‘ছোট পাখি’র ডানায় ফুটল সুন্দর ফুটবল

ফুটবল এমন এক খেলা, যেখানে গোল হওয়া না হওয়ার আনন্দ-বেদনার সঙ্গে জটিলতম সব ফরমেশন ও কৌশলের মজা পাওয়া যায়। যে যার জায়গা থেকে খেলাটাকে উপভোগ করতে পারার এই দুর্দান্ত সর্বজনীনতা খেলাটাকে দুনিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় ইভেন্টে পরিণত করেছে। আর নিঃসন্দেহে ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর হলো বিশ্বকাপ ফুটবল। চার বছর পরপর হওয়া এই টুর্নামেন্টের সময় গোটা পৃথিবীর নজর থাকে কে জিতল, কে হারল। খেলাটির সব রকম মানবীয় আবেগকে ধারণ করার যে ক্ষমতা, এ কারণে বিশ্বকাপ ফুটবল শুধু হার-জিতের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এই ইতিহাস তো মানুষেরই ইতিহাস। কাতারে আর কিছুদিন পরই শুরু হবে বিশ্বকাপের ২২তম আসর। তার আগে ফিরে তাকিয়ে ১৯৬২ বিশ্বকাপের গল্প শোনা যাক।

ঢাকার রাজপথ সে বছর খুব উত্তপ্ত। এ অঞ্চলের দরিদ্র মানুষেরা ব্রিটিশদের তাড়িয়ে দিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু তাঁদের প্রতি বঞ্চনা কমেনি। জোটেনি স্বাধীনতাও। নানা অধিকার থেকে বঞ্চিত মানুষগুলো আন্দোলনে রাজপথে ছিল। শিক্ষা আন্দোলন করতে গিয়ে ঢাকার রাজপথে প্রাণ দেন ছাত্র-শিক্ষক-জনতা। সেই আন্দোলনে বাবুল নামের এক কাজের ছেলেও অকাতরে প্রাণ দিয়েছিলেন।

স্বাধীনতা অর্জনের পর বাবুলদের কেউ মনে রাখেনি। যাঁরা বাবুল হয়ে জন্মাচ্ছেন, তাঁরাও পিষ্ট হচ্ছেন আগের মতোই। শুধু এই দেশ কেন, ঢাকা থেকে মাত্র কয়েক শ কিলোমিটার দূরে রোহিঙ্গাদের দেশ, শরৎচন্দ্রের একসময়কার কর্মস্থল মিয়ানমারেও সে বছর (১৯৬২) ক্ষমতা আত্মসাৎ করে সামরিক জান্তা, যা আজ অবধি বহাল।

গোটা দুনিয়ার হালই তখন খারাপ। যুক্তরাষ্ট্র ও সাবেক সোভিয়েতের শীতল যুদ্ধের উত্তেজনা চরমে। প্রতিবছরই সন্দেহ হচ্ছিল, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে গেল বলে! তবে ১৯৬২ সালে দুনিয়া প্রায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তেই চলে গিয়েছিল। কিউবার ‘বে অব পিগস’ দখল করার চেষ্টায় যুক্তরাষ্ট্র ব্যর্থ হলেও সমাজতান্ত্রিক দেশটায় রাজনৈতিক বদলের চেষ্টা তারা চালিয়েই যেতে থাকে। এর জবাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে পাওয়া প্রাণঘাতী অস্ত্রও ছুড়তে উদ্যত হয়েছিল কিউবা।

১৯৬২ সালে বিশ্বকাপ জেতা ব্রাজিল দল

শেষ পর্যন্ত তেমন কিছু আর ঘটেনি। বরং সে বছর মানুষ মনে রেখেছে এক দারুণ আয়োজনের কথা। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলিতে ১৯৬২ বিশ্বকাপ। সেখানে দুর্দান্ত ব্রাজিল দল আগেরবার জেতা বিশ্বকাপ নিজেদের দখলে রেখে দেওয়ার লড়াইয়ে নেমেছিল, সাফল্যও পায়। ‘জোগো বনিতো’য় মুগ্ধ বিশ্ব দেখে টালমাটাল ষাটের দশকে সাম্বা আর ফুটবলের অনন্য যুগলবন্দী।

টানা দুবার ইউরোপে আয়োজিত হওয়ার পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ–পরবর্তী সময়ে মাত্র দ্বিতীয়বার লাতিন আমেরিকায় অনুষ্ঠিত আসরটি নিয়ে চিলিয়ানরা বেশ কয়েক বছর ধরে উত্তেজিত থাকলেও ১৯৬০ সালে সে দেশে ঘটে এক বিরাট ট্র্যাজেডি। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ভালভাডিয়া ভূমিকম্পে ৫০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে আর বাস্তুহারা হন প্রায় ২০ লাখ লোক। স্বাভাবিকভাবেই টুর্নামেন্ট নিয়ে আগ্রহ কমে যায়, সরকারও খরচ কমিয়ে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ব্যয় করার সিদ্ধান্ত নেয়।

