হার এড়াল মোহামেডান
হার এড়াল মোহামেডান

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল

রহমতগঞ্জের বিপক্ষে হারতে হারতে বাঁচল মোহামেডান

আগের ম্যাচেই কিংস অ্যারেনায় বসুন্ধরা কিংসকে হারিয়ে দিয়েছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে প্রিমিয়ার লিগের পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা সাদাকালোদের সামনে শীর্ষে ওঠারই হাতছানি ছিল। মুন্সিগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে আজ মোহামেডানের প্রতিপক্ষ ছিল রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। ম্যাচটা জিতলেই ১৭ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে যেত আলফাজ আহমেদের দল।

রহমতগঞ্জের বিপক্ষে আজ হারতে হারতে কোনোমতে ড্র করে এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে মোহামেডান। ২৭ মিনিটে দাউদা সিসের দুর্দান্ত এক গোলে এগিয়ে যাওয়া রহমতগঞ্জ এই স্কোরলাইন ধরে রেখেছিল ৮৬ মিনিট পর্যন্ত। কিন্তু উজবেকিস্তানের ডিফেন্ডার ইখতিওর তাসপুলাতভের হ্যান্ডবলে পেনাল্টি পেয়ে হারের হাত থেকে বেঁচেছে মোহামেডান। সমতাসূচক গোলটি করেছেন উজবেকিস্তানের মোজাফফরভ।

এই লিগে এখন পর্যন্ত হারেনি মোহামেডান। হারেনি আজকের প্রতিপক্ষ রহমতগঞ্জও। আজকের ম্যাচ নিয়ে লিগে টানা সাত ম্যাচ ড্র করেছে রহমতগঞ্জ। তবে মোহামেডানের বিপক্ষে আক্ষেপ নিয়েই মাঠ ছেড়েছে তারা। সেটিই স্বাভাবিক। ৮৬ মিনিট পর্যন্ত ১–০ গোলে এগিয়ে থাকার পর পেনাল্টি গোলে যদি প্রতিপক্ষ সমতায় ফেরে, তাহলে আক্ষেপ হওয়ারই কথা। যে তাসপুলাতভ পুরো ম্যাচে রহমতগঞ্জের রক্ষণ আগলে রেখেছিলেন প্রাচীরের মতো, একটু ওপরে উঠে দলের আক্রমণগুলোতেও সহায়তা করছিলেন, বক্সের মধ্যে সেই তাসপুলাতভের হ্যান্ডবলটা দুঃখ দেবেই রহমতগঞ্জকে।

অন্যদিকে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে মোহামেডান আজ কিংস–জয়ের প্রেরণাটা ব্যবহার করতে পারেনি। ম্যাচটা মোহামেডান খেলেছে মুখস্থই। প্রতি ম্যাচে যেমন খেলে আরকি! সুলেমান দিয়াবাতেকে মূল গোলস্কোরার ধরে আক্রমণ। মাঝেমধ্যে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড ইমানুয়েল সানডে সুযোগ খুঁজে বেরিয়েছেন, শাহরিয়ার ইমন–মোজাফফরভরা আক্রমণ তৈরি করেছেন, কিন্তু গোল হওয়ার মতো সুযোগ মোহামেডান সেভাবে তৈরি করতে পারেনি।

মোজাফফরভই বাঁচিয়েছেন মোহামেডানকে

রহমতগঞ্জের গোলটা অবশ্য আচমকাই ছিল। পেছন থেকে বাড়ানো একটি থ্রু ধরে গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড দাউদা সিসে একটু এগিয়ে গিয়েই দারুণ শটে মোহামেডান গোলকিপার সুজন হোসেনকে পরাস্ত করেন। এগিয়ে যাওয়ার পর রহমতগঞ্জ নিজেদের রক্ষণকে বেশ জমাট রেখেছিল। মোহামেডানের মরিয়াভাবেরই সুযোগ নিতে চেয়েছিল তারা। সেই সুযোগ এসেছিলও।

ঘানাইয়ান দুই ফরোয়ার্ড স্যামুয়েল কোনি আর আরনেস্ট বোয়েটেং দারুণ খেলেছেন। মোহামেডানের রক্ষণকে আগাগোড়াই আতঙ্কে রেখেছিলেন তাঁরা। বোয়েটেং ম্যাচের শেষ দিকেও দূর থেকে দারুণ কিছু শট নিয়েছেন। মোহামেডানের ফরোয়ার্ড লাইনে দিয়াবাতে আজ ছিলেন কিছুটা নিষ্প্রভ।

মোজাফফরভও অন্য দিনের মতো খেলতে পারেননি। শাহরিয়ার ইমন কয়েকবার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সেটি যথেষ্ট ছিল না। রহমতগঞ্জের ডিফেন্ডাররা মোহামেডানের ফরোয়ার্ডদের গায়ে গায়ে লেগে থেকেই রক্ষণ সামলেছেন।

আজ রহমতগঞ্জের বিপক্ষে পয়েন্ট খুইয়ে আবারও পিছিয়ে পড়ার শঙ্কায় মোহামেডান। গত ম্যাচটা জিতে কিংসের সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান কমে এসেছিল ১–এ। কাল কিংস খেলবে পুলিশ এফসির সঙ্গে। সে ম্যাচে জিতলেই কিংস আবারও ব্যবধানটা ৩–এ নিতে পারবে। এখন কিংসের ‘নেতিবাচক’ কিছুরই প্রত্যাশা করবে মোহামেডান; পুলিশ যদি কিংসকে হারিয়ে দেয় কিংবা ড্র করে।

রাজশাহীতে দিনের অপর ম্যাচটি ছিল বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। তাতে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৩–২ গোলে হারিয়েছে ঢাকা আবাহনী। এই জয়ে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে আবাহনীর অবস্থান পয়েন্ট তালিকার ৩–এ। মোহামেডানের চেয়ে ২ পয়েন্ট পিছিয়ে আছে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীরা।