গাভির কাছে এ যেন এক নতুন অভিজ্ঞতা। বার্সেলোনার হয়ে নিজের সর্বশেষ ম্যাচটি যখন খেলেছিলেন, তখন দলটির কোচিং স্টাফ ছিল আলাদা।
লিগামেন্টের চোট সেরে ৩৪৮ দিন পর কাল যখন মাঠে ফিরলেন, পেলেন হান্সি ফ্লিকের নেতৃত্বে নতুন কোচিং স্টাফ। পেলেন আরেকটি সম্মাননাও। ৮৩ মিনিটে বদলি হিসেবে খেলতে নামার আগে অধিনায়কত্বের বাহুবন্ধনী পরিয়ে দিলেন সতীর্থ পেদ্রি।
বার্সেলোনার অধিনায়ক হয়ে গাভির প্রত্যাবর্তনের রাতটা অবশ্য আগেই রাঙিয়ে রাখার আভাস দিয়ে রেখেছিলেন রবার্ট লেভানডফস্কি–লামিনে ইয়ামালরা। তিনি মাঠে নামার আগেই যে সেভিয়ার বিপক্ষে বার্সা ৪–০ গোলে এগিয়ে।
শেষ ৩ মিনিটে হয়েছে আরও ২টি গোল। ৮৭ মিনিটে সেভিয়ার স্তানিস ইদুম্বোর সান্ত্বনাসূচক গোলের পরের মিনিটেই বার্সার পাবলো তোরের গোল। তাতে সেভিয়াকে ৫–১ গোলে উড়িয়ে লা লিগায় শীর্ষেই থেকে গেল ফ্লিকের দল। একই সঙ্গে নিশ্চিত হলো রিয়াল মাদ্রিদের (১০ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট) চেয়ে এগিয়ে থেকেই আগামী শনিবার সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকো খেলতে নামছে বার্সা (১০ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট)।
নিজেদের মাঠ অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে কাল ম্যাচের শেষ গোলটির ৬ মিনিট আগে আরেক গোল করেন তোরে। জোড়া গোল করেন লেভানডফস্কিও। প্রথমটি ২৪ মিনিটে পেনাল্টি থেকে, পরেরটি রাফিনিয়ার বানিয়ে দেওয়া বল থেকে ৩৯ মিনিটে। এই ২ গোলের মাঝেরটি পেদ্রির।
শনিবার এল ক্লাসিকোর আগে বুধবার চ্যাম্পিয়নস লিগে ফ্লিকেরই সাবেক ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে খেলবে বার্সেলোনা। গুরুত্বপূর্ণ দুটি ম্যাচের আগে বড় জয় স্বাভাবিকভাবেই দলের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। তবে দলের উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের চেয়েও তারকা খেলোয়াড়দের চোট কাটিয়ে ফেরা ফ্লিকের কাছে বেশি আনন্দের।
গাভির আগে এ মাসেই চোট কাটিয়ে ফিরেছেন আরেক মিডফিল্ডার ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং। ম্যাচের আগমুহূর্তে গা গরমের সময় চোটে না পড়লে খেলতেন ফেরান তোরেসও।
ম্যাচ শেষে ফ্লিক বলেছেন, ‘সব ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ, শুধু বড় ক্লাবের বিপক্ষে ম্যাচই নয়। সেভিয়া কঠিন প্রতিপক্ষ ছিল। তা ছাড়া আমরা সদ্যই (আন্তর্জাতিক) বিরতি থেকে ফিরেছি। ফল নিয়ে আমি খুব খুশি। আজ (গত রাতে) আমরা এই জয় উপভোগ করব এবং আগামীকাল (আজ) বায়ার্নের বিপক্ষে ম্যাচের প্রস্তুতি নেব।’
গাভিকে নিয়ে ফ্লিকের কথা, ‘ওকে নিয়ে আমি খুব খুশি। পুরো ক্লাবই খুশি। ওর প্রত্যাবর্তন আমাকে শিহরিত করেছে। ফেরাটা ওর জন্য ও দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
৩৪৮ দিন পর খেলতে নামা গাভি বলেছেন, ‘আমার জন্য সবচেয়ে খারাপ বিষয় ছিল খেলতে না পারা। এতগুলো দিন মাঠের বাইরে থেকে দেখেছি, দলের সবাই কঠিন পরিশ্রম করছে। কয়েক মাস ধরে আমি এই মুহূর্তটির স্বপ্ন দেখেছি। আমি সবার কাছে কৃতজ্ঞ। কারণ, তারা আমার ফেরাটা সহজ করেছে।’
গাভিকে অধিনায়কত্বের বাহুবন্ধনী পরিয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে পেদ্রি বলেছেন, ‘এটা ওর প্রাপ্য ছিল। সে খুব পরিশ্রমী, মানুষ হিসেবেও ভালো। সবাই দেখেছে, সে মাঠে নামার সময় সমর্থকদের কতটা ভালোবাসা পেয়েছে।’