বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই অর্থের ছড়াছড়ি। পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলাটির সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট নিয়ে আগ্রহ থাকে কোটি কোটি মানুষের। স্বাভাবিকভাবেই এ টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে বিপুল অর্থ আয়ের সুযোগ থাকে ফিফার। রাজস্ব আয়, টিকিট বিক্রি, পৃষ্ঠপোষকতা, সম্প্রচারস্বত্ব—সবকিছুই থাকে ফিফার হাতে।
গত রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে ফিফা আয় করেছিল ৫৪০ কোটি ডলার। বিশ্বকাপ থেকে ফিফার আয় যেমন আছে, ব্যয়টাও কিন্তু কম নয়। এই যেমন ক্লাবগুলোকেই ফিফার ক্ষতিপূরণ দিতে হচ্ছে ২০ কোটি ৬৯ লাখ ৭০ হাজার ডলার। দেশের হয়ে খেলতে নিজ নিজ খেলোয়াড়দের ছেড়ে দিতে হয় বিশ্বের প্রায় সব শীর্ষ ক্লাবকে।
এ কারণেই মূলত ‘ফিফা ক্লাব বেনিফিটস’ প্রোগ্রামের আওতায় ক্লাবগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হয় ফিফাকে। দ্য টাইমস–এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কাতার বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ৫ কোটি ৪৮ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ পেতে যাচ্ছে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটি। আয়ের দিক থেকে শীর্ষ পাঁচে থাকা বাকি দলগুলো হলো বার্সেলোনা, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, চেলসি ও টটেনহাম।
বিশ্বকাপ চলাকালে জাতীয় দলে খেলা ক্লাবগুলোর প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্য প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার ডলার দেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রস্তুতির সময়ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন ম্যান সিটির ১৬ ফুটবলার কাতার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেছেন। তবে ফাইনালে উঠতে পেরেছেন একজন—আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড হুলিয়ান আলভারেজ। জ্যাক গ্রিলিশ, এদেরসন, বের্নার্দো সিলভাদের বিদায় নিতে হয়েছে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই।
ম্যান সিটির পর ফিফার কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিপূরণ পাবে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনা। বিশ্বকাপে ম্যান সিটির চেয়ে ১ জন বেশি, অর্থাৎ ১৭ ফুটবলার থাকলেও ফিফা থেকে তারা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে ম্যান সিটির চেয়ে কম, ৪ কোটি ৫ লাখ ডলার। মূলত স্পেন দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বাদ পড়ার কারণেই কম অর্থ পেতে হচ্ছে বার্সাকে। কারণ, স্পেন দলেই বার্সার ফুটবলার ছিলেন আটজন।
বিশ্বকাপে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রতিনিধি ছিলেন ১৩ জন। তাদের বিশ্বকাপ খেলা বেশির ভাগ ফুটবলারই বিদায় নিয়েছেন শেষ আটের লড়াইয়ে। তবে ইউনাইটেডের দুই ফুটবলার রাফায়েল ভারানে ও লিসান্দ্রো মার্তিনেজ খেলবেন ফাইনালে। ফিফার কাছে থেকে রেড ডেভিলদের পাওয়ার কথা ৩ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। প্রিমিয়ার লিগের বাকি শীর্ষ ক্লাব চেলসি, টটেনহাম,আর্সেনালের আয় যথাক্রমে ৩ কোটি ডলার, ২ কোটি ৮৩ লাখ ডলার ও ২ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। লিভারপুল পাবে ১ কোটি ৯১ লাখ ডলার।
রাশিয়া বিশ্বকাপে ফিফার কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিপূরণ পাওয়া ক্লাবগুলোর মধ্যেও ছিল ম্যান সিটি, বার্সেলোনা, টটেনহাম। সেই বিশ্বকাপেও ম্যান সিটির আয় ছিল সবচেয়ে বেশি। তবে রাশিয়ায় শীর্ষ পাঁচে রিয়াল মাদ্রিদ থাকলেও এবার জায়গা হয়নি এই স্প্যানিশ জায়ান্টদের। ইউরোপিয়ান ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে চুক্তির অংশ হিসেবে ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ থেকে খেলোয়াড়প্রতি ক্লাবগুলোকে এ ক্ষতিপূরণ দিয়ে আসছে ফিফা।