এ কোন জুভেন্টাস? চলতি মৌসুমে ‘তুরিনের বুড়ি’ খ্যাত দলটির দিকে তাকালে এমন প্রশ্ন আপনার জাগতেই পারে। সিরি ‘আ’তে ৮ নম্বরে থাকা জুভরা এবার চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপপর্ব থেকেই যে বিদায় নিয়ে নিল। সর্বশেষ আজ তারা বেনফিকার কাছে হারল ৪-৩ গোলে। সবমিলিয়ে গ্রুপ পর্বের ৫ ম্যাচের ৪টিতেই হেরেছে ম্যাসিসমিলিয়ানো অ্যালেগ্রির দল।
জুভেন্টাসের সুবর্ণ সময় পেছনে ফেলার ইঙ্গিত গত দুই মৌসুম ধরেই পাওয়া যাচ্ছিল। এবার যেন কফিনে শেষ পেরেকটিও ঠুকে গেল। সিরি ‘আ’তে হতশ্রী অবস্থা, চ্যাম্পিয়নস লিগেও করতে পারল না লড়াইটুকু। ২০১৩-১৪ সালের পর আবারও চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিল জুভেন্টাস।
পয়েন্ট হারালেই বিদায়- এমন সমীকরণে খেলতে নেমেও জুভেন্টাসের খেলায় ছিল না মরিয়া ভাব। উল্টো বেনফিকার চাপে শুরু থেকেই চিড়ে চ্যাপ্টা হয়ে ছিল ‘তুরিনের বুড়ি’রা। ম্যাচের প্রথম ১৭ মিনিটে জুভেন্টাসের ওপর ছড়ি ঘুড়িয়ে গোলও আদায় করে নেয় বেনফিকা। এঞ্জো ফার্নান্দেজের দুর্দান্ত এক ক্রসে গোল করে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন আন্তোনিও সিলভা।
গোল খেয়ে মুহূর্তের মধ্যে জেগে ওঠে জুভেন্টাস। ৪ মিনিট পরেই কর্নার থেকে বল পেয়ে হেডে গোল করেন দুসান ভ্লাহোভিচ। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে গোলের সিদ্ধান্ত দেন রেফারি।
তবে সমতা ফিরিয়েও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি ইতালিয়ান জায়ান্টরা। উল্টো ডি-বক্সের ভেতর হ্যান্ডবল করে বেনফিকাকে পেনাল্টি উপহার দিয়ে বসেন কোয়াদ্রাদো। এমন সুযোগ হেলায় নষ্ট করেননি জোয়াও মারিও। বাঁ পাশের টপ কর্নার দিয়ে বল জালে জড়ান মারিও।
ঘরের মাঠে ইউরোপীয় মঞ্চে জুভেন্টাসের বিপক্ষে অতীতে খেলা তিনটি ম্যাচেই জিতেছিল বেনফিকা। সেই রেকর্ড অক্ষুণ্ন রাখতেই হয়তো মরিয়া ছিল পর্তুগিজ ক্লাবটি। দারুণ সব আক্রমণে জুভেন্টাসের রীতিমতো নাভিশ্বাস তুলে ছাড়ে তারা। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে পেয়ে যায় নিজেদের তৃতীয় গোলটিও। মারিওর অ্যাসিস্টে গোল করেন রাফা সিলভা। এই গোলে প্রথমার্ধেই জুভেন্টাসের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়।
বিরতির পর ৫০ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের চতুর্থ গোলটি আদায় করে নেন রাফা। এই অর্ধের বেশিরভাগ সময় জুভেন্টাসকে চাপে রেখেছিল বেনফিকা। তবে পরের দিকে একাধিক বদল এনে চেষ্টা করেছিল জুভেন্টাস।
শেষ দিকে দারুণভাবে জেগেও ওঠে তারা। তবে ততক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে। আর্কাদিওস মিল্ক ও ওয়েস্টন এমকেনিয়ে দুই মিনিটে দুই গোল করে উত্তেজনা ফেরালেও তা জুভেন্টাসের বিদায় ঠেকাতে মোটেই যথেষ্ট ছিল না। শেষ পর্যন্ত হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে জুভদের।
রিয়ালের প্রথম হার
একই রাতে আরবি লাইপজিগের মাঠে হেরে ৩-২ গোলে হেরে গেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। এটি চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রিয়ালের প্রথম হার। আগেই নকআউট নিশ্চিত করা রিয়াল এদিন খেলতে নেমেছিল করিম বেনজেমা ও লুকা মদরিচকে ছাড়াই। যার প্রভাবও দেখা গেছে মাঠের খেলাতেও। ১৮ মিনিটেই ঘরের মাঠে দুই গোলে এগিয়ে যায় জার্মান ক্লাবটি।
বিরতির আগ মুহূর্তে এক গোল শোধ করেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ৮১ মিনিটে ব্যবধান ৩-১ করেন টিমো ওয়ার্নার। যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে রদ্রিগো গোল করলেও তা কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।