ব্রাজিলের রেফারি রাফায়েল ক্লাউস যখন শেষ বাঁশি বাজালেন, ততক্ষণে যেন দর্শকেরাও হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন! ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হার প্রথমার্ধেই প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল ইরানের। শেষ পর্যন্ত অবস্থা এমন হয়েছিল, যত দ্রুত পারেন ইরানি দর্শকেরা দোহার খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামের গ্যালারি ছেড়ে যেতে চাইছিলেন। কিন্তু আজ ইংল্যান্ড-ইরানের ম্যাচে নির্ধারিত সময়ের চেয়েও ২৭ মিনিট বেশি সময় খেলা হয়েছে। ম্যাচের প্রথমার্ধে ১৪ মিনিট এবং দ্বিতীয়ার্ধে দেওয়া হয়েছে ১৩ মিনিটের যোগ করা সময়। আর তাতে যোগ হওয়া এই সময়েরই নতুন রেকর্ড দেখল বিশ্বকাপ।
ম্যাচের ৮ মিনিটের মাথায় গোলমুখে একটা ক্রস ঠেকাতে গিয়ে সতীর্থ হোসেইনি মাজিদের সঙ্গে ধাক্কা লাগে ইরানের গোলরক্ষক আলীরেজা বেইরানভন্দের। আঘাত যথেষ্ট গুরুতরই ছিল। নাকে চোট পাওয়া আঘাতটা মাথা পর্যন্ত গড়িয়ে ‘কনকাশন’–এ রূপ নেওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়। একপর্যায়ে বেইরানভন্দ নিজেই মাঠ ছেড়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন ইরানের কোচ কার্লোস কুইরোজকে। তবে এর আগে মাঠে অসুস্থ বেইরানভন্দের শুশ্রূষা চলে মিনিট বিশেক। তাঁর বদলি হিসেবে পরে মাঠে নামেন হোসেইন হোসেইনি।
দ্বিতীয়ার্ধেও ম্যাচের ছন্দ থেমেছে হ্যারি ম্যাগুয়ারের চোট পাওয়ার কারণে। খেলার ৭০ মিনিটে মাথায় চোট পান এই ইংলিশ ডিফেন্ডার। তাঁর শুশ্রূষার জন্যও মাঠে বেশ কিছু সময় খেলা বন্ধ ছিল। দুই দফা দুই দলের ফুটবলারের বড়সড় চোটের কারণেই মূলত দুই অর্ধ মিলিয়ে মোট ২৭ মিনিট যোগ হওয়া সময়ে খেলা চালাতে বাধ্য হন রেফারি।
এতেই হয়েছে রেকর্ড। প্রথমার্ধ শেষে যে ১৪ মিনিট যোগ করা সময় দেওয়া হয়েছে, বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটাই দীর্ঘতম প্রথমার্ধ। আর সব মিলিয়ে ২৭ মিনিট অতিরিক্ত সময় দেওয়ায় বিশ্বকাপের ইতিহাসে গ্রুপ পর্বে এটাই সবচেয়ে দীর্ঘতম ম্যাচের রেকর্ড গড়ে ফেলে। যোগ করা সময় মিলিয়ে ম্যাচে খেলা হয়েছে মোট ১১৭ মিনিট।
পেশাদার ফুটবল ম্যাচে এর চেয়েও বেশি যোগ হওয়া সময়ের রেকর্ড দেখেছে দর্শক। ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ফুটবল লিগ কাপের (কারাবাও কাপ) ম্যাচে ২৮ মিনিট যোগ হওয়া সময় খেলা চালানোর রেকর্ড রয়েছে। ২০১৯ সালে আলবিওন ও বোর্নমাউথের মধ্যকার ম্যাচে রেফারি ২৮ মিনিট বাড়তি সময় খেলা চালিয়েছিলেন। কারণ? আলবিওনের স্টেডিয়ামে বিদ্যুৎ–বিভ্রাট।