বিশ্ব জয়ের পর দি পল
বিশ্ব জয়ের পর দি পল

বললেন রদ্রিগো দি পল

‘আর্জেন্টাইন ইতিহাসে অমর থেকে যাব’

আগের দিনই বলেছিলেন, রক্ষণভাগ ভালো করলে আর্জেন্টিনার সম্ভাবনা বেশি। যে রক্ষণভাগের কথা বলেছিলেন, সেটির শেষ দ্বাররক্ষী তিনি। কিন্তু এমিলিয়ানো মার্তিনেজ কি তখন ভাবতে পেরেছিলেন, মহানাটকের ফাইনাল ‘ক্লাইমেক্সে’ আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জেতা না জেতার মাঝখানে শুধু তিনিই দাঁড়িয়ে থাকবেন?

টাইব্রেকার শুটআউটের সেই একা–যুদ্ধ কী দারুণভাবেই না জিতলেন মার্তিনেজ। ফ্রান্সের দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে আসা কিংসলি কোমানের শট রুখে দিলেন বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে। ওই এক প্রতিহতেই যেন ট্রফির কাছে পৌঁছে গেল আর্জেন্টিনা।

গোলরক্ষককে সঠিক দিকে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখেই কি না, অরেলিয়েঁ চুয়ামেনি শট নিলেন জোর কম দিয়ে, জালে পাঠাতে চাইলেন পোস্টের পাশ দিয়ে। আর সেটি করতে গিয়ে ফ্রান্স মিস করল আরেকটি পেনাল্টি।

দি পলদের উদ্‌যাপন

এদিকে লিওনেল মেসির পর পাওলো দিবালা, লিয়ান্দ্রো পারেদেসদের পর গঞ্জালো মন্তিয়েলের শট জালে যেতেই আর্জেন্টিনা পেয়ে গেল আরাধ্যের সেই মুহূর্ত—৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয়।

তিন যুগের অপেক্ষা ঘোচানোর ওই মুহূর্তে রদ্রিগো দি পলের ঠিক বিশ্বাস হচ্ছিল না তাঁরা বিশ্বকাপ জিতে গেছেন। প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হার দিয়ে শুরু। তার পর কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডস আর ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে কত ভোগান্তির পর জয়!

ম্যাচ শেষে সম্প্রচার মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে যেন ভাষাই খুঁজে পাচ্ছিলেন না দি পল, ‘আমি বুঝতে পারছি না কী বলব। বিশ্বকাপ ট্রফি হাতে তুলে ধরার দৃশ্যটা এত দিন কল্পনাই করে এসেছি।’

১৯৮৬ সালের পর দুইবার ফাইনালে গিয়েও হার, এবারও দুই দফায় এগিয়ে যাওয়ার পর প্রতিপক্ষের সমতা নিয়ে আসা—বারবারই পিচ্ছিল হয়ে উঠেছিল শিরোপার পথটা। তবে পদে পদে ভোগান্তিটাই আর্জেন্টিনা দলকে মানসিকভাবে আরও শক্তিশালী করেছে বলে বিশ্বাস ২৮ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডারের, ‘আমাদের জন্মই যেন সংগ্রামের জন্য। তবে প্রতিটি ভোগান্তির মুহূর্ত আমাদের আরও শক্তিশালী করেছে। এটা চিরন্তন হয়ে ওঠার মূল কারিগর।’

২০২১ সালে ২৮ বছরের খরা কাটিয়ে আর্জেন্টিনাকে কোপা আমেরিকা জিতিয়েছিলেন দি পলরা, এবার এল ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয়। আর্জেন্টাইন ফুটবল ইতিহাসের তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে ওঠার গর্ব ছুঁয়ে যাচ্ছে দি পলকে, ‘(দেশের ইতিহাসে) আমরা অমর হয়ে যাব। আমরা পেরেছি বিশ্বকাপ জিততে। আমাদের পতাকা এখন আরও উঁচুতে।’