ফোডেন ও হলান্ডের হ্যাটট্রিকেই ৬-৩ গোলের বড় জয় পেয়েছে সিটি
ফোডেন ও হলান্ডের হ্যাটট্রিকেই ৬-৩ গোলের বড় জয় পেয়েছে সিটি

হলান্ড-ফোডেনের হ্যাটট্রিকে ইউনাইটেডকে উড়িয়ে দিল সিটি

ম্যাচের তখন ৪৪ মিনিট। ক্যামেরায় ধরা পড়ল গ্যালারিতে বসে থাকা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কিংবদন্তি কোচ অ্যালেক্স ফার্গুসনের বিমর্ষ মুখ। ক্লাব কিংবদন্তি কোচের বিমর্ষ সে মুখ দেখেই ম্যাচের ফল বোঝা যাচ্ছিল কিছুটা। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার আগেই ম্যাচের ভাগ্য লেখা হয়ে গেছে কারণ ততক্ষণে ইউনাইটেড পিছিয়ে ৪-০ গোলে।

৬৪ মিনিটে ম্যাচের বিশেষ আরও একটি মুহূর্ত ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। আরলিং হলান্ডের বাবা আলফি হলান্ডের উচ্ছ্বাস। তার উচ্ছ্বাসে আরও একটি বিষয় পরিষ্কার, গোলের পর গোল করা হলান্ড ও ম্যাচেও করেছেন বিশেষ কিছু।  

বিশেষ কিছু অবশ্য হলান্ড শুরু থেকেই করে যাচ্ছেন। প্রিমিয়ার লিগে অভিষেকের পর থেকেই গোলের বন্য বইয়ে দিয়ে যাচ্ছেন। আজ নিজের প্রথম ম্যানচেস্টার ডার্বিতেই করেছেন হ্যাটট্রিক। লিগে ঘরের মাঠে টানা তিন ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছেন সময়ের অন্যতম সেরা এই স্ট্রাইকার। হ্যাটট্রিক করেছেন ফিল ফোডেনও। ফোডেন ও হলান্ডের হ্যাটট্রিকেই ৬-৩ গোলের বড় জয় পেয়েছে সিটি।

গত মৌসুমে ম্যানচেস্টার ডার্বিটা ঠিক জমেনি। দুইবারের দেখায় লিগে দুটি ম্যাচেই জয় পেয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। আগের মৌসুমে অবশ্য শুধু ম্যানচেস্টার ডার্বি তে নয়, পুরো মৌসুমেই ভুগেছিল ওল্ড-ট্রাফোর্ডের ক্লাবটি। তবে এই মৌসুমে অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে ইউনাইটেড। তাই ম্যানচেস্টার ডার্বিতেও লিখতে চেয়েছিল নতুন গল্প। তবে তাতো আর হয়নি, উল্টো আরলিং হলান্ড, ফিল ফোডেন কেভিন ডি ব্রুইনাদের দাপটে হেরেছে বড় ব্যবধানে।

কোথায় থামবেন হলান্ড?

ইতিহাদে ম্যাচের শুরু থেকেই প্রভাব বিস্তার করতে থাকে ম্যান সিটি।  প্রথম গোল পেতেও খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। ৭ মিনিটেই ফিল ফোডেনের দারুণ গোলে এগিয়ে যায় তারা। যে গোল দেখে ইউনাইটেডের সাবেক তারকা গ্যারি নেভিল বলেছেন—‘দাভিদ দে হায়া কিছু বোঝার আগেই বল তাকে অতিক্রম করেছে।’

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড প্রথম সুযোগটা ম্যাচের ১১ মিনিটে। তবে মার্কাস রাশফোর্ড সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। জ্যাক গ্রিলিশের পারফরম্যান্স নিয়ে মাঠের বাইরে অনেক আলোচনা থাকলেও এ ম্যাচে শুরু থেকেই তিনি নজর কেড়েছেন । তার কল্যাণেই ১৭ মিনিটে ফ্রি-কিক পায় সিটি। ইলকায় গুন্দোয়ানের নেওয়া সে ফ্রি-কিক একটুর জন্য জালে জড়ায়নি।  

ইউনাইটেড পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা চালিয়ে গেলেও  এরিকসন, সাঞ্চোরা বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি। ২১ মিনিটে আবারও সুযোগ আসে সিটির সামনে। তবে ফোডেন এবার আর সে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি। ইউনাইটেডের রক্ষণে যেভাবে আক্রমণ চালিয়েছেন হলান্ডরা, তাতে আরও গোল পাওয়া অনেকটা সময়ের ব্যাপার হয়েই দাঁড়িয়েছিল।

হয়েছেও তাই! ৩৩ থেকে ৩৭-এই চার মিনিটের মধ্যে ইউনাইটেডের জালে আর দুইবার বল জড়ান হলান্ড। দুইবারই গোলে সহায়তা করেছেন  ডি ব্রুইনা।
হালান্ডের জোড়া গোল দেখেই কি না, ৪৩ মিনিটে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ফোডেন। সিটির হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এটি ফোডেনের ৫০তম গোল। ৪-০ গোলেও পিছিয়ে থেকেও বেঞ্চে থাকা রোনালদোকে নামাননি টেন হাগ। ২০০৩ সালের পর এই প্রথমবার টানা ৫ ম্যাচে শুরুর একাদশে ছিলেন না রোনালদো।

দ্বিতীয়ার্ধেও চলতে থাকে সিটির আক্রমণ। তবে ৫৬ মিনিটে গোল পেয়ে আন্থনি।এরিকসনের বাড়িয়ে দেওয়া বলে ২৫ গজ থেকে নেওয়া শটে দারুণ এক গোল করেন আন্থেনি। ৫৯ মিনিটে দলে পরিবর্তন আনেন টেন হাগ। ম্যাকটমিনে ও রাশফোর্ডের বদলে মাঠে নামেন মার্শিয়াল ও কাসিমেরো। ম্যাচের ৬৫ মিনিটে হ্যাটট্রিক করেন হলান্ড।  অভিষেকের ৫৬ দিনের মধ্যেই ৩ হ্যাটট্রিকের মালিক এখন হলান্ড। সব মিলিয়ে গোল করেছেন ১৭টি।

হলান্ডের হ্যাটট্রিকের পর ফোডেনও করেছেন হ্যাটট্রিক।

হলান্ডের হ্যাটট্রিকের পর ফোডেনও করলেন হ্যাটট্রিক। ৭২ মিনিটে ফোডেনের তৃতীয় গোলেই ৬-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে ইউনাইটেড। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে ব্যবধান কমান মার্শিয়াল। ৯০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে আরও এক গোল করেন মার্শিয়াল। তাতে অবশ্য ম্যাচের ফল বদলায়নি।