দলগত অর্জনে সম্ভাব্য সবই জিতেছেন। ব্যক্তিগত অর্জনেও গুরুত্বপূর্ণ কিছু বাদ নেই। রেকর্ডসংখ্যক ব্যালন ডি অ’র, আর টুর্নামেন্ট-সেরার স্বীকৃতি লিওনেল মেসির ঝুলিতে।
খেলেছেন কিন্তু জিততে পারেননি, এমন টুর্নামেন্টের মধ্যে বাকি আছে শুধু ফ্রেঞ্চ কাপ। চলতি বছর এরই মধ্যে যা জেতার আশা শেষ, এই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েছে পিএসজি। মেসিকে অপেক্ষা করতে হবে আগামী বছর পর্যন্ত।
মেসির এমন অপেক্ষা আছে কিছু ব্যক্তিগত মাইলফলকেও। ৩৫ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন তারকার সামনে যেসব মাইলফলক হাতছানি দিচ্ছে, ইএসপিএনের পরিসংখ্যানে তা দেখে নেওয়া যাক।
ক্লাব ক্যারিয়ারে মূল দলের হয়ে মেসির ম্যাচের সংখ্যা এখন ৮৭১। ৯০০ ম্যাচের মাইলফলকে পৌঁছাতে দরকার আরও ২৯ ম্যাচ। ২০২২-২৩ মৌসুমে অবশ্য মাইলফলকটি স্পর্শ করা হবে না। অপেক্ষা করতে হবে ২০২৩-২৪ মৌসুমের শুরুর দিক পর্যন্ত। সেদিন মেসি কোন ক্লাবে থাকেন, আপাতত অনিশ্চিত। এখনো পিএসজির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন হয়নি তাঁর।
এই রেকর্ডের খুব কাছে পৌঁছে গেছেন মেসি। ১৯ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ারে তাঁর গোলসংখ্যা এ মুহূর্তে ৭৯৭। পর্তুগালের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো গোলসংখ্যার এই মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন ২০২১ সালে ডিসেম্বরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জার্সিতে আর্সেনালের বিপক্ষে।
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফুটবল হিস্ট্রি অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিকসের (আইএফএফএইচএস) হিসাব অনুসারে এ মুহূর্তে ৮২৪ গোল নিয়ে গোলসংখ্যার বিশ্বরেকর্ডটি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর। দ্বিতীয় স্থানে মেসি। তবে অন্যান্য অনেক সূত্রের সঙ্গে সংখ্যাটি সাংঘর্ষিক।
বিশেষ করে ‘অফিশিয়াল’ প্রতিযোগিতায় ‘অফিশিয়াল’ গোল শ্রেণিতে নথিভুক্তের বিষয়টি আগে ধারাবাহিক ছিল না বলা হয়। যেমন পেলের ক্যারিয়ারে গোলসংখ্যা এক হাজারের বেশি বলা হয়। আবার সব কটি অফিশিয়াল ম্যাচ ছিল না বলে অনেকে এটিকে বাতিলও করে দেন।
পেনাল্টি ছাড়া মেসির গোল এখন ৬৮৯টি। পেনাল্টিতে মেসির দুর্বলতার কথা বলে থাকেন অনেকে। ক্যারিয়ারের শুরুর বেশ কয়েকটি মিস করেছিলেনও। তবে এখন পর্যন্ত তিনি ১২ গজ দূর থেকে বল জালে জড়িয়েছেন ১০৮ বার।
এ রেকর্ড হয়তো ২০২৪ সালের প্রথম দিকেই হয়ে যাবে। ২০০৪ সালে সিনিয়র দলে খেলা শুরুর পর টানা ১৯ বছর ন্যূনতম একটি করে হলেও গোল করেছেন মেসি। এ রেকর্ডে আর্জেন্টাইন তারকার চেয়ে এগিয়ে রোনালদো। ২০০৩ সালে পেশাদার ফুটবলে পা রাখা পর্তুগিজ তারকা এখন টানা ২২ বছরে গোল করা খেলোয়াড়।
মাত্র এক গোল দূরে দাঁড়িয়ে মেসি। বার্সেলোনার হয়ে ৬৭২ গোলের পর পিএসজির হয়ে করেছেন ২৭ গোল। গত অক্টোবরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলা সর্বশেষ ম্যাচে ৭০০ ক্লাব গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন রোনালদো।
গোল করার পাশাপাশি গোল করানোতেও পারদর্শী মেসি। এখন পর্যন্ত ক্লাব ক্যারিয়ারে ২৯৪টি গোলে সহায়তা করেছেন তিনি। চলতি মৌসুমেই হয়তো ৩০০ গোলে সহায়তার মাইলফলক স্পর্শ করে ফেলতে পারবেন।
গোল করা ও করানো মিলিয়ে ক্লাব ক্যারিয়ারে মেসির গোল অবদান এখন ৯৯৩। আর সাত গোল হলেই যা চার অঙ্ক স্পর্শ করবে।
দুই সপ্তাহ আগে ক্লাব ফুটবলের লিগ পর্যায়ে ৫০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন রোনালদো। মেসিও খুব বেশি দূরে নেই। আর মাত্র ৯ গোল হলে ৫০০ গোলের ক্লাবে ঢুকে যাবেন মেসি।
ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়নস লিগের নকআউটে মেসির গোল ৪৯টি। ৫০ পূর্ণ করতে দরকার আর মাত্র এক গোল। নকআউট পর্বের গোলে অনেকখানি এগিয়ে আছেন রোনালদো। শেষ ষোলো থেকে ফাইনাল পর্যন্ত ৮০ ম্যাচ খেলে মোট ৬৭ গোল পর্তুগিজ তারকার।
এরই মধ্যে আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ (১৭২) ও সবচেয়ে বেশি গোলের (৯৮) মালিক হয়ে গেছেন মেসি। অপেক্ষা এখন প্রথম আর্জেন্টাইন হিসেবে ১০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করা। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ১৯৬ ম্যাচে ১১৮ গোল নিয়ে সবার ওপরে এখন রোনালদো।