বেলজিয়াম ফুটবল দলে গৃহদাহের খবর কারও অজানা নয়। দেশটির সোনালি প্রজন্মের দলটিতে ভাঙন ধরেছে মূলত অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই।
কাতার বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর অধিনায়ক এডেন হ্যাজার্ডের অবসর ঘোষণায় ধারণা করা হয়েছিল, এবার বুঝি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে চলেছে। কিন্তু সেই অধিনায়কত্ব নিয়েই বেলজিয়াম দলে আবারও ভাঙনের সুর!
অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে গত শনিবার রাতে ইউরো বাছাই পর্বের ম্যাচে নেতৃত্ব না পেয়ে এবার জাতীয় দলের ক্যাম্প ছেড়ে গেছেন থিবো কোর্তোয়া। আজ রাতে এস্তোনিয়ার বিপক্ষে খেলবেন না রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। দলের প্রধান গোলরক্ষকের এমন সিদ্ধান্তে বিস্মিত বেলজিয়াম কোচ দমেনিকো তেদেসকো।
শনিবার ঘরের মাঠ কিং বাউদুইন স্টেডিয়ামে রালফ রাংনিকের অস্ট্রিয়ার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে বেলজিয়াম। চোটের কারণে প্রায় দুই মাসের জন্য ছিটকে পড়ায় হ্যাজার্ড-পরবর্তী অধিনায়ক কেভিন ডি ব্রুইনা স্বাভাবিকভাবেই দলের সঙ্গে নেই। ডি ব্রুইনার অনুপস্থিতিতে সবার সঙ্গে আলোচনা করে রোমেলু লুকাকুকে বাহুবন্ধনী দেন কোচ তেদেসকো। কোর্তোয়ার নাকি বিষয়টা ভালো লাগেনি। অভিমান করে বাড়ি ফিরে গেছেন ৩১ বছর বয়সী গোলরক্ষক।
কোর্তোয়ার চলে যাওয়া নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তেদেসকো বলেছেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে লুকাকু নেতৃত্ব দেবে আর এস্তোনিয়ার বিপক্ষে কোর্তোয়া। সবাই এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছিল। কিন্তু অস্ট্রিয়া ম্যাচের পর কোর্তোয়া হঠাৎ আমার কাছে এসে বলল, সে বাড়ি ফিরে যাবে। কারণ, সে হতাশ এবং মনে করছে তাকে অপমান করা হয়েছে।’
শুধু পোস্টের নিচে নির্ভরতার কারণে নয়, কোর্তোয়াকে মানুষ হিসেবে খুব পছন্দ তেদেসকোর। প্রিয় শিষ্যের আকস্মিক সিদ্ধান্তে তাই বিস্মিত হয়েছেন ইতালিয়ান বংশোদ্ভূত জার্মান কোচ, ‘শুরু থেকে আমি কোর্তোয়াকে প্রাপ্যটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার চোখে সে বিশ্বসেরা গোলরক্ষক। শুধু গোলরক্ষক হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবেও তাকে পছন্দ করি। ওর কথা শুনে আমি অবাক ও বিস্মিত হয়েছি।’
এমন কাণ্ডের পর বেলজিয়াম দলে কোর্তোয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে এখনই কিছু বলতে চান না তেদেসকো, ‘এখন এসব নিয়ে কথা বলার সঠিক সময় নয়। আগামীকাল (আজ) আমাদের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে। পরের ম্যাচ সেপ্টেম্বরে। তখন দেখব কী হয়।’
যদিও কোর্তোয়ার বাড়ি ফেরা নিয়ে কাল তাঁর বাবা থিয়েরি কোর্তোয়া স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন ছেলের হাঁটুর চোটের কথা। তবে সে দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন বেলজিয়াম কোচ, ‘আমি বলতে পারতাম, চোটের কারণে সে বাড়ি ফিরে গেছে। কিন্তু আমি তো মিথ্যা বলতে পারি না। আমি সব সময় খেলোয়াড়দের আগলে রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে এটা করা অসম্ভব। ওকে আরও অন্তত দুই দিন রেখে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম।’
২০১১ সালে বেলজিয়ামের জার্সিতে অভিষেক হয় কোর্তোয়ার। জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত ১০২ ম্যাচ খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদের গোলরক্ষক।