আর টুর্নামেন্ট শুরুর পর চোটে পড়ে সমর্থকদের হতাশ করেন আলফ্রেডো ডি স্টেফানো। আর্জেন্টিনায় জন্ম নেওয়া এই কিংবদন্তিকে অনেকেই বলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়। এই জাদুকর টানা পাঁচবার ইউরোপ–সেরা বানান তাঁর ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদকে। সেবার ৩৬ বছর বয়সে তিনি স্পেনের হয়ে মাঠ মাতাতে চাইলেও ডান পায়ের চোটে ছিটকে যান। দুর্ভাগ্য ফুটবলামোদীদের।

‘ছোট পাখি’ খ্যাতি গারিঞ্চা

বলা হতো, ডি স্টেফানোর জুতা জোড়ায় নাকি গোটা ফুটবল মাঠই এঁটে যেত। স্টেফানোর বুট থেকে নাকি কুঁড়ি থেকে ফুল ফুটত! আর মাঠের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে অবিশ্রান্ত দৌড়ে যেতেন ‘সাদা তির’ নামে পরিচিত এই খেলোয়াড়টি। পায়ে বল আসার পর স্থান আর গতি পরিবর্তন করতেন। আগের মুহূর্তে অলস কচ্ছপ হয়ে থাকা পা জোড়ায় যেন ‘সাইক্লোন’ ভর করত। আর মার্কারকে এড়িয়ে ফাঁকা জায়গায় বল পাওয়াটা তার জন্য ছিল একেবারেই ছেলেখেলা।

তিনি যখন আক্রমণে যেতেন, তখন দর্শকেরা যেন চেঙ্গিস খানের বাহিনীর ঘোড়াগুলোর অদম্য গতি আর ধূলিঝড়ের পুনরাবৃত্তি দেখতেন! আর তাঁর গোলগুলো ছিল নাকি রংধনুর মতো। লাল, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল মিলিয়ে সব যেন ‘বেনীআসহকলা’ গোল!

ডি স্টেফানোকে নিয়ে দর্শকেরা কবিতা বেঁধেছেন—
‘ওই দেখো আসছে
ছুটে আসা তির
নাহ্‌! ছুটে আসা তিরও
ওর চেয়ে ঢের ধীর!’

খেলা শেষে ডি স্টেফানো নিজ পায়ে হেঁটে মাঠ ছাড়তে পারতেন খুব কমই। মনোমুগ্ধ দর্শকদের কাঁধই ছিল তাঁর খেলা শেষের ঠিকানা।

স্পেন দলটাতে সেবার শুধু স্টেফানোই নন, ছিলেন হাঙ্গেরিতে জন্ম নেওয়া ফেরেঙ্ক পুসকাসও। সেই ম্যাজিক্যাল ম্যাগিয়ার্সদের নেতা! হাঙ্গেরিতে অশান্তি শুরুর পর স্পেনে ঠাঁই নেওয়া স্টেফানোর সমবয়সী পুসকাসও খেলতে চাইলেন স্পেনের হয়ে, কিন্তু তেমন কিছুই করে উঠতে পারলেন না।

এই দলের কোচও ছিলেন একজন আর্জেন্টাইন—অনেকের মতেই সর্বকালের সেরা কোচ হেলেনিও হেরেইরা। অথচ তা–ও স্পেন পেলেবিহীন ব্রাজিলের কাছে ২-১ গোলে হেরে গ্রুপ থেকেই বিদায় নিল। প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর সঙ্গে ২-০ গোলে জেতা ম্যাচে ১টি গোল দিলেও যুগোস্লাভিয়ার সঙ্গে পরের ম্যাচে চোট পান পেলে। আমারিলদো তাঁর জায়গায় এসে স্পেনকে ২ গোল দিয়ে দলকে পরের রাউন্ডে তুলে দেন।

এ তো গেল গ্রুপ ‘সি’র কথা। ৩০ মে থেকে ১৭ জুন পর্যন্ত চলা সেবারের টুর্নামেন্টেও আগেরবারের মতোই ১৬টি দল বিভক্ত হয়ে চার গ্রুপে খেলল। স্বাগতিক চিলি আর চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল ছাড়াও লাতিন আমেরিকার আরও ৩টি দেশ আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া আর উরুগুয়ে; কনক্যাকাফের মেক্সিকো আর বাকি ১০টা দেশ এসেছে ইউরোপ থেকে।

