ব্রাইটনের কাছে ৩–০ গোলে হেরে শিরোপা জয়ের আশা প্রায় শেষ আর্সেনালের
ব্রাইটনের কাছে ৩–০ গোলে হেরে শিরোপা জয়ের আশা প্রায় শেষ আর্সেনালের

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ

ম্যানচেস্টার সিটিকে শিরোপার কাছে পৌঁছে দিল আর্সেনাল

খেলা শেষ না হতেই এমিরেটস স্টেডিয়াম থেকে দলে দলে আর্সেনাল সমর্থকেরা বেরিয়ে পড়লেন। এই খেলার বাকি অংশ দেখে আর কী লাভ! যে দল ১৯ বছর পর ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জয়ের স্বপ্ন দেখছিল, কিছুদিন আগ পর্যন্ত পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে ছিল বড় ব্যবধানে, সেই দলটিই লিগের শেষ দিকে এসে মুখ থুবড়ে পড়ল। আজ ব্রাইটনের বিপক্ষে ম্যাচের আগেও সুযোগ ছিল, ম্যাচ জিতে ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে পয়েন্টের পার্থক্যটা ১-এ নামিয়ে নিয়ে আসার। কিন্তু সেটি হয়নি। ব্রাইটনের বিপক্ষে ৩-০ গোলের হারে শিরোপার স্বপ্ন কার্যত শেষ ‘গানার্স’দের।

আর্সেনালের জালে ব্রাইটনের প্রথম গোলটি

দিনের আগের ম্যাচে এভারটনকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ৮৫ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষে উঠে গিয়েছিল সিটি। ৪ পয়েন্ট থেকে সিটির অগ্রগামিতা ১ পয়েন্ট নামিয়ে আনার সুযোগ ছিল আর্সেনালের সামনে। ব্রাইটনকে হারাতে পারলেই সেটি হয়ে যেত। কিন্তু তেমন কিছু আজ ভাগ্যে ছিল না আর্সেনালের। প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকার পর দ্বিতীয়ার্ধে আর্সেনালের সর্বনাশ করেন হুলিও এনসিসো, দেনিজ উনদাভ এবং পারভিজ এস্তুপিনান। এঁদের দেওয়া তিন গোলেই শিরোপার স্বপ্ন ছত্রখান আর্সেনালের।

এস্তুপিনানের পা থেকে এল তৃতীয় গোলটি

পরের ম্যাচে নটিংহাম ফরেস্টকে যদি আর্সেনাল হারালেও ম্যানচেস্টার সিটি নিজেদের পরের ম্যাচে চেলসিকে হারিয়ে দিলেই প্রিমিয়ার লিগে হ্যাটট্রিক শিরোপার গৌরব গায়ে মাখবে। গত ছয় মৌসুমে এটি হবে সিটির পঞ্চম প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা। চেলসির ম্যাচটি সিটির নিজের মাঠে। এই ম্যাচের পর গার্দিওলার দলের বাকি থাকবে আরও দুটি ম্যাচ—ব্রাইটন ও ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে। নটিংহাম ফরেস্ট ম্যাচের পর আর্সেনালের বাকি একটি ম্যাচ সেটি উলভসের বিপক্ষে।

দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাইটনের সঙ্গে পেরেই ওঠেনি আর্সেনাল

সাম্প্রতিক সময়ে আর্সেনাল টানা চার ম্যাচে জয়ের দেখা পায়নি। এর মধ্যে একটি ছিল সিটির বিপক্ষে ৪-১ গোল হার। এই ম্যাচগুলোই আসলে তাদের পিছিয়ে দিয়েছে বাজেভাবে। ম্যানচেস্টার সিটি এই সময়ে এসে আর্সেনালের দুর্বলতার সুযোগ নিয়েছে দারুণভাবেই। আজ এভারটনকে হারানোর মধ্য দিয়ে ম্যানচেস্টার সিটি প্রিমিয়ার লিগের সর্বশেষ ১১ ম্যাচে জয় তুলে নিয়েছে।

গত সোমবার এই ব্রাইটনই ৫-১ গোলে হেরেছিল এভারটনের বিপক্ষে। কিন্তু আজ আর্সেনালের বিপক্ষে দলটি যে এভাবে ঘুরে দাঁড়াবে, সেটি আর কে ভেবেছিল!

উনদাভের দ্বিতীয় গোলের মুহূর্ত

আর্সেনাল অধিনায়ক মার্টিন ওডেগার্ড সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে গোল করেছেন ৫টি। আজ ষষ্ঠ গোলের দ্বারপ্রান্তে প্রায় পৌঁছেই গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর শটটি পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়। ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি ব্রাইটনের মোইজেস কাইসেদোর কড়া ট্যাকলে আহত হয়ে মাঠ ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গেই আর্সেনালের ভাগ্য বিপর্যয় শুরু হয়। আরেক ব্রাজিলিয়ান গ্যাব্রিয়েল জেসুসের টাইট অ্যাঙ্গেল থেকে গোলপোস্ট লক্ষ্য করে নেওয়া শট ঠেকান জ্যাসন স্টিলি। এরপর লিওনার্দো ত্রোসার প্রায় গোলই করে ফেলেছিলেন। কিন্তু আর্সেনাল ফরোয়ার্ডের শটটি ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে।

ব্রাইটনের দারুণ এক দিন আর্সেনালের মাঠে

এর আগে আর্সেনাল নিজেদের সর্বশেষ ছয়টি হোম ম্যাচে ৩ অথবা এর চেয়ে বেশি গোল করেছে। কিন্তু আজ ব্রাইটনের গোলমুখই খুলতে পারেনি তারা। প্রথমার্ধের শেষ দিকে বুকায়ো সাকা ও ওডেগার্ডের দুটি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

ম্যাচের ৫১ মিনিটে ব্রাইটন পেয়ে যায় তাদের প্রথম গোলটি। এস্তুপিনিয়ানের ক্রস প্রথমে ঠেকানো গিয়েছিল। কিন্তু বলটি ফিরতি পেয়ে তিনি তা তুলে দেন এনসিসোর মাথার ওপর। তিনি হেড করে সেটি জালে ঠেলে দেন। গোলটির আগে জাকুব কিউইওর ফাউলের শিকার হয়েছে বলে রেফারির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন আর্সেনাল ফুটবলাররা। কিন্তু তাতে কান দেননি রেফারি। তবে আর্সেনাল ম্যাচে ফেরার সুযোগ পেয়েছিল একটু পরই। বদলি খেলোয়াড় রেইস নেলসনের শট অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে চলে যায়।

লিগ জয় এবারও হচ্ছে না—এটা মোটামুটি নিশ্চিতই

৮৬ মিনিটে ব্রাইটন ২-০ গোলে এগিয়ে যায়। ত্রোসারের ভুলেই গোলটি হয়। তিনি অহেতুক বলের দখল হারালে উনদাভ বল পেয়ে তা গোলরক্ষক রামসডেলের মাথার ওপর দিয়ে গোলে ঠেলে দেন। যোগ করা সময়ে আর্সেনাল সমর্থকদের দুঃখ আরও বাড়িয়ে স্কোরলাইন ৩-০ করে ফেলেন এস্তুপিনিয়ান। যোগ করা সময়ে উনদাভের শট রামসডেল ধরতে ব্যর্থ হলে টোকা মেরে জালে ঠেলে দেন তিনি।