ইংল্যান্ড নারী দলের ফুটবলার লুসি ব্রোঞ্জকে জাপটে ধরে চুমু খান লুইস রুবিয়ালেস
ইংল্যান্ড নারী দলের ফুটবলার লুসি ব্রোঞ্জকে জাপটে ধরে চুমু খান লুইস রুবিয়ালেস

ইংল্যান্ডের নারী ফুটবলারকেও জোর করে চুমু খেয়েছিলেন রুবিয়ালেস

ফিফা নারী বিশ্বকাপ ফাইনালের পর পদকমঞ্চে স্পেনের খেলোয়াড় হেনি হেরমোসোর ঠোঁটে চুমু খেয়ে নিষিদ্ধ হওয়া লুইস রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে আরেকটি বড় ধরনের অভিযোগ উঠেছে। সেদিন শুধু হেরমোসোকেই নয়; ইংলিশ ডিফেন্ডার লুসি ব্রোঞ্জকেও জোরপূর্বক চুমু খেয়েছিলেন রুবিয়ালেস। এ ছাড়া দলটির মিডফিল্ডার লরা কোম্বসের গালও জোরপূর্বক স্পর্শ করেছিলেন।

হেরমোসোকে চুমু খেয়ে স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) সভাপতির পদ হারানো রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে গুরুতর এই অভিযোগ করেছেন ইংল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান (এফএ) ডেবি হিউইট। পদকমঞ্চে রুবিয়ালেসের পাশেই ছিলেন হিউইট। তাঁর কাছে ওই দিন রুবিয়ালেসের আচরণ অস্বস্তিকর মনে হয়েছে বলে ফিফা শৃঙ্খলা কমিটির শুনানিতে জানিয়েছেন।

গত ২০ আগস্ট সিডনি অলিম্পিক স্টেডিয়ামে নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবার শিরোপা জেতে স্পেন। এরপর পদকমঞ্চে স্পেনের রানি লেতিজিয়া, রাজকুমারী সোফিয়া, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ, ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো, এফএ চেয়ারম্যান ডেবি হিউইটসহ আরও কয়েকজন সম্মানীয় ব্যক্তির সামনেই চুমুকাণ্ডের জন্ম দেন রুবিয়ালেস।

পদকমঞ্চে লুইস রুবিয়ালেসের পাশেই ছিলেন এফএ প্রধান ডেবি হিউইট

এ ঘটনায় স্পেনের ফুটবল অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে পড়লে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সর্বমহল থেকে আসা চাপের পর গত ১১ সেপ্টেম্বর তিনি পদত্যাগ করেন। আর গত ৩০ অক্টোবর ফিফা তাঁকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফুটবল-সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম থেকে ৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয়।

ফিফা কেন রুবিয়ালেসকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটিই সংস্থাটির পরিচালনা পর্ষদের শৃঙ্খলা কমিটি গতকাল লিখিত আকারে বিশদভাবে প্রকাশ করেছে। সেখানেই উঠে এসেছে পদকমঞ্চে আরও একাধিক নারী ফুটবলারের সঙ্গে আপত্তিকর আচরণ করেছেন রুবিয়ালেস। তাঁকে আরও কঠিন সাজা দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত ৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের শুনানিতে সাক্ষ্য দিতে গিয়েছিলেন এফএ সভাপতি হিউইট। কারণ, পদকমঞ্চে তিনিই রুবিয়ালেসের সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হিউইট ফিফার শৃঙ্খলা কমিটিকে বলেন, ‘রুবিয়ালেসের আচরণ ছিল অপ্রীতিকর, নিরর্থক ও আক্রমণাত্মক। বিশেষ করে তিনি যেভাবে লরা কোম্বসের গাল স্পর্শ করেছেন এবং লুসি ব্রোঞ্জের গালে জোরপূর্বক চুমু খেয়েছেন, সেটা অস্বাভাবিক লেগেছিল।’

হেনি হেরমোসোর ঠোঁটে চুমু দেওয়াই কাল হয়েছে লুইস রুবিয়ালেসের

রুবিয়ালেস স্প্যানিশ খেলোয়াড়দের যেভাবে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন, সেটাও হিউইটের কাছে বিব্রতকর লেগেছে বলে জানিয়েছে ফিফা। আর হেরমোসোর ঠোঁটে চুমু দিতে দেখে তিনি হতবাক হয়ে পড়েছিলেন।

তবে শুনানিতে রুবিয়ালেস তাঁর বিরুদ্ধে আনা হিউইটের অভিযোগগুলোকে মিথ্যা দাবি করে বলেন, ‘হিউইট অজ্ঞতা থেকে এ ধরনের কথা বলছেন। পুরো বিবৃতি এফএর চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর অবস্থানের ক্ষতি করবে।’ রুবিয়ালেসের দাবি ফিফা সঙ্গে সঙ্গে খারিজ করে দেয় এবং জানায়, হিউইটের পর্যবেক্ষণকে সন্দেহ করার কোনো কারণ নেই।

পদকমঞ্চে ইংল্যান্ডের আরেক নারী ফুটবলার লরা কোম্বসের গালও স্পর্শ করেন লুইস রুবিয়ালেস

ফিফা আরও জানিয়েছে, শুনানিতে ওঠা সব অভিযোগ রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে গেলেও তিনি তাঁর কর্মকাণ্ডের জন্য একবারও ক্ষমা চাননি। শুধু বলেছিলেন, ‘এটা করা উচিত হয়নি।’