ব্রাজিলের নতুন ‘বিস্ময় বালক’ এনদ্রিক ফেলিপে
ব্রাজিলের নতুন ‘বিস্ময় বালক’ এনদ্রিক ফেলিপে

ব্রাজিলকে চ্যাম্পিয়ন হতে হলে আর্জেন্টিনাকে হারাতে হবে

নিজের স্বপ্নগুলোকে মোড়কজাত করে পালমেইরাসে যাওয়ার আগেই এনদ্রিক ফেলিপে বুঝেছিলেন, ফুটবল শুধু একটি খেলা নয়, উন্নত জীবনের পাথেয়ও।

মাত্র ১০ বছর বয়সে বাড়ি ছাড়ার সময় সোফায় শুয়ে কাঁদছিলেন এনদ্রিক। সেই কান্না তাঁর বাবা দগলাসের কাছে লুকাতে পারেননি। পালমেইরাসে যোগ দেওয়ার আগে বাবার কাছে প্রতিজ্ঞাও করেছিলেন, যতই বাধা আসুক; কখনো হাল ছাড়বেন না। হাল না ছাড়ার মানসিকতাই এনদ্রিককে এখন আরও শক্তিশালী করে তুলেছে, প্রতিনিয়ত উন্নতির দিকে ধাবিত করেছে।

আর্জেন্টিনার জাতীয় ক্রীড়া দৈনিক ওলে গতকাল এনদ্রিকের সাক্ষাৎকার ছাপিয়েছে

ব্রাজিলের নতুন ‘বিস্ময় বালক’ তকমা পাওয়া এনদ্রিক আগামী ২১ জুলাই ১৮ বছর পূর্ণ করবেন, এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে হয়ে যাবেন রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড়।

সম্প্রতি আর্জেন্টিনার জাতীয় ক্রীড়া দৈনিক ওলেকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এনদ্রিক, যা গতকাল ছাপিয়েছে ওলে। সাক্ষাৎকারে আসন্ন কোপা আমেরিকার ফেবারিট, ব্রাজিলিয়ান সতীর্থ ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের সঙ্গে সুসম্পর্ক, পালমেইরাস ছেড়ে রিয়ালে যোগ দিতে যাওয়াসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন এই স্ট্রাইকার।

রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে খেলার চাপ সামলানো...

রিয়াল মাদ্রিদের ট্রেনিং গ্রাউন্ড ভালদেবেবাসে এনদ্রিক

এটা স্পষ্ট যে আমার ওপর চাপ বাড়ছে। স্টেডিয়াম অনেক বড়, দর্শক অনেক বেশি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খেলোয়াড়দের মানও বাড়ছে। তবে আমি সব সময় আত্মবিশ্বাসী। আমি মাঠে শান্ত থেকে সেরা উপায়ে প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করি। আমি যা পারি, সবকিছুই করে দেখিয়েছি এবং যতটা সম্ভব সেরা প্রশিক্ষণ নিয়েছে। তাই আমি জানি (রিয়ালেও) সব ঠিকঠাক করতে যাচ্ছি।

ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের সঙ্গে সুসম্পর্ক

ভিনি আমাকে খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছেন। তিনি আমাকে মাদ্রিদ শহর, রিয়াল মাদ্রিদের সংস্কৃতি ও দল সম্পর্কে অনেক কিছু বলেছেন। আমি নিশ্চিত তিনি আমাকে অনেক বেশি সাহায্য করবেন, বিশেষ করে মাঠে।

পালমেইরাসে অর্জন নিয়ে তৃপ্তি-অতৃপ্তি

খুদে ভক্তদের অটোগ্রাফ দিচ্ছেন এনদ্রিক

পালমেইরাসের মূল দলের হয়ে দুই বছরে আমি পাঁচটি শিরোপা জিতেছি, এর মধ্যে তিনটি জাতীয় পর্যায়ে। তবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জিততে পারিনি। আমি আমার সতীর্থদের এই মৌসুমে কোপা লিবার্তাদোরেস (দক্ষিণ আমেরিকান ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ প্রতিযোগিতা) জিততে উৎসাহিত করে যাচ্ছি। আশা করছি আমি ফিরে এসে আমার মেডেলটা নিতে পারব।

২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ব্রাজিলের দুর্দশা

দলটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যা আমাদের অবশ্যই অতিক্রম করতে হবে। সর্বশেষ দুটি বিশ্বকাপ বাছাইয়েও আমাদের নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু আমরা সব ধরনের বিপত্তি পেরিয়ে (বাছাইয়ে) চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।

আমরা ইতিমধ্যেই ঘুরে দাঁড়িয়েছি, ইউরোপে আমরা প্রীতি ম্যাচগুলোতে (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়, স্পেনের বিপক্ষে ড্র) তা দেখিয়েছি।

কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের সম্ভাবনা

আমি সব সময় পালমেইরাসকে জেতানোর জন্য খেলেছি। একইভাবে রিয়াল মাদ্রিদ ও ব্রাজিলকেও জেতানোর লক্ষ্যে মাঠে নামব। যখনই তারা ডাকবে, আমাকে পাশে পাবে। ব্রাজিলকে চ্যাম্পিয়ন হতে হলে আর্জেন্টিনাকে হারাতে হবে। আমরা সেই লক্ষ্যেই লড়াইয়ে নামতে যাচ্ছি। আর্জেন্টিনা দলটির প্রতি যথাযথ সম্মান জানিয়েই বলছি আমাদের নিজেদের ওপর বিশ্বাস আছে।

মেসির বিদায়ের পর ব্রাজিলের হারানো গৌরব ফিরে পাওয়ার সুযোগ

মেসিকে ছাড়াও আর্জেন্টিনাকে ফেবারিট মনে করেন এনদ্রিক

আমি বিষয়টিকে সেভাবে দেখি না। আর্জেন্টিনা দলে সব সময়ই বেশ কয়েকজন বড় তারকা ছিল এবং কেউই একা দলকে চ্যাম্পিয়ন বানাতে পারেনি। এমনকি মেসি ছাড়াও আর্জেন্টিনা যেকোনো প্রতিযোগিতায় অন্যতম ফেবারিট। তাদের হারানো খুব কঠিন হবে।