তিনি নিঃসন্দেহে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার। যেকোনো দলই তাঁর মতো একজন খেলোয়াড়কে পেতে চাইবে। একসময় বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলারও হয়েছেন। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারকে নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে।
অনেকেই অভিযোগ করেন, নেইমার কিছুটা স্বার্থপর। তিনি দলকে খেলাতে পারেন না। সে কারণেই সান্তোসের হয়ে কোপা লিবার্তোদোরেস আর বার্সেলোনার হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ ছাড়া তাঁর বড় কোনো সাফল্য নেই। ব্রাজিলের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ খেললেও সেমিফাইনালের ওপর দলকে তুলতে পারেননি।
ব্রাজিলের হয়ে নেইমারের একমাত্র আন্তর্জাতিক সাফল্য ২০১৩ সালের কনফেডারেশনস কাপ জয়। ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে অবশ্য ২০১৬ প্রথমবারের মতো জিতিয়েছিলেন অলিম্পিকের সোনার পদক।
নেইমারের কেন বড় সাফল্য কম, সেটির একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন বার্সেলোনায় তাঁর সাবেক সতীর্থ আরদা তুরান।
সম্প্রতি ‘সক্রাতেস’ নামের ইউটিউব চ্যানেলের একটি অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে তুরান নেইমারকে করেছেন বিশ্লেষণ। তিনি বলেছেন, নেইমারকে তিনি সাফল্যের দিক দিয়ে লিওনেল মেসি আর কিলিয়ান এমবাপ্পের পাশেই দেখতে চান, তিনি চান নেইমার ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ জিতুন, ‘নেইমার খুবই প্রতিভাবান ফুটবলার। সে মাঠে নিজের প্রতিভা দিয়ে একজনের পর আরেকজনকে বোকা বানাতে পারে। তবে আমার ব্যক্তিগত মত, নেইমার খুব ভালো খেললেও সে সঠিক ফুটবলটা খেলতে পারে না বলেই দলকে সেভাবে সাফল্য এনে দিতে পারে না। আমি তো ওকে চ্যাম্পিয়ন ফুটবলারই মনে করি। এখন ওর খেলাটা আরও নিখুঁতভাবে খেলতে শিখতে হবে। সে ম্যাচে বেশির ভাগ সময়ই নিজেকে অতিরিক্ত ক্লান্ত করে ফেলে। আমি ওকে জিততে দেখতে চাই। সে ফুটবল খেলাটা খুবই ভালোবাসে। সব সময়ই খেলতে চায়, জিততে চায়। আমি চাই না, নেইমার দ্রুতই ফুটবলকে বিদায় বলুক।’
২০১৪ সাল থেকে বিশ্বকাপ খেলছেন নেইমার। প্রথমবার তা-ও ব্রাজিল সেমিফাইনাল খেলেছিল। কিন্তু পরের দুবার ব্রাজিল বিদায় নিয়েছে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই। এবার কাতার বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে শেষ আটের ম্যাচে নেইমারের এক দুর্দান্ত গোলেই ব্রাজিল এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু খেলা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে ক্রোয়েশিয়া গোল শোধ করে ম্যাচটিকে টাইব্রেকারে নেয়। পেনাল্টি শুট আউটের পরীক্ষাতেই বিদায়ঘণ্টা বেজে যায় ব্রাজিলের।
বিশ্বকাপের আগে অবশ্য নেইমার নিজেই কাতার বিশ্বকাপকেই তাঁর ‘শেষ বিশ্বকাপ’ হিসেবে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু ব্রাজিল তাঁকে ২০২৬ বিশ্বকাপেও দলে চায়। ভক্তদেরও চাওয়া, সাড়ে তিন বছর পর যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোতে বিশ্বকাপ জিতে নেইমারও তাঁর শেষটা করুন পিএসজি সতীর্থ ও বন্ধু লিওনেল মেসির মতোই বর্ণাঢ্য।