কাল ম্যানচেস্টার সিটির ট্রফি নিয়ে প্যারেড অনুষ্ঠানে রাস্তার পাশে এভাবে রেপ্লিকা–ট্রফি সাজিয়ে রেখেছিলেন খুচরো ব্যবসায়ীরা
কাল ম্যানচেস্টার সিটির ট্রফি নিয়ে প্যারেড অনুষ্ঠানে রাস্তার পাশে এভাবে রেপ্লিকা–ট্রফি সাজিয়ে রেখেছিলেন খুচরো ব্যবসায়ীরা

গার্দিওলা কত খরচ করেছেন, ট্রেবল জিতে সিটি কত পাচ্ছে

পেপ গার্দিওলা ম্যানচেস্টার সিটিতে এসে অঢেল টাকা খরচ করতে পেরেছেন বলেই সাফল্য পেয়েছেন। সিটিতে গার্দিওলার সব ট্রফির জন্যই খরচ করতে হয়েছে বিশাল অঙ্ক। কথাটা সত্যি। কিন্তু এই সত্যির আড়ালেই আছে এখনকার ফুটবলের এক বড় বাস্তবতাও।

ভালো দল গড়তে হলে আপনার ভালো খেলোয়াড় লাগবে। আর ভালো খেলোয়াড় কিনতে অর্থ তো লাগবেই। তারপর সেই খেলোয়াড়দের ক্লাবে ধরে রাখতেও বেতনের পেছনে খরচ করতে হয় বড় অঙ্ক। টাকা ছাড়া তাহলে কীভাবে সম্ভব সাফল্য পাওয়া!

হ্যাঁ, কম খরচেও দল গড়া যায়। সে রকম দল সাফল্য পেয়েছে, এই উদাহরণও আছে। কিন্তু একই সঙ্গে সাফল্য পেতে এবং সেটার ধারাবাহিকতা ধরে রেখে ইউরোপের ফুটবলের পরাশক্তি হয়ে থাকতে গেলে খরচ করতেই হবে। সেই খরচটা যথার্থ হচ্ছে কি না, সেটা বিভিন্নভাবে (সাফল্য ও আর্থিক লাভ) ফিরে আসছে কি না, সেটাই বড় প্রশ্ন। সেদিক থেকে গার্দিওলাকে কৃতিত্ব দিতেই হবে। তিনি খরচ করেছেন অনেক, কিন্তু সেটার প্রতিদানও বিভিন্নভাবে পেয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি।

এই মৌসুমে ‘ট্রেবল’ জয়ের উৎসব কাল দারুণ প্যারেডের মাধ্যমে উদ্‌যাপন করেছে সিটি। ছবিতে পুলিশের প্রহরায় সিটির ছাদ খোলা বাস। রাস্তার পাশে সমর্থকদের ভিড়

‘ফুটবল ট্রান্সফার’ ওয়েবসাইট বলছে, ২০১৬ সালে ম্যানচেস্টার সিটির দায়িত্ব নেওয়ার পর এ পর্যন্ত গার্দিওলা খেলোয়াড় কেনা বাবদ ১০৩ কোটি পাউন্ড খরচ করেছেন দলবদলের বাজারে। এই সময়ে সিটি যত খেলোয়াড় বিক্রি করেছে, সেটা যোগ-বিয়োগ করলে মোট খরচ অবশ্য কমে আসে ৪৭ কোটি ৮০ লাখ পাউন্ডে। তারপরও বেশ বড় অঙ্ক সন্দেহ নেই। কিন্তু এর বিনিময়ে সিটি কী পেয়েছে, সেটাও হিসাব করা দরকার। ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফ বলছে, শুধু এই মৌসুমে ট্রেবল (চ্যাম্পিয়নস লিগ, প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপ) জিতেই সিটি আয় করেছে ৩০ কোটি পাউন্ডের মতো।

এই আয়টা এসেছে প্রাইজমানি এবং টুর্নামেন্ট–সংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাত থেকে। শুধু এই মৌসুমেই নয়, সিটির কোচ হিসেবে গার্দিওলা ৭ বছরে জিতেছেন মোট ১৪টি ট্রফি। এবারের ট্রেবল জেতা থেকে পাওয়া আয়ের সঙ্গে আগের মৌসুমের জেতা ট্রফির প্রাইজমানি ও অন্যান্য আয় যোগ করলে খরচটা কি খুব বেশি মনে হচ্ছে?

প্রাসঙ্গিকভাবে আরও কিছু তথ্য দিয়ে রাখা যায়। ২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সিটিই দলবদলের বাজারে সবচেয়ে বেশি খরচ করা দল নয়। ‘ফুটবল ডেইলি’র ওয়েবসাইট বলছে, এই সময়ে দলবদলের বাজারে চেলসি খরচ করেছে ১২০ কোটি পাউন্ড, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ১১০ কোটি পাউন্ড। আর্সেনালের খরচ ৭৭ কোটি ২০ লাখ পাউন্ড, লিভারপুলের খরচ ৭৩ কোটি ৫৬ লাখ পাউন্ড।

এ মৌসুমে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতে আয়ও বাড়িয়েছে সিটি

২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সিটির চেয়ে বেশি খরচ করেছে যে দুটি ক্লাব, তার মধ্যে চেলসি এই সময়ে একটা প্রিমিয়ার লিগ, একটা চ্যাম্পিয়নস লিগ, একটা ইউরোপা লিগসহ জিতেছে ৬টি ট্রফি। অর্থাৎ সিটির অর্ধেকের চেয়ে কম! ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড একটা ইউরোপা লিগসহ জিতেছে ৫টি ট্রফি, লিভারপুল জিতেছে ৭টি, আর্সেনাল ৪টি। খরচের তুলনায় গার্দিওলার সাফল্য কিংবা সিটির আয় কি কম মনে হচ্ছে?