নেপালের সাংবাদিকেরা গ্যালারিতে উন্মুক্ত প্রেসবক্সে এসেই বাংলাদেশের সাংবাদিকদের শুভকামনা জানাতে লাগলেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ সহজেই জিতবে এ নিয়ে তাঁদের কারও মধ্যেই যেন সংশয় ছিল না। বাংলাদেশ দল শুরুও করেছে নেপালি সাংবাদিকদের সঠিক প্রমাণ করতে।
প্রথম ৩০ মিনিট সাবিনা খাতুনেরা প্রায় একতরফা খেলে গেছেন। কিন্তু ৩২ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে গোল খেয়ে বসেছে বাংলাদেশ। রক্ষণে আসা বল শিউলি আজিম থামালেও ক্লিয়ার করতে পারেননি। বাংলাদেশ গোলকিপার রুপনা চাকমা অনেকটা এগিয়ে আসেন। এই সুযোগে যুক্তরাজ্যে বেড়ে ওঠা পাকিস্তানের ফরোয়ার্ড জাহমিনা সামিন মালিকের প্লেসিংয়ে গোল।
শারীরিকভাবে বাংলাদেশের মেয়েদের চেয়ে পাকিস্তানের মেয়েরা শক্তিশালী। উচ্চতায় তারা এগিয়ে। কিন্তু ফুটবলীয় দক্ষতায় এগিয়ে বাংলাদেশ। আর সেটাই প্রথমার্ধে দেখা গেছে। কিন্তু আসল কাজটা করতে পারেননি বাংলাদেশের কেউ। গোল করার সুযোগ এলেও হাতছাড়া হয়েছে একের পর পর। ৪২ মিনিটি ঋতুপর্ণার শট লাগে ক্রসবারে।
আক্রমণে ঋতুপর্ণার সঙ্গে শামসুন্নাহার জুনিয়রের বোঝাপড়া বেশ ভালোই লাগছিল। সপ্তম মিনিটে ঋতুর বাঁ পায়ের ক্রসে শামসুন্নাহার হেড নিতে পারলে গোল হতে পারত। কিন্তু শামসুন্নাহার মাথায় বল ছোঁয়াতে পারেনি। দশম মিনিটে তহুরার বাড়ানো বলে ঋতু্র ক্রসে হেড করতে ওঠেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। পাকিস্তান গোলকিপার নিশা আশরাফ ও অধিনায়ক মারিয়া খানের সঙ্গে সংঘর্ষে খেলা বন্ধ থাকে কয়েক মিনিট।
মারিয়া ও শামসুন্নাহার পরে মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে নামেন মাঠে। ১৮ মিনিটে স্বপ্না রানীর শট আটকান পাকিস্তান গোলকিপার। পরের মিনিটেই বক্সের সামান্য বাইরে থেকে শামসুন্নাহার জুনিয়রের নেওয়া শট বার উঁচিয়ে যায়। পরপরই ঋতুর শটে পা লাগাতে ব্যর্থ হন তহুরা খাতুন। সাবিনার ফ্রি-কিক পাকিস্তানের তোলা দেয়ালে লেগে কর্নার হয়েছে।
২৬ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে পাকিস্তানের আনমল হীরার দূরপাল্লার শট বাংলাদেশের গোলে প্রায় ঢুকেই যাচ্ছিল। রুপনা চাকমা কর্নারের বিনিময়ে আটকান। সে যাত্রায় আটকালেও ৪২ মিনিটে গোল খেয়ে প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে। গত সাফে যে দলকে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ, তাদের কাছেই এবার গোল খেয়ে হারের শঙ্কায় এখন বাংলাদেশ।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফিরতে না পারলে বা না জিতলে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে ওঠা অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে ভারতের বিপক্ষে ২৩ অক্টোবর জয় ছাড়া ভিন্ন পথ থাকবে না।
এ ম্যাচ দিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অভিষেক হয়েছে আফঈদা খন্দকার, স্বপ্না রানী, কোহাতি কিসকুর। মাঝমাঠে মারিয়া মান্দাকে ছাড়াই খেলতে নামে বাংলাদেশ।
রুপনা চাকমা, আফঈদা খন্দকার, শামসুন্নাহার সিনিয়র, শিউলি আজিম, স্বপ্না রানী, মনিকা চাকমা, ঋতু্পর্না, সাবিনা খাতুন, তহুরা খাতুন, শাসসুন্নাহার জুনিয়র, কোহাতি কিসকু।