এবারের বিশ্বকাপ আয়োজক কাতারকে নিয়ে অনেক অভিযোগ। কয়েক বছর ধরে যে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি সামনে এসেছে, তা হচ্ছে নির্মাণশ্রমিকদের মানবেতর অবস্থা। কাতার বিশ্বকাপের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে যে প্রবাসী শ্রমিকেরা নিয়োজিত ছিলেন, তাঁদের কাজের পরিবেশ ও জীবনযাপন নিয়ে অনেক জলঘোলা হয়েছে। কিছুদিন আগেই দোহার কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্স থেকে প্রবাসী নির্মাণশ্রমিকদের উচ্ছেদ করেছে কাতার সরকার। মোটকথা, কাতার বিশ্বকাপের ওপর বড় একটা নেতিবাচক প্রভাব হয়েই আছে প্রবাসী নির্মাণশ্রমিকদের সঙ্গে দেশটির আচরণ। ২৮ লাখ জনসংখ্যার কাতারে বেশির ভাগই এই প্রবাসী। সাধারণত ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল ও আফ্রিকার দেশগুলো থেকেই এসেছেন এই নির্মাণশ্রমিকেরা।
নেদারল্যান্ডস ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (কেএনভিবি) অনেক আগে থেকেই প্রবাসী নির্মাণশ্রমিকদের সঙ্গে বাজে আচরণের নিন্দা জানিয়ে আসছে। হাতে গোনা যে কয়টি দেশের ফুটবল ফেডারেশন প্রবাসী শ্রমিকদের জীবনমান নিয়ে সোচ্চার ছিল, কেএনভিবি তাদের অন্যতম। বিশ্বকাপের সময় তারা প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণে অর্থসাহায্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নেদারল্যান্ডস দলের ফুটবলারদের জার্সি নিলামে তুলে সংগ্রহ করা হবে সেই অর্থ।
ডাচ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘খেলোয়াড়দের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অনলাইনে এই জার্সির নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। এটা সবাই জানেন, কাতার বিশ্বকাপের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে প্রবাসী শ্রমিকদের বিশাল অবদান।’
নেদারল্যান্ডসের অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘নির্মাণশ্রমিকেরা স্টেডিয়াম তৈরি করেছেন, যে স্টেডিয়ামগুলোয় বিশ্বকাপের খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আমরা বিশ্বকাপের সময় প্রতিটি মুহূর্ত তাঁদের অবদান স্মরণ করব। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাব। বিভিন্ন সভাকক্ষ থেকে নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য অনেক কিছুই করার কথা বলা হয়েছে। এবার নেদারল্যান্ডস দল কিছু একটা করবে ড্রেসিংরুম থেকেই। সবার কাছে আমরা পরিষ্কার বার্তা দিতে চাই কাতারে নির্মাণশ্রমিকদের জীবনমানের উন্নতি এখন সময়ের দাবি।’
বিশ্বকাপের সময়ই গোটা ডাচ দল বাছাইকৃত নির্মাণশ্রমিকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করবে বলে জানানো হয়েছে। তাঁদের নেদারল্যান্ডস দলের অনুশীলনেও আমন্ত্রণ জানানো হবে।