শেষ হয়ে হইল না শেষ—ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর গল্পটা যেন এ রকমই। ছোটগল্পের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যা লিখেছেন, সে রকম!
এই তো গত বৃহস্পতিবারও ইউরোপা লিগে একের পর এক গোল মিস করার পর তাঁকে নিয়ে কত সমালোচনাই না হলো। তারও আগে তাঁকে একের পর এক ম্যাচে বদলি হিসেবে খেলানো এবং ম্যানচেস্টার ডার্বিতে পুরো ম্যাচ বেঞ্চে বসিয়ে রাখা নিয়ে কত লেখালেখি!
রোনালদো আর নেই সে রোনালদো, এমন কথা তো খুব শোনা যায় এখন। রোনালদোর দুঃসময়ে যাঁরা তাঁর পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তাঁরাও তো একই কথা বলেন—সেই বয়স কি আর আছে পর্তুগিজ তারকার! এখন তাঁর ৩৭ বছর বয়স। এই বয়সে গতি কমবে, শরীরে জড়তা আসবে; এটাই তো স্বাভাবিক।
রোনালদোকে নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা, সব একটি দিকই নির্দেশ করছিল—ফুরিয়ে গেছেন রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক তারকা। ফুটবল–বিশ্ব যখন রোনালদোকে নিয়ে এমন আলোচনায় মত্ত, আরেকবার পাদপ্রদীপের আলো নিজের দিকে টেনে নিলেন তিনি!
এভারটনের বিপক্ষে প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে কালও বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছেন রোনালদো। অ্যান্থনি মার্শিয়াল চোটে পড়ায় মাঠে নামার সুযোগটা একটু আগেভাগেই পেয়ে যান।
ইউনাইটেডকে সমতায় ফেরানো ডস সান্তোসের ১৫ মিনিটের গোলটিতে সহায়তা করা মার্শিয়াল চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন ২৯ মিনিটে।
তাঁর জায়গায় মাঠে নেমে ৪৪ মিনিটে দলকে জেতানো গোলটি করেন রোনালদো।
গোলটি পেতে কাসেমিরোর থ্রু বলটি নিয়ন্ত্রণে নিতে রোনালদো যে দৌড় দেন, সেটি দেখে অনেকেরই হয়তো মনে পড়ে যাবে তাঁর ক্যারিয়ারের সোনালি সময়ের কথা।
বলটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে কাছের পোস্ট দিয়ে নিচু শটে বল জালে জড়ান রোনালদো।
এভারটনের মাঠে ২০০৫ সালের পর প্রথম গোল পেলেন ইউনাইটেডের পর্তুগিজ তারকা। যে গোলে একটি মাইলফলকেও পৌঁছে গেলেন। ক্লাব ক্যারিয়ারে এটা তাঁর ৭০০তম গোল। গোলগুলো তিনি করেছেন চারটি ক্লাবের হয়ে। নিজের দেশের ক্লাব স্পোর্তিংয়ের হয়ে করেছেন মাত্র ৫ গোল।
এরপর ইউনাইটেডে প্রথম দফায় ১১৮ গোল আর চলমান দ্বিতীয় দফায় এই নিয়ে ২৬ গোল। ক্লাব ক্যারিয়ারে রোনালদোর সবচেয়ে বেশি গোল রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে, ৪৫০টি। ইউনাইটেডে দ্বিতীয় দফায় খেলতে আসার আগে জুভেন্টাসের জার্সিতে করেছেন ১০১ গোল।
রোনালদোর মতো একটি মাইলফলক ছুঁয়েছে ইউনাইটেডও। প্রথম গোল খেয়ে প্রিমিয়ার লিগে ১০০ ম্যাচ জেতা প্রথম দল তারা।