গত বছর লিভারপুলকে হারিয়ে ১৪তম চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতে রিয়াল মাদ্রিদ
গত বছর লিভারপুলকে হারিয়ে ১৪তম চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতে রিয়াল মাদ্রিদ

চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে এক মৌসুমে ১ হাজার ৫৬৭ কোটি টাকা আয় করে শীর্ষে রিয়াল

উয়েফা আয়োজিত টুর্নামেন্ট থেকে গত মৌসুমে সবচেয়ে বেশি প্রাইজমানি আয় করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। কাল ক্লাবগুলোর আয়ের এই তালিকা প্রকাশ করেছে ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক এই সংস্থা।

২০২১–২২ মৌসুমে সর্বোচ্চ ১৩ কোটি ৩৭ লাখ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ হাজার ৫৬৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা) আয় করেছে রিয়াল মাদ্রিদ। চ্যাম্পিয়নস লিগ, ইউরোপা লিগ ও কনফারেন্স লিগে অংশ নেওয়া ক্লাবগুলোর আয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে উয়েফা। মোট ২০০ কোটি ইউরো প্রাইজমানি থেকে ক্লাবগুলোকে অর্থ বণ্টন করা হয়েছে।

ক্লাবগুলোর এই আয় হিসাব করা হয়েছে কিছু অনুমিতি মেনে। গ্রুপ পর্বের আয়, জয়ের বোনাস, সম্প্রচারস্বত্বের ভাগ এবং উয়েফার টুর্নামেন্টে অতীত ফলের ওপর নির্ভর করে অতিরিক্ত যে অর্থ দেওয়া হয়, সেসব হিসাব করেই এই আয়ের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সে হিসাবে বড় ক্লাব ও ছোট ক্লাবগুলোর আয়ে তারতম্য হবে। কারণ, উয়েফা আয়োজিত টুর্নামেন্টে অতীত পারফরম্যান্স দেখে যে অর্থ দেওয়া হয়, তাতে বড় দলগুলোর আয় বেশি হবে।

যেমন ধরুন, এবার চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা নাপোলির ইউরোপে অতীত পারফরম্যান্স বিবেচনা করলে ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়ালের ধারেকাছেও থাকবে না। এখন এই নাপোলিই যদি চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে নেয়, তাহলে এই টুর্নামেন্ট থেকে মোট আয়ে রিয়ালের চেয়ে পিছিয়ে থাকবে। উয়েফা আয়োজিত টুর্নামেন্টের অন্যান্য ‘মৌলিক’ আয় রিয়ালের সমানই হবে কিন্তু অতীত পারফরম্যান্স থেকে আয়ে পিছিয়ে থাকবে।

গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে অংশ নেওয়ার জন্য ১ কোটি ৫৬ লাখ ইউরো পেয়েছে রিয়াল। উয়েফার ক্লাবগুলোর একটি র‍্যাঙ্কিং তালিকা আছে, যেটাকে ‘কো-এফিশিয়েন্ট’ বলা হয়, সেখানে এ মৌসুমে পঞ্চম স্থানে আছে রিয়াল। গত মৌসুমে ছিল চতুর্থ অবস্থানে। ‘কো-এফিশিয়েন্ট’ তালিকা অবস্থানের তারতম্যের ওপর এই খাতে উয়েফার দেওয়া প্রাইজমানির অঙ্ক নির্ভর করে। রিয়াল গত মৌসুমে এখান থেকে পেয়েছে ৩ কোটি ৬৩ লাখ ইউরো। আর ‘মার্কেট পুল’ থেকে পেয়েছে ১ কোটি ৪৩ লাখ পাউন্ড।

মার্কেট পুল বিষয়টি ব্যাখ্যার দাবি রাখে। ইউরোপে যেসব দেশ থেকে ক্লাবগুলো উয়েফার টুর্নামেন্টে অংশ নেয়, সেসব দেশকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে থাকে উয়েফা। এই টাকার অঙ্ক নির্ধারিত থাকে। প্রতিটি দেশের ফেডারেশন সেই টাকা উয়েফার টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া নিজেদের ক্লাবগুলোর মধ্যে ভাগ করে দেয়।

গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোয় স্পেন থেকে শুধু রিয়ালই ছিল। এ কারণে ‘মার্কেট পুল’ খাতে বেশি আয় করেছে রিয়াল। স্পেন থেকে একাধিক ক্লাব থাকলে এই খাতে রিয়ালের আয় কমত। এর বাইরে গ্রুপ পর্ব থেকে রিয়াল আয় করেছে দেড় কোটি ইউরো।

শেষ ষোলো পেরোনো বাবদ পেয়েছে ৯৬ লাখ ইউরো, কোয়ার্টার ফাইনাল পেরোনোয় পেয়েছে ১ কোটি ৬ লাখ ইউরো এবং সেমিফাইনাল পেরোনোয় পেয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ ইউরো। আর ফাইনালে লিভারপুলকে হারানোয় পেয়েছে ২ কোটি ইউরো।

উয়েফার এই প্রাইজমানি টেবিলে রিয়ালের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয় লিভারপুলের। ১২ কোটি ইউরো আয় করেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটি। রিয়াল ও লিভারপুল ছাড়া আর দুটি ক্লাব ৯ অঙ্কের প্রাইজমানি আয় করতে পেরেছে—বায়ার্ন মিউনিখ ও ম্যানচেস্টার সিটি। গত মৌসুমে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে যাওয়া জার্মান ক্লাব বায়ার্নের আয় প্রায় ১১ কোটি ইউরো আর সেমিফাইনালে উঠলেও সিটি আয় করেছে বায়ার্নের চেয়ে কম—প্রায় ১০ কোটি ৯০ লাখ ইউরো। শেষ ষোলোয় রিয়ালের কাছে হেরে বিদায় নেওয়া পিএসজির আয় ৯ কোটি ২০ লাখ ইউরো।

উয়েফা জানিয়েছে, চ্যাম্পিয়নস লিগের গত মৌসুমে ৩২ দলের গ্রুপ পর্বে প্রতিটি দলকে গড়ে ৬ কোটি ১৮ লাখ ইউরো দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে কম অর্থ পেয়েছে মলদোভান ক্লাব শেরিফ তিরাসপোল। গত মৌসুমে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে আসা শেরিফ রিয়ালকে হারালেও আয় করেছে মাত্র ২ কোটি ৩৭ লাখ ইউরো।

চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়া বার্সেলোনা আয় করেছে ৬ কোটি ৪৬ লাখ ইউরো। সেখান থেকে ইউরোপা লিগে নেমে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল বার্সা। ইউরোপা লিগ থেকে আরও ৬৪ লাখ ইউরো আয় করেছে বার্সা।