ঘরোয়া, ইউরোপীয় এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সফল দুটি ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও লিভারপুল। তবে ক্লাব দুটির নাম একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত দ্বৈরথ বোঝাতে। ইংলিশ ফুটবল তো বটেই, ইউরোপের অন্যতম সেরা দ্বৈরথের একটি লিভারপুল–ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড লড়াই।
যেসব কারণে দুটি ক্লাবের দ্বৈরথ তীব্র আকার পেয়েছে, তার অন্যতম সমর্থকদের ভূমিকা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড–লিভারপুলের যেকোনো ম্যাচ ঘিরে রীতিমতো উত্তেজিত থাকেন দুই দলের সমর্থকেরা। যেখানে নিজেদের দলকে শ্রেষ্ঠ হিসেবে তুলে ধরার সঙ্গে সমানতালে চলে প্রতিপক্ষকে মানসিকভাবে ধরাশায়ী করার চেষ্টা। তাই খোঁচা, ট্রল—এসব লিভারপুল–ইউনাইটেড ম্যাচের নিত্য বিষয়। তবে সমর্থকদের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আচরণ সীমা ছাড়িয়ে যায় অনেক সময়েই। মাত্রাতিরিক্ত সেসব আচরণে নিয়ন্ত্রণ আনতে এবার উদ্যোগ নিচ্ছে দুই ক্লাব যৌথভাবে।
আগামী ৭ এপ্রিল প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ওল্ড ট্রাফোর্ডে মুখোমুখি হবে ইউনাইটেড–লিভারপুল। এই ম্যাচ ঘিরে সমর্থকেরা যেন ট্র্যাজেডি–সম্পর্কিত খোঁচাখুঁচিতে না জড়ান, সে জন্য যৌথভাবে শিক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে দুই ক্লাব।
ট্র্যাজেডি–সম্পর্কিত খোঁচাখুঁচি বলতে হিলসবোরো ট্র্যাজেডি ও মিউনিখ বিমান দুর্ঘটনাই বোঝানো হচ্ছে এখানে। ১৯৫৮ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল দলকে বহনকারী বিমান মিউনিখে বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়, যাতে ২৩ জন প্রাণ হারান। আর ১৯৮৯ সালে লিভারপুল–নটিংহাম ফরেস্টের এফএ কাপ সেমিফাইনালে হিলসবোরো স্টেডিয়ামে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন লিভারপুলের ৯৭ সমর্থক।
প্রাণহানির সঙ্গে যুক্ত ঘটনা দুটিকে লিভারপুল ও ইউনাইটেডের সমর্থকেরা একে অপরের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে থাকেন। মাঠের স্লোগানে, টি–শার্টে ঘটনার স্মরণে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টসহ বিভিন্নভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী দলকে খোঁচা দেওয়া হয়।
ইএসপিএন জানিয়েছে, প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে সমর্থকদের এসব আচরণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করবে লিভারপুল ও ইউনাইটেড। সমর্থকদের আচরণে ট্র্যাজেডির বিষয়গুলো তুলে না ধরতে দুই দলই একসঙ্গে কাজ শুরু করেছে। এ বিষয়ে প্রিমিয়ার লিগের ডিরেক্টর অব কমিউনিটি নিক পারচার্ড এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের আয়োজনে পূর্ণ সমর্থন করছি এবং এই শিক্ষা–উদ্যোগ বাস্তবায়নে দুই ক্লাবের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছি।’