২০২২ সালে বার্সেলোনার এক নৈশ ক্লাবে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে ব্রাজিলের সাবেক ফুলব্যাক দানি আলভেজের ৯ বছর কারাবাসের শাস্তি দাবি করেছেন স্পেনের কৌঁসুলিরা। গত জানুয়ারিতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই বার্সেলোনার জেলে আটক আছেন আলভেজ। বার্সা ও পিএসজির সাবেক এই খেলোয়াড়ের কাছে ভুক্তভোগীর জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার ইউরো ক্ষতিপূরণ দাবি করেন কৌঁসুলিরা। আলভেজের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রের একটি অনুলিপি দেখে আজ খবরটি জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
ব্রাজিলের হয়ে কোপা আমেরিকা ও কনফেডারেশনস কাপ জয়ী আলভেজের বিচারের দিন এখনো ধার্য হয়নি। ৪০ বছর বয়সী আলভেজের দাবি, মেয়েটির সম্মতির ভিত্তিতেই তাঁর সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটিয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর গত জুনে প্রথমবারের মতো একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন আলভেজ। স্পেনের ‘লান ভ্যানগার্ড’ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে আলভেজ বলেছিলেন, ‘সাটন নৈশ ক্লাবে সেদিন রাতে বাথরুমে যা ঘটেছিল তা নিয়ে আমি বিবেকের কাছে পরিষ্কার। যেটা ঘটেনি তা হলো, আমি সেই নারীর সঙ্গে জোর করে কিছু করেছি।’
তবে ধর্ষণের অভিযোগ প্রথম জানাজানি হওয়ার পর, গ্রেপ্তার হওয়ার আগে আলভেজ এক টিভি সাক্ষাৎকারে সেই নারীকে চেনার ব্যাপারটি অস্বীকার করেছিলেন। গত ২ জানুয়ারি আলভেজের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন সেই নারী। স্প্যানিশ টিভি চ্যানেল ‘অ্যান্টেনা থ্রি’কে আলভেজ সেই সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘কাউকে বিরক্ত না করেই আমি নাচছিলাম এবং ভালোই লাগছিল। জানি না সে কে ছিল? একজন নারীর সঙ্গে আমি এটা কীভাবে করতে পারি।’
আলভেজ এরপর ‘লা ভ্যানগার্ড’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, সেই নারীকে না চেনার বিষয়ে তিনি মিথ্যা বলেছিলেন। কারণ, তিনি ভেবেছিলেন, স্ত্রী জানতে পারলে তাঁকে ছেড়ে চলে যাবেন। সাটন নৈশক্লাবে সেদিন যা যা ঘটেছিল তা নিয়ে অভিযোগপত্রে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন কৌঁসুলিরা। তাঁদের ভাষ্য অনুযায়ী, নৈশক্লাবে সেই নারীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর তাঁকে ছোট্ট একটি কক্ষে নিয়ে যান আলভেজ। সেই নারী দাবি করেছিলেন, তিনি জানতেন না ওটা টয়লেট ছিল।
কক্ষের ভেতরে ঢোকার পর থেকেই আলভেজের আচরণ ‘আক্রমণাত্মক’ হয়ে ওঠে। ওই নারী বাধা দিলেও জোর করেই তাঁর সঙ্গে অন্তরঙ্গ সময় কাটিয়েছেন বলে দাবি করা হয় অভিযোগপত্রে। গত বছর এ নিয়ে পাস হওয়া স্পেনের আইন অনুযায়ী, অনলাইনে যৌন নির্যাতন থেকে ধর্ষণ—এসব অপরাধের জন্য আলাদা শাস্তির বিধান রয়েছে। ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১৫ বছরের কারাবাসের শাস্তিও হতে পারে।
সেই ঘটনার সময় বার্সেলোনায় ছুটি কাটাচ্ছিলেন আলভেজ। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ম্যাক্সিকান ক্লাব পুমা ইউএনএএম। চ্যাম্পিয়নস লিগসহ ক্লাব ক্যারিয়ারে ৪২টি শিরোপা জিতেছেন বার্সার সাবেক এই ফুটবলার। কাতার বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সবচেয়ে বয়স্ক খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে মাঠে নামার রেকর্ডও গড়েন আলভেজ।