গ্রুপ ‘এ’তে সোশ্যালিস্টদের জয়জয়কারের মাঝে সোভিয়েত ইউনিয়ন আর যুগোস্লাভিয়া, দুই লাতিন দেশ উরুগুয়ে আর কলম্বিয়াকে পেছনে ফেলে কোয়ার্টারে উঠল। গ্রুপ ‘ডি’ থেকে কোয়ালিফাই করল হাঙ্গেরি আর ইংল্যান্ড। আর সেখানে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে বাদ পড়ল আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচটি বিখ্যাত হয়ে থাকবে ববি চার্লটনের কারণে।

ম্যাচের ৪২ মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে দুর্দান্ত এক দৌড়ে আর্জেন্টিনার ডিফেন্সকে চার্লটন তছনছ করে দেন, আর শেষ মুহূর্তে বাঁ থেকে ডান পায়ে বলটা নিয়ে গোলকিপারের পাশ দিয়ে দুর্দান্ত এক গোল করেন। অথচ এমন একটা গোল দেওয়ার পর চার্লটন আনমনা হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলেন।

কে জানে, হয়তো কাঁদছিলেনও! তাঁর তো বেঁচেই থাকার কথা ছিল না, খনিমজুরের পুত্র ববি চার বছর আগে সেই অভিশপ্ত বিমানের যাত্রী ছিলেন, মিউনিখের পথে থাকা সেই বিমানে তাঁর দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ৮ জন খেলোয়াড়সহ মোট ২৩ জন মারা যান।

ফুটবলের ইতিহাসে চরম এই দুঃখজনক দিনটার কথা হয়তো মনে করছিলেন ‘বসবি বেবস’ নামে পরিচিত কোচ ম্যাট বসবির দলের সেরা খেলোয়াড় ববি। চার্লটনের এই অলৌকিক বেঁচে যাওয়ার চূড়ান্ত ফল জানা যাবে আরও চার বছর পর (মানে পরের পর্বে)। আপাতত আরেকটি গ্রুপ, গ্রুপ ‘বি’তে ফিরে যাওয়া যাক।

ব্রাজিলের আরেকটি বিশ্বকাপ জয়

সান্তিয়াগোর এস্তাদিও ন্যাসিওনালে ২ জুন স্বাগতিক চিলি বনাম ইতালির ম্যাচটি এতটা জঘন্য রূপ নিল যে সেই খেলাটাকে আখ্যা দেওয়া হয় ‘ব্যাটল অব সান্তিয়াগো’ নামে।
ভূমিকম্পের পরও চিলিকে আয়োজক রাখায় ইতালির পত্রপত্রিকায় ফিফাকে যাচ্ছে না তাই গালমন্দ করা হয়। এরপর খেলা শুরু হলে ইতালির সাংবাদিকেরা চিলির দারিদ্র্য এবং অব্যবস্থাপনা নিয়ে কটাক্ষ করে লিখেছেন। এর প্রভাব পড়ে খেলার দিন। ব্রিটিশ রেফারি কেন এস্টন দুজন ইতালিয়ান খেলোয়াড়কে বহিষ্কার করেন।

গন্ডগোল থামাতে পুলিশকে চারবার মাঠে আসতে হয়। শেষতক চিলি ২-০ গোলে জেতে আর পশ্চিম জার্মানির সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। পরের ম্যাচে সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে জিতে সেমিতেও উঠে যায় চিলি। চেকরা হারায় হাঙ্গেরিকে, দুর্দান্ত ব্রাজিলের কাছে হারে ইংল্যান্ড আর যুগোস্লাভিয়া হারায় পশ্চিম জার্মানিকে।

ব্রাজিলের খেলায় অদ্ভুত সুন্দর দ্যুতি ছড়ান গারিঞ্চা বা ‘ছোট পাখি’। একদঙ্গল ভাইয়ের মধ্যে একজন তাঁর নাম দিয়েছিলেন গারিঞ্চা। কুৎসিত, অকর্মা হলেও ব্রাজিলের ছোট একটি পাখির নামে তাঁর নাম রাখা হয়েছিল। কিন্তু এই গারিঞ্চা বিশ্বের কাছে ক্ষুধা ও পোলিওকে ফুটবল দিয়ে জয়ের প্রতীকও।

সদ্যোজাতের মস্তিষ্ক, ইংরেজি ‘এস’ অক্ষরের মতো মেরুদণ্ড আর একই দিকে বাঁকানো দুটি পা নিয়ে জন্ম নিয়েছিলেন গারিঞ্চা। তাঁর ফুটবল খেলা ছিল যেন শুধু বেঁচে থাকতে। কারণ, চিবিৎসকেরা বলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের শুরুর দিকেই গলায় একটা ‘ক্রুশ’ ঝুলিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, গারিঞ্চার পক্ষে কখনো অ্যাথলেট হওয়া সম্ভব হবে না।

