শীর্ষ কর্মকর্তাদের সুপারিশের পর ইয়ুর্গেন ক্লিন্সমানকে বরখাস্ত করতে চলেছে দক্ষিণ কোরিয়া ফুটবল ফেডারেশন (কেএফএ)। কাতারে সদ্য সমাপ্ত এএফসি এশিয়ান কাপের সেমিফাইনালে জর্ডানের কাছে ২–০ ব্যবধানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়া এবং সেই ম্যাচের আগে দলের তারকা খেলোয়াড়দের মারামারির ঘটনায় ক্লিন্সমানকে ছাঁটাইয়ের সুপারিশ করেছে কমিটি। কেএফএর জাতীয় দল পরিচালনা কমিটি আজ বৈঠক শেষে ‘নেতৃত্বে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা’র কথা জানিয়েছে।
যেহেতু কোচকে ছাঁটাইয়ের এখতিয়ার জাতীয় দল পরিচালনা কমিটির নেই, এ কারণে এই কমিটি বৈঠকের পর ফেডারেশনের নির্বাহী বোর্ডের কাছে ক্লিন্সমানকে ছাঁটাইয়ের সুপারিশ করেছে। এখন ৫৯ বছর বয়সী জার্মান কোচের ভাগ্য সুতায় ঝুলছে। তাঁকে রেখে দেওয়া বা বরখাস্ত করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ফেডারেশনের সভাপতি চুং মং–গিউ।
এ বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্তুগালের পাওলো বেন্তোর জায়গায় দক্ষিণ কোরিয়া জাতীয় দলের দায়িত্ব নেন ক্লিন্সমান। জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী সাবেক ফুটবলারের সঙ্গে ২০২৬ বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি আছে কেএফএর।
কিন্তু তারকাসমৃদ্ধ দল নিয়েও তাঁর অধীনে এএফসি এশিয়ান কাপের সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে পড়ে দক্ষিণ কোরিয়া। ম্যাচে একটি শটও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে জর্ডানের চেয়ে ৬৪ ধাপ এগিয়ে থাকা দলটি। দলের এমন পারফরম্যান্সে সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ক্লিন্সমানকে ছাঁটাইয়ের দাবিতে রাজধানী সিউলে অবস্থিত ফেডারেশনের সদর দপ্তরের বাইরে জড়ো হয়ে অনেকে বিক্ষোভও করেন।
আজ ৩ ঘণ্টার বৈঠক শেষে জাতীয় দল পরিচালনা কমিটির সদস্য হোয়াংবো কোয়ান বলেছেন, ‘নানা কারণে ক্লিন্সমান জাতীয় দলের প্রধান কোচ হিসেবে তাঁর নেতৃত্ব প্রয়োগ করতে পারছেন না। আমরা নেতৃত্বে পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি। এ ব্যাপারে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি।’
সেমিফাইনালে জর্ডানের কাছে হারের আগের রাতে সতীর্থ লি কাং–ইনের সঙ্গে মারামারি করেন দলের অধিনায়ক ও সবচেয়ে বড় তারকা সন হিউন–মিন। এতে সনের ডান হাতের একটি আঙুল ভেঙে যায়।
ক্লিন্সমান এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। আজ যুক্তরাষ্ট্র থেকেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
খেলোয়াড়দের মধ্যকার দ্বন্দ্বের বিষয়টি স্বীকার করে হোয়াংবো কোয়ান আরও বলেছেন, ‘ক্লিন্সমান আমাদের জানিয়েছেন, দলের সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ ছিল। এটাই পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে। তবে ক্লিন্সমান দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও খেলোয়াড়দের মেজাজ উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি নতুন প্রতিভাও খুঁজে বের করতে পারেননি।’