দুই বছর আগে ক্যানসার আক্রান্ত হন আইভরিকোস্ট তারকা সেবাস্তিয়ান হলার। তবে লড়াকু হলার ক্যানসার জয় করে ঠিকই ফিরে আসেন খেলার মাঠে। সেই ফুটবলারই এবার আফ্রিকা কাপ অব নেশনসের শিরোপা এনে দিলেন আইভরিকোস্টকে।
ফাইনালে স্বাগতিক আইভরিকোস্ট ২-১ গোলে হারিয়েছে নাইজেরিয়াকে। এটি আফ্রিকান নেশনস কাপে আইভরিকোস্টের তৃতীয় শিরোপা। অলিম্পিক স্টেডিয়ামের ফাইনালে আজ শেষ বাঁশি বাজার পর স্বাগতিক খেলোয়াড় এবং সমর্থকদের উদ্যাপনও হয়েছে বাঁধনহারা।
আইভরিকোস্টের এ শিরোপা জয় অবশ্য রূপকথার গল্পের চেয়ে কম নয়। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে গিনি-বিসাউকে হারালেও পরের দুই ম্যাচে নিজেরা হেরে যায় নাইজেরিয়া এবং ইকুয়াটোরিয়াল গিনির কাছে।
এরপর ব্যর্থতার দায়ে কোচকে ছাঁটাই করলেও তৃতীয় সেরা দলগুলোর একটি হয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করে তারা। আর সেই দলটি পরে সেনেগাল, মালি এবং কঙ্গো প্রজাতন্ত্রকে পেছনে ফলে পেয়ে যায় ফাইনালের টিকিটও। আর ফাইনালে নাইজেরিয়াও পারেনি আইভরিকোস্টকে রুখতে।
ঘরের মাঠে শুরুটা দারুণভাবেই করে আইভরিকোস্ট। নাইজেরিয়াকে চাপে রেখে বলের দখল এবং আক্রমণ দুই জায়গাতেই এগিয়ে ছিল তারা। যদিও শুরুতে সেই আক্রমণগুলোকে গোলে পরিণত করতে পারেনি দলটি। প্রথমার্ধে ৯ শটের তিনটি লক্ষ্যে রেখেও গোল আদায় করতে পারেনি আইভরিকোস্ট। অন্য দিকে শুরু থেকে নিজেদের হারিয়ে খোঁজা নাইজেরিয়া প্রথমার্ধে মাত্র একটি শট লক্ষ্যে রাখতে পারে।
স্রোতের বিপরীতেই মূলত গোলটি পেয়ে যায় নাইজেরিয়া। গোলটি আসে উইলিয়াম ট্রোস্ট-একংয়ের কাছ থেকে। এই গোলে স্বাগতিক গ্যালারিতে নেমে আসে রাজ্যের নীরবতা। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে অবশ্য চেষ্টা চালিয়ে যায় আইভরিকোস্ট। যদিও সমতা ফেরাতে পারেনি। এই মাঠে অবশ্য গ্রুপপর্বে দুদলের মুখোমুখি লড়াইয়েও ১-০ গোলে জিতেছিল নাইজেরিয়া। প্রথমার্ধেও সেই স্মৃতি ফেরানোর সম্ভাবনা নিয়ে মাঠ ছাড়ে আফ্রিকার সুপার ঈগলরা।
বিরতির পরও দাপট ধরে রাখে আইভরিকোস্ট। নাইজেরিয়াকে কোনো সুযোগ না দিয়ে সমতা ফেরানোর জন্য চেষ্টা করে যায় তারা। একাধিকবার কাছাকাছি গিয়ে ব্যর্থ হলেও ৬২ মিনিটে ঠিকই কাঙ্ক্ষিত গোলটি পেয়ে যায় তারা। কর্নার থেকে বল পেয়ে শক্তিশালী হেডে গোল করেন ফ্রাঙ্ক কেসি। এই গোলে অবশ্য নাইজেরিয়ার অবদানও কম নয়। গোলের সময় পুরোপুরি অরক্ষিত অবস্থায় ছিলেন কেসি। আর সমতা ফেরানো গোলের পর দারুণভাবে জেগে ওঠে আইভরিকোস্টের সমর্থকেরা।
এ সময় পুরো স্টেডিয়ামকে মাতিয়ে তোলে তারা। এ সময় নাইজেরিয়ার চুপসে যাওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৮১ মিনিটে ঠিকই এগিয়ে যায় আইভরিকোস্ট। দারুণ এক গোল করেন হলার। এরপর ম্যাচের বাকি সময়ে আর সমতায় ফেরা হয়নি নাইজেরিয়ার। ফলে চতুর্থ শিরোপাটিও অধরা থেকে গেল তাদের।