লাৎসিও গোলরক্ষক ইভান প্রোভেদেল
লাৎসিও গোলরক্ষক ইভান প্রোভেদেল

‘গোলকিপার হলান্ড’ যখন শেষ মুহূর্তে দলকে বাঁচালেন

কয়েক সেকেন্ডের অপেক্ষা! রেফারি চাইলে হয়তো শেষ বাঁশিতে ফুঁ দিতেই পারতেন। কারণ, যোগ করা সময় ৪ মিনিট দেওয়া হলেও সেটা পার হয়ে গেছে। তবে ফুটবল মাঠে নানা কারণে সময় নষ্ট হয়, তাই মাঝেমধ্যে যোগ করা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও কিছুক্ষণ খেলা হয়। এমনটা হয়ে ভালোই হয়েছে, নইলে ‘গোলকিপার আর্লিং হলান্ড’কে কি দেখা যেত!

না ভুল বলা হচ্ছে না, গতকাল যাঁরা চ্যাম্পিয়নস লিগে আতলেতিকো মাদ্রিদ-লাৎসিও ম্যাচ দেখেছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পেয়েছেন! আর যদি খেলা না দেখে থাকেন, তাহলে এই লাইন দুটো আপনার জন্য—গতকাল আতলেতিকোর বিপক্ষে ম্যাচের ৯৫তম মিনিটে লাৎসিওর গোলরক্ষক ইভান প্রোভেদেল দুর্দান্ত এক হেডে গোল করে দলকে পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচান (১-১)।

আর লুইস রবার্তোর ক্রসে যেভাবে দৌড়ে গিয়ে প্রোভেদেল গোল করেছেন, তাঁকে ম্যাচ শেষে রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক কোচ ফ্যাবিও ক্যাপেলো তুলনা করেছেন ম্যানচেস্টার সিটি স্ট্রাইকার হলান্ডের সঙ্গে।

চ্যাম্পিয়নস লিগের ‘গ্রুপ ই’–এর ম্যাচে গতকাল পাবলো ব্যারিওসের গোলে প্রথমার্ধেই এগিয়ে যায় আতলেতিকো। আর এই এক গোলেই পূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ার দ্বারপ্রান্তে ছিল ডিয়েগো সিমিওনের দল। তবে তাদের সেই স্বপ্ন ভেসে যায় প্রোভেদেলের গোলে। অবশ্য দায়টা তাদেরই নিতে হবে। কারণ, শেষ মুহূর্তে দলকে জেতাতে গোলপোস্ট ছেড়ে প্রতিপক্ষ রক্ষণে চলে আসা লাৎসিওর গোলরক্ষক ছিলেন একেবারেই ‘আনমার্কড’।

৯৫তম মিনিটে করা প্রোভেদেলের সেই দুর্দান্ত গোল

আতলেতিকো ডিফেন্ডারদের দর্শক বানিয়ে সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছেন প্রোভেদেল। আর এর আগে ২০২০ সালেও ইতালির তৃতীয় বিভাগে খেলা দল জুভ স্তাভিয়ার হয়ে অতিরিক্ত সময়ে গোল করে দলকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন এই গোলরক্ষক। এমন একজনকে অরক্ষিত রাখার মাশুল তো গুনতেই হতো!

প্রোভেদেল চ্যাম্পিয়নস লিগে গোল করা চতুর্থ গোলরক্ষক। তবে ওপেন-প্লেতে গোল করা দ্বিতীয় গোলরক্ষক তিনি। এর আগে ২০০৯ সালে তুরস্কের সিনান বোলাত পেনাল্টি ছাড়া গোল করেছিলেন। সেই গোলও ছিল ম্যাচের ৯৫ মিনিটে। তাতেও ম্যাচে এসেছিল ১-১ গোলে সমতা।

এমন ঐতিহাসিক এক গোলের পর ‘স্কাই ইতালিয়া’য় বিশেষজ্ঞ হিসেবে উপস্থিত হওয়া ক্যাপেলো বলেছেন, ‘দারুণ কিছু সেভ করে সে ম্যাচ বাঁচিয়েছে আর শেষে গোল করে সমতায় ফেরাল। হেড করার ধরন দেখে প্রোভেদেলকে হলান্ড মনে হয়েছে।’

প্রোভেদেলকে ঘিরে সতীর্থদের উল্লাস

প্রোভেদেলের কাজ গোলপোস্টে দাঁড়িয়ে গোল ঠেকানো। গোল করার অনুভূতির সঙ্গে খুব একটা পরিচিত নন এই গোলরক্ষক। আর সেটা ফুটে উঠেছে ম্যাচ শেষে তার কথাতেও, ‘যখন সেভ করি, তখন বেশি অনুভূতি কাজ করে, গোল করার অনুভূতির সঙ্গে অভ্যস্ত নই। কিন্তু আমি পরে বুঝতে পারব। এক পয়েন্ট পেয়ে খুশি, তবে দুঃখিত যে শেষ মুহূর্তে গোলটা এসেছে। আমাদের আরও আগে গোল পাওয়া উচিত ছিল।’