়ার পরই। বিচারপ্রক্রিয়ায় দানি আলভেজের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সাবেক সতীর্থ নেইমারের বাবা। খবরে প্রকাশ, নেইমারের বাবার কাছ থেকে নেওয়া অর্থ জামিন পাওয়ার পরপরই নাকি পরিশোধ করে দিয়েছেন সাবেক ব্রাজিল তারকা।
বিচারপ্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত আলভেজের পাশে ছিলেন নেইমারের বাবা। তবে সেটি রায় ঘোষণার আগপর্যন্ত। রায়ে আলভেজ দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর তিনি সরে দাঁড়ান। রীতিমতো বিবৃতি দিয়েই সরে দাঁড়িয়েছিলেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, আলভেজ বিচারকাজ চলার সময় নেইমারের বাবার কাছ থেকে নেওয়া দেড় লাখ ইউরো শোধ করে দিয়েছেন। আলভেজের আইনজীবী ইনেস গার্দিওলা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, যে মানুষটি টাকার অভাবে বিচারকাজ চালাতে ধার নিয়েছিলেন, জামিনের ১০ লাখ ইউরো জোগাড় করতে কয়েক দিন সময় লেগেছে, তিনি হঠাৎ এত অর্থ কোথায় পেলেন? ফ্রান্সের ক্রীড়া দৈনিক এল পাইস বলছে, জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর ব্রাজিলের একটি বিখ্যাত সাময়িকীর সঙ্গে নাকি আলভেজের বড় অঙ্কের চুক্তি হয়েছে। নিজের জীবনের নানা কাহিনি লেখার বিনিময়ে এই টাকা অগ্রিম মিলেছে তাঁর। ব্রাজিল, বার্সেলোনা ও পিসএজির সাবেক এই তারকা নাকি এভাবেই নেইমারের বাবার কাছ থেকে নেওয়া ধার শোধ করেছেন।
এদিকে ছাড়া পাওয়ার পর বার্সেলোনায় নিজের বাড়িতে বড় করে পার্টিও নাকি আয়োজন করেছিলেন আলভেজ। যদিও বিভিন্ন শর্তে তাঁর জামিন হয়েছে। আছে নানা বিধিনিষেধও। তাঁকে ব্রাজিল আর স্পেন—দুই দেশেরই পাসপোর্ট জমা দিতে হয়েছে। ভুক্তভোগীর আশপাশে যাওয়ার ব্যাপারেও আছে নিষেধাজ্ঞা। কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বার্সেলোনায় অবস্থানের ব্যাপারে। চার বছরের রায়ের বিরুদ্ধে আলভেজ ও সরকারপক্ষ আপিল করেছে। আলভেজ নির্দোষ দাবি করে মুক্তি চেয়েছেন আর সরকার সাড়ে ৪ বছর কম হয়েছে উল্লেখ করে ৯ বছরের সাজা চেয়েছে। আপিল নিষ্পত্তি হওয়ার আগপর্যন্ত আলভেজ স্পেন ত্যাগ করতে পারবেন না।
দুই দশকের বেশি সময়ের ফুটবল ক্যারিয়ারে সাফল্যের শিখর স্পর্শ করেছিলেন আলভেজ। ব্রাজিল, বার্সেলোনা, জুভেন্টাস ও পিএসজির হয়ে ৪৩টি শিরোপা জিতেছেন এই ফুটবলার। ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপেও ব্রাজিলের স্কোয়াডে ছিলেন তিনি। তবে বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই বার্সেলোনায় ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে আলভেজের বিরুদ্ধে। শুরুতে অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেন আলভেজ। ধর্ষণ মামলায় আটক হওয়ার সময় আলভেজ মেক্সিকান ক্লাব পুমাসের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন। পুমাস অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে চুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেয়। এরপর কারাগারে থাকা অবস্থায় তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদ ঘটান স্ত্রী হোয়ানা সাঞ্জ।