কিন্তু ফুটবলের হাজার বছরের ইতিহাসে তাঁর মতো রাইট উইঙ্গার আর ছিল না। ১৯৫৮-এর বিশ্বকাপে তিনি নিজের পজিশনে শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড়। ১৯৬২-এর পুরো চ্যাম্পিয়নশিপে আগাগোড়াই সেরা খেলোয়াড়। এ তো গেল পুরস্কারের কথা। মাঠে তাঁর খেলা ছিল খেলার চেয়েও বেশি কিছু। কখনো কখনো সার্কাস! ফুটবলের ইতিহাসে সম্ভবত আর কোনো খেলোয়াড় দর্শকদের এতটা আনন্দ দিতে পারেননি।

গারিঞ্চা যখন খেলতে নামতেন, মাঠ হয়ে উঠত যেন সার্কাসের একটা রিং, বলও পোষ মেনে নিত, খেলাটা যেন আনন্দ-উৎসবের উদার আমন্ত্রণ। ছোট্ট শিশু যেমন সর্বক্ষণ নিজের পোষা জন্তুকে আগলে রাখে, গারিঞ্চাও তেমনি কখনো বলকে দূরে সরতে দিতেন না। দুজন মিলে দারুণ সব ভেলকি দেখিয়ে দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখতেন। একবার বলের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন তো কখনো বল তাঁর কোলে।

তাঁকে থামাতে গিয়ে বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়েরা একজন আরেকজনের সঙ্গে খান বেদম ধাক্কা, পায়ে পা জড়িয়ে উল্টে না পড়া পর্যন্ত। গারিঞ্চা এসব দুষ্টু ভেলকি দেখাতেন মাঠের ডান দিক ঘেঁষে, মাঝমাঠ থেকে দূরে। জীর্ণ শহরতলিতে বেড়ে ওঠা গারিঞ্চা মাঝমাঠ থেকে দূরেই খেলতে পছন্দ করতেন। তাঁর ক্লাবের নাম ছিল ‘বোতোফোগা’, মানে ‘অগ্নিপ্রজ্বালক’। বোতোফোগার মতোই গারিঞ্চা আগুনে প্রতিভায় একাকার করে উন্মাদনায় জ্বালিয়ে দিতেন ভক্তদের।

৬২ বিশ্বকাপের দূরন্ত ব্রাজিল

গারিঞ্চাই সেইজন, যিনি দূরের এক গলি থেকে ডাকতে থাকা বলের ডাকে সাড়া দিয়ে ট্রেনিং ক্যাম্পের জানালা ডিঙিয়ে বেরিয়ে যেতেন; বলের সেই ডাক যেন নৃত্যে আহ্বান করা সংগীত, চুম্বনে আহ্বান করা রমণী। সেই গারিঞ্চাই সেমিফাইনালে ৭৬ হাজার দর্শকের সামনে আরও ২ গোল দিয়ে হারান চিলিকে, যদিও সঙ্গে কার্ডও পান, সুতরাং ফাইনালে বহিষ্কৃত।

ফাইনালে সাবেক চেকোস্লোভাকিয়ার বিপক্ষে দুর্দান্ত ব্রাজিলের তবু খুব বেশি কষ্ট হয়নি। পেলের পরে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় গারিঞ্চার অভাব পূরণ করে, প্রথমে ১ গোলে পিছিয়ে থেকেও আমারিলদো, জিটো আর ভাভার গোলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ট্রফি জেতে সুন্দর ফুটবল খেলা ব্রাজিল। দ্বিতীয়বারের মতো হয় অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন।

গারিঞ্চা বিজয়ী? মাঠে হতে পারে, তবে মুদ্রার উল্টা পিঠে এই লোকটি অবিশ্বাস্য ভাগ্যের এক পরাজিতের ছবি। মাঠের বাইরের খেলায় চরমভাবে হেরে গিয়েছিলেন। গারিঞ্চা তাই শত আনন্দ দিলেও তাঁর মৃত্যু ছিল অনুমেয়: দরিদ্র, মাতাল ও নিঃসঙ্গের মৃত্যু। ব্রাজিল তাঁকে ভোলেনি, মারাকানার পুরোনো স্টেডিয়ামের অ্যাওয়ে দলের ড্রেসিংরুমের নাম তিনবার বিশ্বকাপ জেতানো পেলের নামে। আর স্বাগতিক দলের ড্রেসিংরুমের নাম ‘গারিঞ্চা’!

ব্রাজিলিয়ানরা তাহলে কাকে বেশি ভালোবাসেন? পেলে না গারিঞ্চাকে?